আরও একটি নতুন বছর। ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে উদ্যাপন ও শুভেচ্ছা জানানো চললেও এক প্রকার ব্রাত্য থাকল ঐতিহ্যবাহী গ্রিটিংস কার্ড। ডিজিট্যাল যুগে শুভেচ্ছা জানানোর প্রধান মাধ্যম হিসাবে ভরসা মোবাইল ও ইন্টারনেট-ই।
দেড় থেকে দুই দশক আগেও ইংরেজি নববর্ষ এলেই দোকান সাজত গ্রিটিংস কার্ডের পসরায়। শহরের ফুটপাথ থেকে দোকান সব জায়গাতেই সাজানো থাকত বাহারি কার্ডের পসরা। ছোট থেকে বড় তা কিনতে ভিড় জমাত দোকানে।
মিকি মাউস, ডোনাল্ড ডাক, মোগলি, টম অ্যান্ড জেরি বা পরবর্তী সময়ে বেন টেন, মোটু পাতলুর মতো জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্রের রঙিন ছবিতে সাজানো কার্ড ছিল বিশেষ আকর্ষণ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ফিকে হয়ে এসেছে সেই সব রঙিন দিন।
গ্রিটিংস কার্ডের সম্ভার। —নিজস্ব চিত্র।
এক সময় ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই বর্ধমান শহরের আনাচেকানাচে ফুটপাতে বসত গ্রিটিংস কার্ডের দোকান। বিক্রিবাটাও ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন অবশ্য সবই ‘ইতিহাস’। এই প্রসঙ্গে কার্জনগেট সংলগ্ন বিসি রোডের ফুটপাতের ব্যবসায়ী সোমনাথ রায় বলেন, ‘‘এখন আর কার্ড বিক্রি হয় না বললেই চলে। নামমাত্র কয়েকটি কার্ড এ বারেও এনেছিলাম কিন্তু কেনার লোক নেই।” একই অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন বর্ধমান শহরের বীরহাটার একটি খাতা-পেন্সিল দোকানের মালিক তারক চন্দ্র। তাঁর কথায়, ‘‘এখন আর শুভেচ্ছা জানাতে কার্ড লাগে না। মোবাইলেই সব হয়ে যায়। তাই কার্ডের কদর নেই।”
আরও পড়ুন:
এক সময়ে ইংরেজি কার্ডকে পাল্লা দিত বাংলা গ্রিটিংস কার্ড। ভালবাসা থেকে বিশেষ দিনেও ভরসা ছিল কাগজের কার্ড। বর্তমানে ই-কার্ডের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়ছে। স্মার্টফোনে হোয়াটসঅ্যাপ, বিভিন্ন মেসেঞ্জার অ্যাপ-সহ বিভিন্ন ডিজিট্যাল প্ল্যাটফর্মে মুহূর্তের মধ্যেই পৌঁছে যাচ্ছে শুভেচ্ছা বার্তা। শুধু বড়দিন বা নতুন বছর নয় অন্যান্য উৎসবেও ই-কার্ডেই শুভেচ্ছা আদান-প্রদান হচ্ছে। আগামী দিনে আদৌ গ্রিটিংস কার্ডের ব্যবহার থাকবে কি না তা নিয়ে সংশয় থাকছেই।