Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Saigal Hossain

CBI: আবার জেল হেফাজতে অনুব্রতের দেহরক্ষী, সায়গলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই কি কেষ্টকে জেরা

সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, সায়গলকে জেরা করে বহু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে অনুব্রতকে জেরা করা হবে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি।

ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২২ ১৭:১৭
Share: Save:

গরুপাচার-কাণ্ডে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে আবারও ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতের। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৮ অগস্ট। সায়গলকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার অনুব্রতকেও জেরা করা হবে বলে জানা যাচ্ছে।

শুক্রবারের শুনানিতে সায়গলকে জেল হেফাজতে পাঠানোর আবেদন করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশকুমার। পাল্টা সায়গলের জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা।

সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি, সায়গলকে জেরা করে বহু তথ্য ও সম্পত্তির হদিস পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাই আরও জেরা প্রয়োজন। রাকেশ বলেন, ‘‘গত ১৪ দিনে যে সব জায়গায় সিবিআই হানা দিয়েছে সেখানে বহু তথ্য মিলেছে। পাশাপাশি আরও স্পষ্ট হয়েছে সায়গলের বাংলাদেশ-যোগ।

সম্প্রতি বীরভূমে সিবিআই হানা দিয়েছিল টুলু মণ্ডল, কেরিম খানের বাড়ি-সহ মোট ১২টি জায়গায়। সেখান থেকেও বহু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সিবিআইয়ের আইনজীবীর দাবি, গরুপাচার-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ সায়গল, কেরিম, টুলুদের। শেষ জনের মহম্মদবাজারে একটি বিরাট পেট্রল পাম্পেরও হদিস পেয়েছে সিবিআই।

সায়গলদের সঙ্গে বাংলাদেশের কী ভাবে যোগ রয়েছে, তা-ও আদালতে জানান সিবিআইয়ের আইনজীবী। তাঁর দাবি, সাধারণত বালি, পাথর, গরু, পেঁয়াজ ও চাল ও পারে পাঠানো হত বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ওই পণ্য কিনে যে দাম দিতেন, তা সাদা টাকা হিসেবে গণ্য হত। এ ভাবে গরুপাচার-কাণ্ডের সমস্ত কালো টাকা সাদা করা হত বলে আদালতে দাবি করেছেন রাকেশ।

সোমবার এই মামলায় প্রাথমিক চার্জশিট জমা পড়তে পারে। সেখানে এই সংক্রান্ত আরও অনেক তথ্য থাকবে বলে সিবিআইয়ের দাবি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, সায়গলের নাম ব্যবহার করে বীরভূম জেলা পরিষদে বহু লোকের কাজ হয়েছে। অনেকেই এই সূত্র ব্যবহার করে জেলা পরিষদে ঠিকাদারির বরাতও আদায় করেছেন।

আগামী ৮ অগস্ট, সোমবার অনুব্রত মণ্ডলকে সিবিআই তলব করেছে। সে দিনই অনুব্রতের মেডিকেল বোর্ড বসার কথা। সায়গলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অনুব্রতকে জেরা করা হবে বলে জানা গিয়েছে সিবিআই সূত্রে।

অন্য দিকে, সোমবারই বসবে অনুব্রতের স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য মেডিক্যাল বোর্ডও। সিবিআই সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ৫৯টি নথি মিলেছে যা অনুব্রতের বলে দাবি সিবিআই সূত্রের। বিরাট সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গোটা ব্যবসা পরিচালিত হত বলে মনে করছে সিবিআই।

তবে সায়গলের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে যে দাবিই করুন না কেন, তার কোনও তথ্যপ্রমাণ তিনি দিতে পারেননি। অনির্বাণের কথায়, ‘‘ওঁরা বলার চেষ্টা করেছিলেন, অনেক তথ্য উদ্ধার হয়েছে গত কয়েক দিনে। কিন্তু আদালতে কোনও সিজার লিস্ট জমা দেননি। ফলে, এই সমস্ত দাবির কোনও ভিত্তি নেই।’’ সায়গলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতেই অনুব্রতকে সোমবার ডাকা হয়েছে— এমনটাও মানতে নারাজ অনির্বাণ। তিনি বলেন, ‘‘দুটো ঘটনার মধ্যে কোনও মিল নেই। দুটো আলাদা আলাদা বিষয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE