খুদেদের সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র
বড়দিন মানে ওদের কাছে পিকনিক বা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া নয়। বরং ফি বছর এই দিনটা তারা কাটায় খুদেদের সঙ্গে। ওরা আসানসোলের নানা কলেজের প্রায় জনা পঁচিশ পড়ুয়া। সোমবারও তার অন্যথা হল না। নিজেদের হাতখরচ থেকে বাঁচানো টাকা দিয়ে খুদেদের জন্য খাওয়াদাওয়া, শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ-সহ নানা ব্যবস্থা করে পড়ুয়ারা।
এ বার ওই পড়ুয়ারা বেছে নিয়েছিলেন কুলটির নিয়ামতপুরের একটি সান্ধ্যস্কুল ও নিউরোডের একটি অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের মোট ৬০ জন খুদে পড়ুয়াকে। সোমবার সকালেই স্কুল চত্বরে ভিড় জমায় খুদের দল। শুরু হল, শ্রীজা সামন্ত, কুণাল দাস, দেবদীপ দাস, চিরঞ্জিৎ প্রামাণিক-সহ ওই ২৫ জন কলেজ পড়ুয়াদের সঙ্গে খুদেদের হইহুল্লোড়। দুপুরে পাতে পড়ল খিচুড়ি-মাংস। শেষে খুদেদের হাতে দেওয়া হয় শিক্ষা সরঞ্জাম।
কেন এই স্কুলটিকেই বেছে নেওয়া হল? চিরঞ্জিৎ, কুণালরা জানান, এলাকার কয়েকজন শিক্ষানুরাগী সান্ধ্যস্কুলটি চালান। পড়ুয়ারা মূলত অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছেলেমেয়ে। তাদের কারও পরিচারিকার কাজ করেন, কেউ বা দিনমজুরি। নিউরোডের অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের পড়ুয়াদের বেশির ভাগই এই ধরনের পরিবার থেকে আসা। আর তাই বেছে নেওয়া এই দু’টি প্রতিষ্ঠানকে। কলেজ পড়ুয়ারা বলেন, ‘‘বড়দিনের উৎসবে সবাই মাতোয়ারা। সেই আনন্দ একটু ভাগ করে নিতেই এই পরিকল্পনা।’’ এমন মানসিকতা থেকেই পাঁচ বছর আগে ১২ জন কলেজ প়়ড়ুয়া এমন উদ্যোগ নেন। তার পরে ফি বছর বড়দিনের ‘বড় আনন্দ’ আয়োজনে অন্যথা হয় না বলে জানান কলেজ পড়ুয়ারা।
কিন্তু খরচ? এক খুদের সঙ্গে খেলতে খেলতে শ্রীজা জানান, শুরুতেই আমরা ঠিক করি, ফি মাসে বাড়ির দেওয়া হাত খরচ থেকে ৫০ টাকা করে বাঁচাতে হবে এই দিনটার জন্য।
কলেজ পড়়ুয়াদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে এলাকাবাসীও। স্থানীয় শিক্ষানুরাগী বিজন বিশ্বাস বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা যে সত্যিই সমাজের কথা ভাবছে, এই উদ্যোগগুলোই তা প্রমাণ করে।’’ খুশি খুদের দল এবং তাঁদের অভিভাবকেরাও। তেমনই এক জন সোমনাথ রুইদাস বলেন, ‘‘ছেলে-মেয়ের চোখে খুশির ঝিলিক দেখে খুব ভাল লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy