E-Paper

দুর্গামন্দিরে শ্রদ্ধা জানিয়ে শেষকৃত্যে আব্দুলের দেহ

রায়নার বামুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের (৭৩) মৃত্যুতে এমনই ছবি দেখল গ্রাম। শনিবার সকালে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় গ্রামের শেখপাড়ার বাসিন্দা আব্দুলের।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:১৩
বামুনিয়া গ্রামে মন্দিরের সামনে থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেহ। নিজস্ব চিত্র

বামুনিয়া গ্রামে মন্দিরের সামনে থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেহ। নিজস্ব চিত্র

শেষকৃত্যে নিয়ে যাওয়ার আগে গ্রামের দুর্গামন্দির চত্বরে তাঁর দেহ নামানো হল। তাঁকে শেষ বারের মতো দেখতে ছুটে এলেন অমরনাথ চক্রবর্তী, শম্পা হালদারেরা। ফুল-মালা দিয়ে তাঁকে সম্মান জানালেন রায়নার বামুনিয়া গ্রামের পূর্বপাড়ার বাসিন্দারা। তার পরে দল বেঁধে কবরস্থানের দিকে পা বাড়ালেন সকলে।

রায়নার বামুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের (৭৩) মৃত্যুতে এমনই ছবি দেখল গ্রাম। শনিবার সকালে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় গ্রামের শেখপাড়ার বাসিন্দা আব্দুলের। খবর পেয়েই পূর্বপাড়ার বাসিন্দারা দুর্গা মন্দিরের সামনে জড়ো হয়ে তাঁর আত্মার শান্তি কামনায় পুজো দেন। গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা জয়দেব মণ্ডলের দাবি, “আমরাএক জন প্রকৃত পরোপকারী মানুষকে হারালাম। ঐক্য বজায় রাখার জন্য তিনি সারা জীবন লড়েছেন। গ্রামের যে কোনও সমস্যায় এগিয়ে আসতেন। সবার বাড়িতেই অবাধ যাতায়ত ছিল।’’

বাসিন্দাদের অনেকে জানান, পূর্বপাড়ার মানুষের কাছে আক্ষরিক অর্থে ‘অভিভাবক’ ছিলেন আব্দুল। কারও মেয়ের বিয়ের আয়োজন করতে হবে, অসুস্থকে হাসপাতাল নিয়ে যেতে হবে— সবেতেই তিনি এগিয়ে এসে ব্যবস্থা করে দিতেন। স্থানীয় বাসিন্দা নিবিড় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “গ্রামে হরিনামের আসর বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। উনি দায়িত্ব নিয়ে তা শুরু করিয়েছিলেন। দুর্গাপুজোতেও আমাদের সঙ্গে থাকতেন। এমন এক জন মানুষকে সম্মান না জানালে, আর কাকে জানাব!” এ বার ১৪ বৈশাখ থেকে গ্রামে হরিনামের আসরের জন্য গ্রামের লোকজনকে নিয়ে হরিনামের দলের বায়না করতে গিয়েছিলেন, জানান গ্রামবাসী।

স্থানীয় যুবক বাদশা মির্জার কথায়, “সবের ঊর্ধ্বে উঠে সকলের অভিভাবক হয়ে ওঠার উদাহরণ শেখ আব্দুল মান্নান। সে জন্য সব বাসিন্দা তাঁর জন্য প্রার্থনা করেছেন। সবাই চোখের জলে তাঁকে বিদায় জানিয়েছেন।’’ গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা ভোলানাথ হালদার বলেন,“মান্নানের মতো মানুষ এই গ্রামে জন্মেছিলেন, এটা আমাদের গর্ব। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে গ্রামের সবাইকে এক সুতোয় বেঁধে রাখতে সচেষ্ট ছিলেন তিনি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Raina Communal harmony Durga Temples

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy