Advertisement
E-Paper

TMC: ‘উজ্জ্বলের জন্যই হার’, অস্বস্তি বিমানের মন্তব্যে

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোট পর্বের অনেক আগে থেকেই উজ্জ্বলবাবু ও বিমানবাবুর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২১ ০৭:১০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ফের প্রকাশ্যে এল কুলটি তৃণমূলের অন্দরের ‘কোন্দল’। বিধানসভা ভোটে এই কেন্দ্রে হারের জন্য প্রকাশ্যে প্রাক্তন বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে দায়ী করলেন তৃণমূলের কুলটি ব্লক সভাপতি বিমান আচার্য। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে বিমানবাবু বলেন, ‘‘দলের মধ্যে উপদল তৈরি করেছেন উজ্জ্বলবাবু। তিনি গোষ্ঠী কোন্দলকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। যার ফলে, দলের ভাঙন অবশ্যম্ভাবী। উজ্জ্বলবাবুর এই অনৈতিক কার্যকলাপের জন্য কুলটিতে এ বার তৃণমূলের পরাজয় হয়েছে।’’ উজ্জ্বলবাবু এ বিষয়ে বিশদে মন্তব্য করতে চাননি। তবে বারবার অন্দরের ‘কোন্দল’ প্রকাশ্যে আসায় দল যে অস্বস্তিতে পড়েছে, তা তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনের কথায় স্পষ্ট। ‘‘বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যজনক ও অবাঞ্ছিত’’, বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

সপ্তাহখানেক আগেই যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বারবার দলবদল করে ‘ক্ষমতায় টিকে থাকা’, ‘বেআইনি ব্যবসার’ সঙ্গে যুক্ত লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ— উজ্জ্বলবাবুর বিরুদ্ধে এমনই নানা অভিযোগ তুলে একটি পোস্ট করা হয় বলে দাবি। তিনিই এই পোস্ট করেছিলেন বলে বিশ্বজিৎবাবু সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে দাবিও করেছেন। যা নিয়ে দলের অন্দরে বিতর্ক হয়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বিমানবাবু দাবি করেন, তিনি উজ্জ্বলবাবুর চেয়ে অন্তত ১২ বছর আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এলাকায় তৃণমূলের জনপ্রিয় সংগঠক বলেও তিনি পরিচিত। বিমানবাবুর অভিযোগ, তাঁর সংগঠনকে নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছেন উজ্জ্বলবাবু। বিষয়গুলি তিনি উচ্চ নেতৃত্বকেও জানিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এর পরেও যদি নেতৃত্বের হুঁশ না ফেরে, তা হলে পুরসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবি হবে।’’ উজ্জ্বলবাবু শুধু বলেন, ‘‘এ সব নিয়ে কিছু বলার নেই। আমি সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি করতে ব্যস্ত আছি। এটাই আমার মূল লক্ষ্য।’’

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোট পর্বের অনেক আগে থেকেই উজ্জ্বলবাবু ও বিমানবাবুর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। ভোট সংক্রান্ত কোনও কর্মসূচিতে দু’জনকে এক সঙ্গে দেখা যায়নি। এমনকি, প্রচার করেছেন আলাদা ভাবেও। একাধিক বিষয়কে কেন্দ্র করে দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে কখনও প্রকাশ্যে, কখনও আড়ালে মন্তব্য করেছেন। যার প্রভাব ভোটে পড়েছে বলে দাবি দলেরই অনেকের। বিধানসভা ভোটে উজ্জ্বলবাবু বিজেপি প্রার্থী অজয় পোদ্দারের কাছে ৬২৯ ভোটে হেরে যান।

ভি শিবদাসনের আক্ষেপ, ‘‘আসানসোল পুরসভা নির্বাচন খুব বেশি দেরি নেই। এখনও যদি এই অবস্থা চলতে থাকে, ফল একদমই ভাল হবে না।’’ তিনি বলেন, ‘‘দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পরস্পরবিরোধী ক্ষোভ-বিক্ষোভ, অভিযোগ থাকতেই পারে। তা চার দেওয়ালের মধ্যে দলের নির্দিষ্ট বৈঠকে আলোচনা করে মেটানো যেতে পারে। কিন্তু প্রকাশ্যে এক নেতা অপর নেতার বিরুদ্ধে মুখ খুললে, দলীয় শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করা হয়। নিচুতলার কর্মীদের মনোবল ভাঙা হয়। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ নেতৃত্ব পর্যায়ে আলোচনা হবে।’’

বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। বিজেপির জেলা আহ্বায়ক শিবরাম বর্মন বলেন, ‘‘সবে শুরু। দেখবেন, নির্বাচনের মুখে ওঁরা মারামারি করবেন।’’ শিবরামবাবুর দাবি, গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে আসানসোল পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬৬টিতে জিতেছে বিজেপি। পুরসভা ভোটে বাকি আসনগুলিও তাঁরা দখল করবেন।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy