কাটোয়ায় বন্ধ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের বচসা। নিজস্ব চিত্র
কোথাও রেল-রাস্তা অবরোধ, জোর করে দোকান খোলানোর চেষ্টার অভিযোগ, কোথাও আবার পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি— বুধবার বিক্ষিপ্ত অশান্তিতেই কাটল বিজেপির ১২ ঘণ্টার বনধ্। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) প্রিয়ব্রত রায় জানান, ৪০ জন বনধ্ সমর্থনকারীকে আটক করা হয়েছিল।
এ দিন সকাল থেকেই শক্তিগড়, বর্ধমান-হাওড়া মেন লাইনের দেবীপুরে অবরোধ করেন বিজেপি কর্মী, সমর্থকেরা। রেল পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের তুলে দেয়। বর্ধমান উত্তর ও দক্ষিণ মহকুমার দু’একটি জায়গাতেও বিক্ষিপ্ত ভাবে অবরোধ হয়। মেমারির সাতগেছিয়ায় বাস আটকাতে গেলে প্রথমে পুলিশ বিজেপি সমর্থকদের সরিয়ে দেয়। পরে লাঠিধারী কয়েকজন বিজেপি সমর্থকদের উপর হামলা চালালে তিন জন জখম হন বলে বিজেপির অভিযোগ। মেমারির পারিজাতনগরে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ হয়। পুলিশ ১০ জনকে আটক করে। বর্ধমান শহরের পারবীরহাটায় বাস আটকাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বিজেপির যুব নেতাদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করে। ভাতারে বর্ধমান-কাটোয়া রোডের উপর অবরোধ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি বাধে বিজেপি কর্মীদের। পুলিশ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।
বর্ধমান শহরের ঘোড়দৌড়চটিতে আবার বিজেপির জেলা পার্টি অফিসের সামনে তৃণমূলের লোকজনকে বসে থাকতে দেখা যায়। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল স্বতঃস্ফূর্ত কর্মসূচি রুখতে ঘেরাও করে রেখেছিল ওই অফিস। যদিও অভিযোগ মানেননি তৃণমূল নেতারা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘বন্ধ ব্যর্থ। মানুষ কর্মনাশা বন্ধ মানতে চাইছেন না।’’
ভোর থেকে কালনার নিভুজি, লিচুতলা, কৃষ্ণদেবপুর এলাকায় মিছিল করে বিজেপি। নিভুজি এলাকা থেকে কিছুটা দূরে গাছের ডাল ফেলে লরি আটকানোর অভিযোগ উঠতেই তৎপর হয় পুলিশ। লাঠি চালানো হয় বলেও বিজেপির অভিযোগ। বাঘনাপাড়া, ভান্ডারটিকুরি-সহ কয়েকটি স্টেশনে অবরোধ হয়। আটকে পড়ে বেশ কিছু ট্রেন। বেলার দিকে অবশ্য ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। মন্তেশ্বর বিধানসভার বিজেপি নেতা বিশ্বজিৎ পোদ্দারের অভিযোগ, সাতগেছিয়ায় মিছিল করার সময় তৃণমূলের লোকেরা হামলা চালায়। কিছু দোকানও জোর করে খোলানো হয়। যদিও তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। নানা জায়গায় ঝামেলা পাকানোর অভিযোগে কালনা মহকুমা থেকে মোট ন’জনকে গ্রেফতারও করা হয়।
সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ কাটোয়া রেলগেটের কাছে অবরোধ করেন বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। আটকে যায় ব্যান্ডেল লোকাল। মিনিট কুড়ি অবরোধের পর সুবোধ স্মৃতি রোড দিয়ে পতাকা নিয়ে বিজেপির মিছিল এগোয়। অভিযোগ, সুবোধ স্মৃতি রোডের একটি দোকান জোর করে বন্ধ করতে যান মিছিলের লোকজনেরা। এরপরেই বিজেপির জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ-সহ কারবালাতলা মোড় থেকে ২০ জন বিজেপি কর্মী সমর্থককে ধরে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ছিলেন গত বিধানসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী অনিল দত্ত।
বিজেপি জেলা সভাপতি কৃষ্ণবাবু দাবি করেন, ‘‘মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বন্ধ সমর্থন করেছেন। শাসকদলকে পুলিশ ও গুন্ডা নিয়ে বাধা দিতে হল। তাতেই প্রমাণ, তৃণমূলের দিন শেষ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy