প্রতীকী ছবি
করোনার প্রকোপ এবং ‘লকডাউন’— এই জোড়া ফলায় রোগী তো বটেই, বাড়ির লোকজনও আতান্তরে পড়েছেন। বিশেষ করে ক্যানসার আক্রান্ত রোগীরা। কারণ, এই সব রোগীদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ‘কেমোথেরাপি’-সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে হয়।
কী বলছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা?
রানিগঞ্জের বল্লভপুরের নূপুর গ্রামের বাসিন্দা বছর সাতান্নর ছায়া মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে স্তনের ক্যানসারে আক্রান্ত। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি মুম্বইয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়েছে তাঁর। তার পরে সেখান থেকে তাঁকে ‘কেমোথেরাপি’র জন্য কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু সেই হাসপাতালে করোনা-আক্রান্তের হদিস মেলায় চিকিৎসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর জেরে দুর্গাপুর বেসরকারি হাসপাতালে চার বার ‘কেমোথেরাপি’ করাতে হয়েছে ছায়াদেবীকে।
ছায়াদেবীর ছেলে মলয় মণ্ডল জানান, পরবর্তী চিকিৎসার জন্য মুম্বইয়ের ওই হাসপাতালে ১১ মে তাঁদের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফোন বা ই-মেল মারফত যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সেখান থেকে জবাব পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ মলয়বাবুর। তিনি বলেন, ‘‘প্রিভেনটিভ কেমো ১২ বার করার পরে ‘রেডিয়েশন’ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন মুম্বইয়ের ওই হাসপাতালের ডাক্তার। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় কী করব বুঝতে পারছি না।’’
একই সমস্যায় পড়েছেন সিহারসোলের বছর চৌত্রিশের সঞ্চিতা দাস। তিনি ‘রেকটাম’ ক্যানসারে আক্রান্ত। পরিবার সূত্রে জানা গিয়ছে, তিনিও দু’বছর ধরে মুম্বইয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছেন। ‘লকডাউন’-এর জেরে তিনি সেখানে যেতে পারছেন না। সঞ্চিতাদেবী জানান, এই পরিস্থিতিতে তিনি বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা পাননি বলে অভিযোগ। এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সমরেন্দ্রকুমার বসু বলেন, ‘‘ক্যানসার রোগীদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এখন বেশির ভাগ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা করোনা নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের পরামর্শ, স্থানীয় চিকিৎসকদের দেখিয়ে এই কঠিন সময় পার করা।’’
রানিগঞ্জের সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত জানান, রানিগঞ্জ বিধানসভা এলাকার তিন জন ক্যানসার আক্রাম্ত ভিন্ রাজ্যে চিকিৎসা করিয়েছেন। তাঁরা ‘লকডাউন’-এর জেরে বিপাকে পড়েছেন। তাই এ রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে যাতে তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়, সেই আবেদন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকের কাছে জানিয়েছেন। জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy