জমির পরিমাণ মেরেকেটে এক কাঠাও নয়। তার উপরেই গজিয়ে উঠেছে আস্ত একটা তিন তলা বাড়ি! কোথাও বা প্রশাসনের তরফে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে কাজ বন্ধের। কিন্তু পুরআইন, এমনকী আদালতের নির্দেশকেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গোটা কাটোয়া জুড়ে মোট ৯৬টি অবৈধ নির্মাণকাজ হচ্ছে বলে মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করলেন কাটোয়া পুরসভারই এক তৃণমূল কাউন্সিলর।
পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ভাস্কর মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘স্টেশনবাজারে আমাদের দলীয় কার্যালয়ের ঠিক উল্টো দিকে অবৈধ ভাবে আধ কাঠা জমির উপরে তিন তলা বাড়ি তৈরি করা হয়েছে।’’ শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাছারি রোডে অলোক সাহা ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের স্টেশনবাজার চত্বরেও এক ব্যক্তি মাত্র আধ কাঠা জমির উপরে এখই ভাবে তিন তলা নির্মাণ তুলছেন বলে অভিযোগ।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তিন জনকেই নির্মাণকাজ বন্ধের জন্য বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে নানা সময়ে। কিন্তু তার পরেও নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়নি বলে কাউন্সিলরের অভিযোগ।
২০১৬ সালে কাটোয়া স্টেশন বাজার চত্বরে একটি অবৈধ নির্মাণের অভিযোগে বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও দায়ের করেন স্থানীয় এক বাসিন্দা।
এমনকী ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ডাকবাংলো রোডের একটি নির্মাণকাজের নকশার অনুমোদন না দেওয়ার জন্য পুরসভাকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ভাস্করবাবুর অভিযোগ, তার পরেও নির্মাণকাজ চলেছে। এ ছাড়াও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচঘড়া মোড়েও বেআইনি নির্মাণ তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। শহরের ২০টি ওয়ার্ড জুড়ে এমনই ৯৬টি অবৈধ নির্মাণ, নির্মাণকারীর নাম ও পুরসভার পাঠানো বিজ্ঞপ্তির নম্বর-সহ মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই কাউন্সিলর। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘পুরসভা দায়সারা ভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়েই দায় সেরেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আইন অনুযায়ী অভিযোগের নিষ্পত্তির জন্য শুনানি গ্রহণ করা হয়নি।’’ তাঁর আরও দাবি, এই সব নির্মাণে শাসক দলেরই একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর মদত রয়েছে। বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়েরও দাবি, ‘‘আগে বেশ কয়েকবার অবৈধ নির্মাণের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি পুরপ্রধানের নজরেও এনেছি। তবু কাজ হয়নি।’’
যদিও পুরপ্রধান অমর রামের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি। পুরসভার কর্তাদের একাংশের দাবি, অভিযোগ পেলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শুনানি হয়। অলোকবাবুরও দাবি, ‘‘যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা। পুরআইন মেনেই কাজ হয়েছে।’’ অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy