আগেই শিক্ষক চিকিৎসকদের ‘অনুপস্থিতি’র জন্য ডাহা ফেল করে গিয়েছিল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। ফের পরীক্ষায় বসতে চেয়ে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। তারপরেই সোমবার দুপুরে আচমকা পরিদর্শনে চলে আসেন মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া বা এমসিআইয়ের একটি দল। প্রবীণ চিকিৎসক থেকে কর্মীদের আশঙ্কা, কী জানি এ বার ফল কি হবে!
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে পড়ুয়া সংখ্যা একশো থেকে দেড়শো আসন করার অনুমতি দেয় এমসিআই। এ দিন আচমকা তারই পরিদর্শনে আসেন ছয় সদস্যের ওই দলটি। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুকুমার বসাকের ঘরে ঢুকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তাঁরা। কথার ফাঁকেই দুই সদস্য কিলোমিটার খানেক দূরে হাসপাতালে সটান পৌঁছে যান। প্রথমেই তাঁরা যান শিশু বিভাগে। সেখানে থেকে বহির্বিভাগে। রোগীদের পরিকাঠামো নিয়ে কিছু প্রশ্ন করেন। ঘুরে দেখেন হাসপাতালের রেকর্ড রুমও।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের এক প্রবীণ শিক্ষক বলেন, “গত বার এমসিআই কর্তারা বর্ধমান পরিদর্শনের সময় সশরীরে শিক্ষক-চিকিৎসকদের দেখতে পাননি। ফলে বিভাগ অনুযায়ী চিকিৎসকের সংখ্যা কম বলেছিলেন তাঁরা।’’ সে বার আরও কিছু পরামর্শও দিয়ে গিয়েছিলেন কর্তারা। যেমন, প্রতিটি ওয়ার্ডে হবু ডাক্তাররা যাতে নির্দিষ্ট জায়গায় বসে ‘ক্লাস’ করা, রোগীদের পরীক্ষার জন্য আলাদা ঘর, ইঞ্জেকশন দেওয়ার নির্দিষ্ট ঘর, প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা প্যান্ট্রি ও স্টোর রুম করার জন্য বলা হয়। হাসপাতালের সমস্ত নথি কম্পিউটারে নথিভুক্ত করতেও বলেন পরিদর্শকেরা। সঙ্গে ট্রলির ব্যবহার তুলনামূলক কম বলে রিপোর্টে উল্লেখ করেন।
এ দিন হাসপাতালের তরফ থেকে জানানো হয়, জায়গার অভাবের জন্য সব নির্দেশ মানা যায়নি। তবে হাসপাতালের নথি কম্পিউটারে তোলার উদ্যোগ করা হয়েছে। ট্রলির সংখ্যা অনেক বাড়ানো হয়েছে। রোগীদের সুবিধার্থে বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থা টোটো কেনার জন্য ১ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা দিয়েছে। দুপুরে পরিদর্শকেরা অধ্যক্ষের ঘরে বসে থাকাকালীন শিক্ষক চিকিৎসকেরা দেখা করে যান। তাঁদের একটি ফর্ম পূরণ করতে বলা হয়। এক চিকিৎসক বলেন, “বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিদর্শকরা। আমরা সিনিয়র আবাসিক চিকিৎসক ও আরএমওদের আলাদা করে দেখিয়েছি। কিন্তু পরিদর্শকরা তা মানতে নারাজ।” বিকেলে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জরুরি বৈঠকের পর সন্ধ্যায় ফের হাসপাতাল চত্বরে চক্কর দেন এমসিআই কর্তারা।
ফলে এ বার রিপোর্ট কী আসবে, তা নিয়ে চিন্তা রয়েই গিয়েছে হাসপাতালে। যার উপর ১৫০ আসনের অনুমোদন নির্ভর করছে। কলেজের অধ্যক্ষ সুকুমার বসাক কিংবা হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁ অবশ্য কিছু বলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy