Advertisement
E-Paper

কোনও বাসস্টপ দখল, কোথাও গায়েব চেয়ার

কিন্তু বাকি সর্বত্র কোথাও চেয়ার খুলে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা, কোথাও আবার পসরা সাজিয়ে বসে পড়েছে ফেরিওয়ালা।

সুপ্রকাশ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৫
বর্ধমানের কলেজ মোড়ে দখল বাসস্টপ। ছবি: উদিত সিংহ

বর্ধমানের কলেজ মোড়ে দখল বাসস্টপ। ছবি: উদিত সিংহ

নতুন পুরবোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে বর্ধমান শহরের গুরুত্বপূর্ণ নানা মোড়ে তৈরি করা হয়েছিল সুদৃশ্য যাত্রী প্রতীক্ষালয়। শহরের নবাবহাট থেকে শুরু করে উল্লাস, বীরহাটা কলেজ মোড় হয়ে তেলিপুকুর পর্যন্ত প্রায় ১২টি জায়গায় গড়া হয় প্রতীক্ষালয়গুলি। রাস্তা সম্প্রসারণ, উড়ালপুলের কাজের জন্য পুলিশ লাইন, নীলপুর মোড়ের মতো কয়েক জায়গায় ভাঙা পড়েছে বাসস্টপ। কিন্তু বাকিগুলির যা হাল, প্রতীক্ষালয় বলে বোঝা দায়।

নবাবহাট থেকে তেলিপুকুর পর্যন্ত বাসস্টপগুলি ঘুরে দেখা যায়, শুধুমাত্র নবাবহাট, টাউন হল, বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের মতো গোটা তিনেক স্টপ যাত্রীদের ব্যবহারের যোগ্য রয়েছে। কিন্তু বাকি সর্বত্র কোথাও চেয়ার খুলে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা, কোথাও আবার পসরা সাজিয়ে বসে পড়েছে ফেরিওয়ালা।

গোলাপবাগ মোড়

বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু পড়ুয়া এই বাসস্টপ হয়ে যাওয়া-আসা করেন। তারামণ্ডল, বিজ্ঞানকেন্দ্র, রমনাবাগান-সহ নানা দর্শনীয় স্থানে আসা মানুষজন থেকে বহু নিত্যযাত্রী, সকলেরই ভরসা গোলপবাগ মোড়ের এই স্ট্যান্ড। ব্যস্ত সময়ে প্রতীক্ষালয়ের সামনে থিকথিকে ভিড়। কিন্তু সবাইকেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ফুটপাতে। কারণ, প্রতীক্ষালয়ে কোনও চেয়ারই নেই। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানালেন, তৈরির কিছু দিনের মধ্যেই গায়েব হয়েছে চেয়ারগুলি। নতুন চেয়ার আর আসেনি।

কলেজ মোড়

ভুট্টা, চা-টোস্ট ও দু’টি ফল বিক্রির ভ্যান— প্রতীক্ষালয় পরিণত হয়েছে ব্যবসার জায়গায়। পসরা সাজিয়ে বসেছেন কয়েকজন। রাজ কলেজ ও হাসপাতালে যাতায়াতের অন্যতম বাসস্টপ হল এই কলেজ মোড়। ফলে, সারা দিনই ভিড় থাকে। বসার চেয়ার নেই, দোকানের মালপত্রের জন্য ছাউনির তলায় দাঁড়ানোর উপায়ও নেই। দাঁইহাট থেকে বছর চারেকের মেয়েকে কোলে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে আসা রমা দাস বলেন, ‘‘বাস আসার আগে যে একটু বসব, উপায় নেই!’’

বাদামতলা

চেয়ার রয়েছে, সাফসুতরোও। কিন্তু, প্রতীক্ষালয়ের সামনেই সার দিয়ে রাখা গাড়ি। পাশে পৌরসভার পার্কিং জোন। কিন্তু সেখানে গাড়ি না রেখে প্রতীক্ষালয়ের সামনের জায়গাই বেছে নিয়েছেন অনেকে। ফলে, যাত্রীরা আর প্রতীক্ষালয় পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন না। রাস্তার উপরে দাঁড়িয়েই অপেক্ষা করতে হয় তাঁদের।

পারবীরহাটা

শহরের ব্যস্ততম মোড় এটি। বর্ধমান শহর থেকে জেলার দক্ষিণ দামোদর এলাকা, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া-সহ নানা জায়গার বাস যায় এই মোড় দিয়ে। এখানে একটি প্রতীক্ষালয় আছে আরজি ভবনের উল্টো দিকে, অন্যটি সার্কাস ময়দানের কাছে। আরজি ভবনের উল্টো দিকের প্রতীক্ষালয়টিতে বসার ব্যবস্থা নেই। বাঁকুড়া থেকে চাকরির পরীক্ষার প্রশিক্ষণ নিতে আসা সুলেখা বাস্কে বলেন, ‘‘প্রতিদিন এ ভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।’’ সার্কাস ময়দানের কাছে অন্য স্টপটি আধুনিক। কিন্তু এখানেও প্রতীক্ষালয়টিতে ভাগ বসিয়েছে দোকানদারেরা। লটারির টিকিট থেকে চা, বিক্রি হচ্ছে নানা জিনিস।

তেলিপুকুর

এখানে দু’টি মুখোমুখি প্রতীক্ষালয়। সদরঘাটের দিকে যাওয়ার স্টপের প্রতীক্ষালয়ের চেয়ার ভাঙা। তেলিপুকুর চারমাথা মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, ‘‘প্রতীক্ষালয় ভাঙা, বাসও ওখানে দাঁড়ায় না। তাই রাস্তাতেই দাঁড়াতে হয়। আমাদের পক্ষে খুব অসুবিধার। অন্য দিকেরটি নতুন তৈরি হয়েছে। তার অবস্থা এখনও ভাল। পরে কী হবে, সেটাই দেখার!’’

বাসস্টপগুলির এমন পরিস্থিতি প্রসঙ্গে পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। জিটি রোড সম্প্রসারণ হলে পূর্ত দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতীক্ষালয়গুলি আরও আধুনিক করে গড়ে তোলা হবে বলে তাঁর আশ্বাস।

Bus Stand Bus Stand
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy