Advertisement
E-Paper

নোটে দাঁড়ি পড়তে থমকাল শহরও

এ তো ধর্মঘটের ছায়া! বিসি রোডের সুনশান চেহারা দেখে ওই কথা বলেই ফেললেন বর্ধমান শহরের বাসিন্দা, কলকাতার একটি কলেজের শিক্ষক সুনির্মল লাহিড়ী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৩৭

এ তো ধর্মঘটের ছায়া!

বিসি রোডের সুনশান চেহারা দেখে ওই কথা বলেই ফেললেন বর্ধমান শহরের বাসিন্দা, কলকাতার একটি কলেজের শিক্ষক সুনির্মল লাহিড়ী। বুধবার দুপুরে কার্জন গেটের নীচে দাঁড়িয়ে বললেন, “বিসি রোড মানেই যানজট, রাস্তার উপর মোটর বাইক-রিক্সা দাঁড়ানো, হকারদের দাপাদাপি। আজ সে সব কোথায়?”

এক চুম্বকে বর্ধমান শহরের এটাই ছিল বুধবারের চেহারা। মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রী ৫০০ ও ১০০০ টাকা অচল ঘোষণা করেন। তারপর থেকে বিভিন্ন রাস্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারে গভীর রাত পর্যন্ত ভিড় ছিল। বেশ কিছু শপিং মল রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা রেখেছিল। গভীর রাতের রাস্তাতেও লোকজন ছিল। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে সবাই কী উধাও হয়ে গেল?

বিসি রোডের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, “আমাদের এখানে শহরের বাইরেও রায়না, খন্ডঘোষ, গলসি, জামালপুর ও হুগলির একটা অংশের ব্যবসায়ীরা ভিড় জমায়। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ঘোষণার পর সবাই জানে ৫০০ বা ১০০০ টাকা কেউ নেবে না। আবার ১০০ টাকার বান্ডিল নিয়ে আসাও সমস্যা। সে কারণে খুচরো ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ ক্রেতারাও বাজারমুখো হয়নি।” পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ দামোদরের বাসগুলিতে অন্য দিনের তুলনায় অন্তত ৬০ শতাংশ লোক কম শহরে ঢুকেছে। যাঁরা এ দিন বর্ধমানে এসেছেন, তাঁদের একটা বড় অংশ চলে গিয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বর্ধমান জেলা ব্যবসায়ী সুরক্ষা সমিতির সম্পাদক চন্দ্রবিজয় যাদব বলেন, “বাজারে একটা বড় রকমের প্রভাব পড়েছে। মহাজনদের কাছ থেকে টাকা পাবে না বলে, চাষিরা পর্যন্ত বাজারে আসেনি। অন্য দিনের তুলনায় অন্তত ৬৫ শতাংশ লেনদেন কম হয়েছে।” জেলার ‘লিড ব্যাঙ্ক’-র এক কর্তা জানান, গ্রাহকদের সমস্যা মেটারনোর জন্য বৃহস্পতিবার প্রতিটি ব্যাঙ্কেই কাউন্টারের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ দিন বিসি রোডে গিয়ে দেখা যায়, হোঁচট খেয়ে এ পথে হাঁটাটাই স্বাভাবিক, সেখানে মসৃণভাবে যাওয়া গিয়েছে বুধবার। অন্য দিনের তুলনায় ফুটপাথে হকারদের ভিড়ও কম ছিল। রাস্তার উপর মোটরবাইকও ছিল হাতে গোনা। তৃণমূল প্রভাবিত হকার সংগঠনের নেতা প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “বীরভূম, হুগলি, নদিয়া থেকে প্রতিদিন কয়েক’শ হকার বিসি রোডে আসেন। সেখানে বুধবার তাঁদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। তেমনি বাজারে লোকজনও নেই। আরও কয়েকদিন না গেলে বাজার উঠবে না বলেই মনে হচ্ছে।” বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে যানজট প্রতিদিনের সমস্যা। সেখানেও এ দিন রাস্তা কার্যত ফাঁকা। বর্ধমান শহরের সীতাভোগ-মিহিদানার প্রখ্যাত দোকানে প্রতিদিন কয়েক হাজার টাকার বিক্রি হয়। সেই দোকানের কর্মচারীরা এ দিন বিকেলে বলছিলেন, “বিক্রি হয়নি বললেই চলে। দেখতেই তো পাচ্ছেন, মাছি তাড়ানোর মত অবস্থা আমাদের।”

আক্ষরিক অর্থে, অচল টাকার সঙ্গে শহরের ব্যবসাও দিনভর ‘অচল’ হয়ে রইল।

Money
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy