বেআইনি ভাবে আসানসোলের রবীন্দ্রভবন চত্বরে রান্না চলছে। শুধু তাই নয়। রান্নার কাজে গৃহস্থের গ্যাস ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায়। গৃহস্থের গ্যাস ব্যবহারের অভিযোগ ওঠায় ক্ষুব্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস উত্তোলক সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন’ (আইওসিএল) কর্তৃপক্ষ।
রবীন্দ্রভবন প্রেক্ষাগৃহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও বাণিজ্যিক সংগঠনকেও কর্মসূচি পালনের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়। এই সামাজিক ও বাণিজ্যিক সংগঠনগুলি অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রতিনিধিদের জন্য ভবন চত্বরেই খাওয়ার ব্যবস্থা করে। অভিযোগ, সে জন্য প্রেক্ষাগৃহের পাশে রান্নার ব্যবস্থা করা হয়। একাধিক কয়লা ও গ্যাসের উনুন জ্বালিয়ে রান্না হয়। শহরের বাসিন্দারা জানান, এ সব অনুষ্ঠানে কমবেশি হাজার মানুষের ভিড় হয়। ফলে কোনও ভাবে আগুন লাগলে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। শহরবাসীর দাবি, ভবন চত্বরে রান্নার ব্যবস্থা করার আগে অগ্নি নির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা করা হয় না। আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির, “রবীন্দ্রভবনে এখন সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিবর্তে রোজই লঙ্গরখানা খোলা হচ্ছে। যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।” তাঁর অভিযোগ, এর পরেও পুরকর্তৃপক্ষ বেনিয়মকে প্রশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন।
মেয়র বিধানের দাবি, তাঁরা প্রেক্ষাগৃহ ভাড়া দেন। কিন্তু ভবন চত্বরে রান্না করার অনুমতি দেন না। এই বিষয়ে কখনও কোনও সংগঠনই অনুমতি নেন না। এর পরেও কী ভাবে এই বেনিয়ম চলছে? বিধান বলেন, “বিষয়টি জানতে পেরেছি। এই বেনিয়ম রুখতে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।” বিধান জানান, সারাদিনের অনুষ্ঠান হলে অথিতিদের দুপুর বা রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হতে পারে। কিন্তু ভবন চত্বরে রান্না করার নিয়ম নেই।
সম্প্রতি দেখা গেল, একটি বাণিজ্যিক সংগঠনের উদ্যোগে ভবন চত্বরে ম্যারাপ বেঁধে রান্নার আয়োজন করা হয়েছে। তাদের অনুষ্ঠান উপলক্ষে রান্নার কাজে বাড়ির গ্যাসের সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে দমকলের আসানসোলের আধিকারিক দেবায়ন পোদ্দার জানান, খোলা জায়গা বা প্রেক্ষাগৃহ সংলগ্ন এলাকায় ম্যারাপ বেঁধে রান্না করতে হলে দমকলের অনুমতি নিতেই হবে। তিনি বলেন, “এই বেনিয়ম রুখতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আইওসিএল-এর গ্যাস বিক্রয়ের জেলা আধিকারিক রাজদীপ গুহ বলেন, “আমরাও অভিযোগ পেয়েছি। গৃহস্থ গ্যাসের সিলিন্ডার বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা অবৈধ। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। এ ক্ষেত্রেও তাই হবে।” রাজদীপ জানান, জেলায় আসানসোল এলাকা থেকে এই অভিযোগ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। দফতরের পক্ষ থেকে ‘ফিল্ড অফিসারেরা’ অভিযান চালাচ্ছেন। এই অভিযান জারি রয়েছে।
অভিযোগ স্বীকার করে ওই বাণিজ্যিক সংগঠনের কর্ণধার সুমিত কেশরী জানান, রান্না করার জন্য পুরসভা বা দমকলের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)