Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
TMC

তৃণমূল নেতার ঝুলন্ত দেহ, অভিযোগ বিজেপির দিকে

এ দিন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা ‘খুনি’দের ধরার দাবিতে মেমারি-তারকেশ্বর রোডের মণিরামবাটিতে পথ অবরোধ করেন। টায়ার-খড়ে আগুন লাগানো হয়।

মেমারি-তারকেশ্বর রাস্তায় বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র।

মেমারি-তারকেশ্বর রাস্তায় বিক্ষোভ তৃণমূল কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র।

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:১০
Share: Save:

তৃণমূল নেতাকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে। পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে অশান্তির জেরে বেরিয়ে যান গৌতম ঘোষ (৪৮)। বুধবার ভোরে পাশের বসন্তবাটি গ্রামে তাঁর দেহ মেলে। পরিবারের যদিও অভিযোগ, ওই দিন বিকেলে বিজেপির কয়েকজনের সঙ্গে বচসা হয়েছিল তাঁর। তারাই ফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁকে খুন করে। গৌতমের ছেলে সুরজ ঘোষ চার জনের নামে থানায় অভিযোগও করেছেন। যদিও ঘটনার সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেছে বিজেপি।

এ দিন স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা ‘খুনি’দের ধরার দাবিতে মেমারি-তারকেশ্বর রোডের মণিরামবাটিতে পথ অবরোধ করেন। টায়ার-খড়ে আগুন লাগানো হয়। পুলিশ গিয়ে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে, অবরোধ ওঠে। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) শেখ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তবে এ ঘটনা খুন কি না, তা নিয়ে পুলিশ মন্তব্য করতে চায়নি। জামালপুর থানার দাবি, দেহ ময়না-তদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পরে, প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

তৃণমূলের দাবি, বিষ্ণুবাটি গ্রামের বাসিন্দা গৌতমবাবু জামালপুরের চকদিঘি পঞ্চায়েতের ১৮৩ নম্বর বুথের সহ-সভাপতি ছিলেন। দুধের ব্যবসাও ছিল তাঁর। ১১ মাস আগেও দুধ বিক্রি করে মোটরবাইকে বাড়ি ফেরার পথে তাঁর উপরে বিজেপির লোকেরা হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। এ বার বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে আলুর জমিতে তাঁকে খুন করে লোকালয়ের মধ্যে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের।

সুরজ অভিযোগ করেছেন, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা নাগাদ বিজেপির কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর বাবার বচসা হয়। ওই যুবকেরা তাঁকে ‘খুনের হুমকি’ দেয়। এ দিন সকালেও তাঁর দাবি, ‘‘বাড়ি থেকে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পনা করেই আমার বাবাকে খুন করা হয়েছে।’’ গৌতমবাবুর স্ত্রী অপর্ণাদেবীরও দাবি, ‘‘বিজেপির লোকেরাই খুন করেছে আমার ধারণা।’’ প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার রাতে পারিবারিক অশান্তি হয়। তার পরে গৌতমবাবু ‘বিষ খেয়ে মরব’ বলে বাড়ি থেকে গভীর রাতে বেরিয়ে যান। আর ফেরেননি। পরিবার যদিও অশান্তির কথা মানতে চায়নি।

তৃণমূল নেতা তথা জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ভূতনাথ মালিকের দাবি, ‘‘আগেও গৌতমের উপরে হামলা চালিয়েছিল বিজেপি। মঙ্গলবারও সজলধারা প্রকল্পে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল দেওয়া নিয়ে বিজেপি হুমকি দেয় ওকে। শেষ পর্যন্ত মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে।’’ জামালপুর ব্লক সভাপতি শ্রীমন্ত রায়ের দাবি, ‘‘গাছে ঝুলিয়ে খুন করার আগে ধস্তাধস্তি হয়েছিল, দেহ দেখা বোঝা যাচ্ছে।’’

যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে জামালপুর বিধানসভার বিজেপির আহ্বায়ক জিতেন ডোকাল বলেন, ‘‘দুঃখজনক ঘটনা। প্রশাসনের কাছে দাবি করেছি, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করা হোক। ফরেন্সিক রিপোর্ট করা হোক। তা হলেই বোঝা যাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা না খুন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তৃণমূল বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE