প্রেম পাসোয়ানের দেহ মেলার পরে ভিড় এলাকাবাসীর। বৃহস্পতিবার সকালে জামুড়িয়ায়। নিজস্ব চিত্র
বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন সন্ধ্যায়। রাতে না ফেরায় খোঁজ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হল যুবকের। এলাকার অন্য একটি খুনের ঘটনার বদলা নিতেই প্রেম পাসোয়ান (২৬) নামে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে বলে পরিবারের দাবি। যদিও রাত পর্যন্ত পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। পুলিশ জানায়, তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জামুড়িয়ার মডার্ন সাতগ্রাম কোলিয়ারি লাগোয়া নিচুধাওড়ার বাসিন্দা প্রেম পেশায় দিনমজুর। পরিবারে চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনিই ছোট। সপ্তাহ তিনেক আগে তাঁর স্ত্রী সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। পরিজনেরা পুলিশকে জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ প্রেম বাড়ি থেকে বেরোন। আর ফেরেননি। এ দিন সকালে বোগড়া-জেকেনগর রাস্তার পাশে রেললাইন পাড়ায় একটি শুয়োরের খোঁয়াড়ের পাশে তাঁর দেহ মেলে।
ওই খোঁয়াড়ের মালিক নরেশ হেলা বলেন, ‘‘সকালে এখানে এসে দেখি, খোঁয়াড়ের পাশেই প্রেমের দেহ পড়ে রয়েছে। প্রতিবেশীদের খবর দিই।’’ প্রেমের দাদা হলচল পাসোয়ান জানান, এলাকার লোকজনের কাছে খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, ভাইয়ের দেহ প়়ড়ে রয়েছে। মুখ রক্তাক্ত। রানিগঞ্জের নিমচা ফাঁড়িতে খবর দিলে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ময়না-তদন্তে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহ তিনেক আগে এলাকার এক নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয়। বাড়ির সামনে গলির মুখ থেকে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতনের পরে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় প্রেমের দাদা শিবকান্ত পাসোয়ান-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। শিবকান্ত এখন আসানসোলে জেল-হাজতে রয়েছে।
প্রেমের পরিবারের দাবি, যে মেয়েটি খুন হয়েছিল, তার এক নিকট আত্মীয়ের বাড়ি ওই এলাকাতেই। সেই বাড়ি থেকে বুধবার সন্ধ্যায় প্রেমের পরিবারের কাছে একটি কড়াই চাওয়া হয়। প্রেম সেটি দিতে গিয়েছিলেন। তার পর থেকে তাঁর আর খোঁজ মেলেনি বলে অভিযোগ। এ দিন দেহ উদ্ধারের পরে কান্নায় ভেঙে পড়েন প্রেমের স্ত্রী সঙ্গীতা। মা আশাদেবী বলেন, ‘‘আমার এক ছেলে জেলে রয়েছে। দোষ প্রমাণ হলে তার সাজা হবে, সে নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু স্রেফ বদলা নিতে আমার ছোট ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। পুলিশ তদন্ত করে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা করুক।’’
নিহত মেয়েটির ওই আত্মীয়ের অবশ্য দাবি, তাঁরা এখনও শোকগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন। পাল্টা খুনের অভিযোগ মিথ্যা। তাঁর কথায়, ‘‘কাউকে খুন করলে তো আর মেয়েটিকে ফেরত পাওয়া যাবে না। পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত করলেই সব পরিষ্কার হবে।’’
পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সায়ক দাস বলেন, ‘‘রাত পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy