Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Less Bus Services

বাসে-ট্রেনে যাত্রী কম, সন্ধ্যা নামলেই রাস্তা ফাঁকা

ঠান্ডায় কষ্টে রয়েছেন প্রবীণদের অনেকেই। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ঠান্ডায় অধিকাংশ প্রবীণের নড়াচড়া কমে যায়। শরীরে ব্যথা বাড়ে। এই সময়ে মূলত নানা আর্থ্রাইটিসের ব্যথা বেশ কিছুটা বাড়ে।

জাঁকিয়ে পড়ছে শীত। দুর্গাপুরে স্টেশন চত্বরে।

জাঁকিয়ে পড়ছে শীত। দুর্গাপুরে স্টেশন চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:১৫
Share: Save:

ঠান্ডার প্রকোপে কাবু শিল্পাঞ্চল। মাঝ ডিসেম্বরে গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বার একটু বেশি ঠান্ডা পড়েছে, দাবি বাসিন্দাদের অনেকের। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কয়েক দিন ধরেই ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। সকালের দিকে পরিবেশ কুয়াশাচ্ছন্ন থাকায় রোদের তেজ প্রকট হচ্ছে না। সঙ্গে উত্তুরে হাওয়া। ফলে, দুপুর পর্যন্ত শীতবস্ত্র গায়ে রাখতে হচ্ছে আট থেকে আশি, প্রায় সবাইকেই।

প্রবল ঠান্ডায় সকালের দিকে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বেরোচ্ছেন না। আবার, সন্ধ্যার সময়েও একই
ছবি। তাই সন্ধ্যা নামতেই কার্যত রাস্তাঘাট শুনশান হয়ে যাচ্ছে। রাস্তাঘাটে আগুন পোহাতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। তবে রেহাই নেই ট্র্যাফিক পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ার, সংবাদপত্রের হকার, দুধ বিক্রেতা, পরিচারিকা, দিনমজুর-সহ দৈনন্দিন কাজে যুক্তদের। তবে বাসে-ট্রেনে যাত্রীর সংখ্যা কমেছে বলে দাবি। দুর্গাপুর থেকে বহরমপুরগামী বাসের কর্মী বিভাস সাহার কথায়, ‘‘সকালে বাসের বহু আসন ফাঁকা যাচ্ছে। গত কয়েক দিনে ঠান্ডার জন্য দরকার না পড়লে বিশেষ কেউ বেরোচ্ছেন না।’’

ঠান্ডায় কষ্টে রয়েছেন প্রবীণদের অনেকেই। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ঠান্ডায় অধিকাংশ প্রবীণের নড়াচড়া কমে যায়। শরীরে ব্যথা বাড়ে। এই সময়ে মূলত নানা আর্থ্রাইটিসের ব্যথা বেশ কিছুটা বাড়ে। আবার, খুব শীতে শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়, যাকে ‘হাইপোথার্মিয়া’ বলে। দ্রুত শরীর গরম করার ব্যবস্থা না নিলে বিপদ বাড়তে পারে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ধীমান মণ্ডল জানান, বাড়ির ভিতরে মোজা পরে থাকতে হবে। নিয়ম করে, দরকার হলে সামান্য উষ্ণ জলে স্নান করতে হবে। পর্যাপ্ত জলপান করতে হবে। বাইরে বেরোলে সারা শরীর ভাল করে ঢেকে নিতে হবে। চিকিৎসকেরা
আরও জানান, প্রবল ঠান্ডা থেকে বাঁচতে ঘরের ভিতরে কেউ কয়লার আঁচের উনুন জ্বেলে ঘুমিয়ে পড়েন। আবার, কেউ ‘রুম হিটার’ বা
‘ব্লোয়ার’ ব্যবহার করেন। এর ফলে ঘরের ভিতরে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যায় এবং অক্সিজেনের হার কমে। তাতে অনেক সময়ে
মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

তবে ঠান্ডা পড়ায় কিছুটা হলেও খুশি শীতবস্ত্র বিক্রেতারা। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বার বিক্রির হার কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সিটি সেন্টারে পুরসভার শপিংমল লাগোয়া জায়গায় অস্থায়ী বাজার খুলে শীতবস্ত্র বিক্রি হচ্ছে মাসখানেক আগে থেকে। বিক্রেতারা জানান, গত এক সপ্তাহে বিক্রি বেড়েছে প্রায় চার গুণ। বিশেষ করে সোয়েটার ও উলের দস্তানা বিক্রি বেড়েছে। একই কথা জানান বেনাচিতির একটি দোকানে কর্মী কল্যাণ রায়। তিনি বলেন, ‘‘গত বছর বাজার খুব খারাপ ছিল। এ বার তুলনায় বেশ ভাল। শীত যদি আরও কয়েক দিন টানা থাকে, তাহলে অনেকটাই পুষিয়ে যাবে।’’ কাশ্মীরের বাসিন্দা আহমেদ খান প্রতি বছর এই সময়ে দুর্গাপুরে এসে বাড়ি বাড়ি ঘুরে শীতবস্ত্র বিক্রি করেন।
তিনি বলেন, ‘‘এ বার শালের ভাল বিক্রি রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE