প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার এক মাস হতে চলেছে। তার পরেও ভোট-পরবর্তী হিংসার জেরে তাঁদের প্রায় ১,৮২৫ জন কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া দাবি করে পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছেন বিজেপির জেলা নেতারা। সোমবার বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে। মঙ্গলবার ভাতারের নবাবনগরের ২৫ জন বিজেপি কর্মী বাড়ি ফিরেছেন বলেও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
সপ্তাহখানেক আগেও বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল জেলা প্রশাসনের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরা ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন। জমির পাকা ধান কেটে নেওয়া থেকে শুরু করে, নানা কারণে জরিমানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়। বর্ধমান শহরে বিজেপি করার ‘অপরাধে’ দুই কর্মীকে প্রকাশ্যে কান ধরে ‘ওঠবস’ করানোর ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ার কথাও উল্লেখ করা হয়। এর মাঝে ভাতারের নবাবনগরে এক বিজেপি কর্মীর দু’বিঘা জমির ধান কেটে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেয় তৃণমূল। সোমবার ফের পুলিশ-প্রশাসনের কাছে ঘরছাড়াদের তালিকা দিয়ে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করার দাবি জানায় বিজেপি। পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘‘বিজেপি ঘরছাড়াদের তালিকা দিয়েছে। ওই তালিকার অনেকেই বাড়ি ফিরে এসেছেন বলে জানতে পারছি। প্রতিটি থানাকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। তালিকাটা আমরা খতিয়ে দেখছি।’’
বিজেপি সূত্রের দাবি, গলসিতে ১৯৬, বর্ধমান দক্ষিণে ৩৭৫, বর্ধমান উত্তরে ৩০২, জামালপুরে ৫৫, খণ্ডঘোষে ৪০৯, আউশগ্রামে ১৭৪, মেমারিতে ৮৮, রায়নায় ১৬২, ভাতারে ৫৪ জন ঘরছাড়া রয়েছেন। পুলিশের যদিও দাবি, ওই তালিকার অনেকে বাড়ি ফিরে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করেছেন। প্রতিটি নামের পাশে ফোন নম্বর দেওয়ার কথা বলা হলেও দিতে পারেনি বিজেপি। সে কারণে ঠিকানা ধরে প্রতি বাড়িতে গিয়ে ‘ঘরছাড়াদের’ অবস্থা জানতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার।
বিজেপির অভিযোগ, কর্মীদের বাড়ি ফেরানোর নামে পাঁচ থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা নিচ্ছে তৃণমূল। কোথাও ১০০ দিনের জবকার্ড কেড়ে নিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে, কোথাও দোকানে কাজ করতে গেলে আটকে দেওয়া বা দোকান খুলতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার প্রার্থী সন্দীপ নন্দী বলেন, ‘‘এক মাস হতে চলল হিংসার জেরে আমাদের কর্মী-সমর্থকেরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না। পরিবারগুলি অসহায় অবস্থায় রয়েছে। তৃণমূলের উপরতলার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই কর্মীদের উপরে। তাই আমরা বিধানসভা এলাকা ধরে তালিকা দিয়ে বাড়ি ফেরানোর আবেদন জানিয়েছি।’’
তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডুর পাল্টা দাবি, ‘‘কাউকে বাড়িতে থাকতে কেউ বাধা দেয়নি। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের কর্মীরাই বিজেপির লোকেদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করছেন।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘দলের কর্মী-সমর্থকদের পাশে বিজেপি নেতাদেরই দেখা যাচ্ছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy