স্থান, আসানসোল কোর্ট বাসস্ট্যান্ড। দীর্ঘক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে কয়েক জন যাত্রী। অবশেষে একটি অটোতে কোনও রকমে জায়গা মিলল এক নিত্যযাত্রীর। হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে তাঁর আক্ষেপ, ‘আজ অফিস পৌঁছতে দেরি হয়ে যাবে!’ অটো-মিনিবাস বিবাদের জেরে অনির্দিষ্টকাল বাস ধর্মঘটের প্রথম দিন, বৃহস্পতিবার এমন দুর্ভোগের ছবিটা নজরে পড়েছে আসানসোল মহকুমা জুড়েই। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
ধর্মঘটের কথা সাধারণ মানুষের কাছে তেমন ভাবে প্রচারিত না হওয়ায় এ দিন সকাল থেকেই শুরু হয় দুর্ভোগ। আসানসোল আদালতের সরকারি আইনজীবী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় যেমন বলেন, ‘‘বাস পাইনি। অটোয় চেপে কোনওরকমে আদালতে এসেছি।’’ কলেজ শিক্ষিকা সুতপা প্রতিহারের ক্ষোভ, ‘‘তিন বার অটো পাল্টে কর্মস্থলে যেতে হয়েছে।’’ সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো কেউ কেউ আবার বাড়ি ফিরে মোটরবাইক নিয়ে অফিসে গিয়েছেন।
গত বুধবার যাত্রী তোলাকে কেন্দ্র করে অটো ও মিনিবাসের চালকদের মধ্যে বিবাধ বাধে। সেই ঘটনায় বুধবার দুপুরে কিছুক্ষণের জন্য ধর্মঘট করেন মিনিবাসের কর্মীরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পরিবহণ কর্মীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন জানিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘটের ডাক দেয় বাস ও মিনিবাস মালিকদের সংগঠন।
শহরের ভিতরে তো বটেই, এ দিন দূরপাল্লার বাসগুলিও চলেনি। বরাকর, আসানসোল, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, চিত্তরঞ্জনের স্ট্যান্ডগুলিতে যাত্রীদের ভিড় থাকলেও দেখা মেলেনি বাসের। যাত্রীদের একাংশ জানান, এই পরিস্থিতিতে দিনভর শহর দাপিয়েছে কয়েক হাজার অটো। অনেক অটো চালক সুযোগ বুঝে ভাড়াও বাড়িয়ে দিয়েছেন এক ধাক্কায় বেশ কিছুটা।
প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যার সমাধানে বাসমালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আসানসোলের মহকুমাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বাস চালানোর অনুরোধ করেছি।’’ মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিও পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে আলোচনা করে আশ্বাস দিয়েছেন, ‘‘আগামী দশ দিনের মধ্যে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।’’
যদিও মিনিবাস সংগঠনের সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, ‘‘পরিবহণ কর্মীরা ভয়ে রয়েছেন। প্রশাসন পদক্ষেপ শুরু না করলে তাঁরা বাস নামাবেন না রাস্তায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy