E-Paper

তৃতীয় বিজেপি, প্রশ্ন নেতৃত্ব নিয়ে

২০১৯-এর লোকসভা ভোটে আসানসোল ও দুর্গাপুর-বর্ধমান, দু’টি লোকসভা আসনেই জেতে বিজেপি। ২০২১-এর বিধানসভায় জেলায় তিনটি বিধানসভায় জেতে তারা।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৩ ০৮:৪৪
bjp

—প্রতীকী ছবি।

ভোটের ফল সামনে আসতেই দেখা যাচ্ছে, পশ্চিম বর্ধমানে তৃণমূলকে বেগ দেওয়া তো দূরঅস্ত্, তৃতীয় হয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির জেলা নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সোমবার বিজেপির জেলার এক মণ্ডল সভাপতির সমাজমাধ্যমের ‘পোস্ট’ এই জল্পনায় ঘৃতাহুতি দিয়েছে।

জেলায় ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে আসানসোল ও দুর্গাপুর-বর্ধমান, দু’টি লোকসভা আসনেই জেতে বিজেপি। ২০২১-এর বিধানসভায় জেলায় তিনটি বিধানসভায় জেতে তারা। তবে, মাঝে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে বিজেপি হারে।

এই নির্বাচনী পরিসংখ্যানকে সামনে রেখে বিজেপি পঞ্চায়েত ভোটে নামে। কিন্তু সব মণ্ডলে কার্যকারিণী সভা করতে পারেনি বিজেপি। তবে, বিজেপি সূত্রে দাবি, বিধানসভা ভোটের পরে ঘরছাড়া হওয়া কর্মীদের একাংশ ফের সক্রিয় হতে শুরু করেন। তবে তার পরেও মনোনয়ন-পর্বেও বামেদের থেকে পিছিয়ে ছিল বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে দলের প্রার্থী ও কর্মীদের পাশে দাঁড়াতে ব্লক ধরে ৪৩ জনের বিশেষ লড়াকু দল গড়ে বিজেপি। কিন্তু ফল বেরোনোর পরে দেখা যায়, পঞ্চায়েতে মাত্র ২৫টি এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে মাত্র তিনটি আসনে জয় পেয়েছে তারা।

গেরুয়া শিবিরের সব থেকে শোচনীয় ফল পাণ্ডবেশ্বর ও সালানপুরে। এই দুই জায়গায় শূন্য পেয়েছে বিজেপি। পাশাপাশি, দুর্গাপুর-ফরিদপুর ও বারাবনিতে পঞ্চায়েত স্তরে একটি করে আসনে জিতেছে বিজেপি। পাণ্ডবেশ্বর ও দুর্গাপুর-ফরিদপুরে দলের ওই বিশেষ দলের নেতৃত্বে ছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তাঁর দায়িত্বে থাকা এলাকায় এই ফল কেন? জিতেন্দ্র বলেন, “ভোট হলে তৃণমূল হারত। প্রথম থেকেই আমাদের নানা ভাবে বাধা দিয়েছে তৃণমূল। ভোটকে প্রহসনে পরিণত করেছেন ওঁরা।” সালানপুর, বারাবনিতে দলের দায়িত্বে ছিলেন খোদ বিজেপির জেলা সভাপতি দিলীপ দে। তাঁর বক্তব্যেও জিতেন্দ্রের কথারই প্রতিধ্বনি। তিনি বলেন, “আমরা সবাই জানি, কী ভাবে ভোট হয়েছে!”

যদিও, একটি সূত্রের দাবি, বিশেষ দল তৈরি হলেও, পুরনো কর্মীদের বড় অংশকে মাঠে নামানো যায়নি সে ভাবে। পাশাপাশি, বুথ অফিস নেই নানা জায়গায়। কোথাও বুথ অফিস থাকলেও, তা আগলানোর লোক নেই। পাশাপাশি, ভোটের দিন প্রতিরোধের ময়দানেও বিজেপিকে কার্যত দেখা যায়নি বলে পর্যবেক্ষণ। যদিও, ওই সূত্রটিরই দাবি, অশান্তির আঁচ এড়িয়ে লোকসভা ভোটের জন্য কর্মীদের আগলে রাখতে বিজেপি এই পন্থা নিয়ে থাকতে পারে।

তবে, নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভের আঁচ পাওয়া যাচ্ছে বিজেপির সংগঠনে। সোমবার বিজেপির কাঁকসা ২ মণ্ডলের সভাপতি ইন্দ্রজি‌ৎ ঢালি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শুধুমাত্র নিজের ধান্দাবাজি করবে আর মানুষের কাছে বলে বেড়াবে আমি প্রতিষ্ঠিত নেতা, আমি জননেতা। ধিক্কার এবং একরাশ ঘৃণা জানাই তার উপর’।ওই পোস্টে বিজেপি সমর্থক বলে পরিচিত অনেককেই নেতৃত্বের প্রতি সরব হতেও দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে পরে ইন্দ্রজিৎ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি।

যদিও, দলের জেলা সভাপতি দিলীপ দে’র বক্তব্য, “বুথ ধরে ধরে পর্যালোচনা করা হবে। কোথায় কী সাংগঠনিক ত্রুটি আছে খুঁজে বের করে পদক্ষেপ হবে।” তবে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কটাক্ষ, “ওঁদের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন, এই সহজ সত্যিটা বিজেপি নেতৃত্ব এ বার বুঝুন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 BJP TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy