Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Potato Farming

বৃষ্টিতে থমকে আলু তোলা, চিন্তা মান নিয়েও

চাষিদের দাবি, পুরো আলু মরসুম জুড়ে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হয়েছে। আলু গাছের দু’ধারে আগাছা জন্মেছে। মাঠ ভিজে থাকায় তা কাটা যাচ্ছে না। আবার আলু গাছ বড় হয়ে যাওয়ায় ওষুধও দেওয়া যাবে না।

আলু খেত পরখ করে দেখছেন চাষি। বর্ধমানের কালীনগরে।

আলু খেত পরখ করে দেখছেন চাষি। বর্ধমানের কালীনগরে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৪ ০৯:০৬
Share: Save:

এখনও ২৫ শতাংশের মতো আলু জমি থেকে তোলা বাকি রয়েছে। শেষ মূহুর্তে মেঘ-বৃষ্টির খেলায় চাষিরা জমি থেকে নির্দিষ্ট সময়ে আলু তুলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তাঁদের দাবি, আলু তোলার কাজ পিছিয়ে গেলে ভিজে মাটি, জমা জলে আলু পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আলুর গুণগত মানও খারাপ হবে। তখন আর দাম পাওয়া যাবে না। দু’বার করে চাষ করার খরচও উঠবে না। এ দিকে, বুধবার বৃষ্টির পরেই বর্ধমানের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে আলুর দাম বেড়েছে খানিকটা।

কৃষি দফতরের এক কর্তা বলেন, “মঙ্গলবার সকাল থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত যা বৃষ্টি হয়েছে তাতে আলু চাষে খুব একটা অসুবিধা হবে না। বুধবার বেলার দিকেও অনেক জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। রিপোর্ট পেলে কী হচ্ছে বোঝা যাবে। তবে অন্তত দু’দিন রোদ না উঠলে আলু তোলাটা মুশকিল হয়ে যাবে।”

চাষিদের দাবি, পুরো আলু মরসুম জুড়ে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হয়েছে। আলু গাছের দু’ধারে আগাছা জন্মেছে। মাঠ ভিজে থাকায় তা কাটা যাচ্ছে না। আবার আলু গাছ বড় হয়ে যাওয়ায় ওষুধও দেওয়া যাবে না। কিন্তু আগাছা বড় হয়ে গেলে আলু গাছ নষ্ট করে দেবে। কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, সাধারণত জেলায় ৭২-৭৩ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়।এই মরসুমে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার হেক্টরে। শুরুতেই বৃষ্টির জন্য প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষের ক্ষতি হয়েছে। সেখানে দ্বিতীয় বার আলু চাষ করতে হয়েছে। চাষিদের দাবি, জেলায় গড়ে বিঘা প্রতি ৯০ থেকে ১০০ বস্তা (৫০ কেজি) আলু উৎপাদন হয়। এ বছর বৃষ্টি, ধসা ও আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার জন্য উৎপাদন অন্তত ৩৫ শতাংশ কম হয়েছে। আলুর মানও খুব ভাল নয়।

মেমারি ১ ব্লকের চাষি চাঁদকুমার দে, সাধন দাসেরা বলেন, “বৃষ্টির জন্য আলু তুলতে সপ্তাহখানেক দেরি হবে। এর ফলে আলু নীল হয়ে যাবে। নানা আকারের হয়ে যাবে।” তাঁদের দাবি, এ বছর দু’বার করে আলু চাষ করায় প্রথমেই খরচ বেড়েছে। এরপরে ধসা রোগে ছত্রাকনাশক দিতে গিয়েও অতিরিক্ত খরচ করতে হয়েছে।

মেমারি ২ ব্লকের কুচুট, সাতগেছিয়া, বোহার এলাকায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ জমিতে আলু তোলা হয়নি। পাহাড়হাটি গ্রামের স্বরূপ মণ্ডলের দাবি, “কয়েক দিন আগেই বৃষ্টি হয়েছে। জমি ভিজে। ফের বৃষ্টি হওয়ায় নিচু জমিগুলি কাদা হয়ে গিয়েছে। মজুর লাগিয়ে আলু তোলার পরে যে পরিমাণ ও মানের আলু মিলবে, তা বাজারে বিক্রি হবে না। হলেও মজুরের খরচ উঠবে না।’’ নিচু জমি থেকে আলু তুলতেও অনেক চাষি সম্ভবত যাবেন না, অনুমান তাঁদের।

বর্ধমান ২ ব্লকের শেখ সোহরাব, জামালপুরের সুকুমার মালিকদের দাবি, “আমাদের এলাকায় যা বৃষ্টি হয়েছে তাতে আলু নষ্ট হয়ে যাবে বলে ভাবছি না। তবে ফের বৃষ্টি হলে মুশকিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Potato Farming potato farmers Season change
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE