সমবায় সমিতির মাধ্যমে চালকলে ধান দিয়েছিলেন আউশগ্রামের ভেদিয়ার কাছে বাগবাটি গ্রামের জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, পাওনার চেয়ে ২১৭০ টাকা কম পেয়েছিলেন তিনি। সমবায় সমিতিকেও সে কথা জানান তিনি। সোমবার ভেদিয়ার সমবায় সমিতির কর্তা জানান, জ্যোতির্ময়বাবুর পাওনা টাকা ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও জ্যোতির্ময়বাবুর দাবি, এলাকার আরও অনেক চাষিই ধান বিক্রি করতে গিয়ে ‘প্রতারিত’ হয়েছেন।
ছিয়াত্তর বছরের জ্যোতির্ময়বাবু ভেদিয়া সমবায় সমিতির এক জন সদস্য। সেই সূত্রে সমবায় সমিতি তাঁকে স্থানীয় একটি চালকলে ধান দেওয়ার কথা বলে। ৩ জানুয়ারি সমবায় সমিতি থেকে টোকেন নিয়ে ওই চালকলে ধান দেন তিনি। তাঁর দাবি, “১২৯৯ কিলোগ্রাম ধান বিক্রি করি। যন্ত্রের সাহায্যে ধান কাটার পরে টানা তিন দিন রোদে শুকনো হয়। যে সব কারণে চালকল ধান বাদ দেয়, আমার ক্ষেত্রে তা হয়নি। কিন্তু প্রাপ্য ২২ হাজার ৭৩২ টাকা জায়গায় পেয়েছি ২০ হাজার ৫৬২ টাকা। অর্থাৎ ২১ বস্তা ধান বিক্রি করে ২১৭০ টাকা কম।’’
যদিও সমবায়ের দাবি, আনুমানিক ৫৫০ জন সদস্য প্রতি কুইন্টাল ধান সহায়ক মূল্য ১৭৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। জ্যোতির্ময়বাবু ছাড়া আর কারও সমস্যা হয়নি। সমবায় সমিতির সম্পাদক দেবেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও কারণে জ্যোতির্ময়বাবুর ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছিল। সেটা মিটিয়ে ফেলেছি। পাওনা টাকা অ্যাকাউন্টে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
যদিও জ্যোতির্ময়বাবুর অভিযোগ, ধান দেওয়ার পরেও তাঁর মতো অনেক চাষিই প্রতারিত হয়েছেন। তিনি সরব হলেও বাকিরা ভয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আরও দুই চাষিও পাশের একটি সমবায় সমিতির মাধ্যমে চালকলে ধান দিয়ে কম টাকা পেয়েছেন। গৌতম মণ্ডল ও উত্তম মণ্ডল নামে ওই দুই চাষির অভিযোগ, “সরকারি হিসেবে প্রতি বস্তার (৬০ কেজি) দাম ১০৫০ টাকা। সেখানে আমরা ৯৩০ টাকা করে পেয়েছি।’’
জেলা চালকল মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, “আমরা তো চাষিদের কাছে ধান কিনছি না, তাহলে আমরা দাম মেটাব কি ভাবে? পুরো ব্যাপারটাই দেখেন খাদ্য দফতরের নিযুক্ত পারচেজ অফিসার। কী পদ্ধতিতে চালকলগুলি ধান নিচ্ছে, সেটা চাষিদের বুঝতে হবে। তা না হলে ভ্রান্ত অভিযোগ উঠতেই থাকবে।’’ জেলা খাদ্য নিয়ামক দেবমাল্য বসু বলেন, “ধান দেওয়ার পরে প্রাপ্য টাকা মিলছে না, এমন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy