Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরুই হয়নি

শহরের ভিতরে রয়েছে আরও একটি রেলগেট। এই তিন রেলগেট নিয়ে শহরবাসীর কার্যত হাসফাঁস দশা।

বন্ধ রেলগেটে কেটে যায় দীর্ঘ সময়। মেমারিতে। —নিজস্ব চিত্র।

বন্ধ রেলগেটে কেটে যায় দীর্ঘ সময়। মেমারিতে। —নিজস্ব চিত্র।

সৌমেন দত্ত
মেমারি শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০৭
Share: Save:

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে থেকে মেমারি শহরে ঢুকতে দু’টি রেলগেট পেরোতে হয়। শহরের ভিতরে রয়েছে আরও একটি রেলগেট। এই তিন রেলগেট নিয়ে শহরবাসীর কার্যত হাসফাঁস দশা।

‘ফ্রেট করিডরের’ জন্য বর্ধমান-হাওড়া (‌মেন) লাইনে তৃতীয় লাইনের কাজ শুরু হওয়ায় মেমারি শহরে জিটি রোডের উপরে রেললাইনে উড়ালপুল তৈরির সিদ্ধান্ত নেন রেল কর্তৃপক্ষ। রাজ্য সরকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। শহরবাসী ভেবেছিলেন, যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি মিলতে চলেছে মেমারি। প্রায় সাত মাস আগে দরপত্র ডেকে ঠিকাদার নিয়োগ করেছে রাজ্যের পূর্ত দফতর (সড়ক)। কিন্তু কাজের বরাত না পাওয়ায় ঠিকাদার সংস্থা উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু করতে পারেনি।

সম্প্রতি মেমারির বিধায়ক নার্গিস বেগম এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছেন জেলাশাসককে। এর আগে বিধানসভায় মেমারির উড়ালপুল নিয়ে বেশ কয়েকবার সরবও হয়েছিলেন তিনি। বিধায়ক জানান, রেল উড়ালপুলের জন্য টাকার সংস্থান হয়ে গিয়েছে। দরপত্র ডেকে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। গত ১২ জানুয়ারি পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার হরিন্দ্র রাও তাঁকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, রেল ও রাজ্য সরকার যৌথভাবে উড়ালপুলটি তৈরি করছে। সরকারই উড়ালপুলের কাজ করবে। সেতুর সংযোগকারী রাস্তার জন্য প্রয়োজনীয় জমির অসুবিধা নেই বলে পূর্ত দফতর (সড়ক) জানিয়ে দিয়েছে। তার পরেও কোনও অজ্ঞাত কারণে কাজ আটকে রয়েছে।

বিধায়কের বক্তব্য, ‘‘দ্রুত কাজ শুরু করতে না পারলে প্রকল্পের খরচ বেড়ে যাবে। লোকসভা ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেলে প্রকল্প শুরু করতে সমস্যা হবে।’’ জেলাশাসককে জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছেন বলে জানান তিনি। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলব।’’

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়, জিটি রোডের উপরে মেমারি লেভেল ক্রসিংয়ে (পশ্চিম/৩৭ নম্বর) উড়ালপুল তৈরির জন্য গত জুন মাসে দরপত্র ডাকা হয়েছিল। মেমারি ছাড়াও এই লাইনে জামালপুরের মশাগ্রাম ও সিমলাগড়ে উড়ালপুল তৈরির জন্য মোট ১৫৬ কোটি ৮২ লক্ষ ৭০ হাজার ৫৯৮ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দফতরের এক শীর্ষ কর্তার আশ্বাস, “দ্রুত উড়ালপুল তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’ মেমারি থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে রসুলপুরে রেলগেট রয়েছে। তার পরেই রয়েছে জিটি রোডের উপরে মেমারির ওই রেলগেটটি। তার পরে শহরের কৃষ্ণবাজারে রয়েছে আর একটি রেলগেট। সারা দিনে কয়েকশো বার রেলগেটটি বন্ধ হয় বলে এলাকাবাসীর দাবি। ফলে, দিনের বেশিরভাগ সময় শহরের রাস্তা অবরুদ্ধ থাকে। জিটি রোডের উপরে রেলগেটটি এক বার বন্ধ হলে এক-দেড় কিলোমিটার পথ জুড়ে গাড়ির লাইন পড়ে যায়। যানজট পেরোনো প্রায় ৪৫ মিনিটের ধাক্কা, দাবি নিত্যযাত্রীদের।

শহরের ভিতরে উড়ালপুল তৈরির আর্জি দীর্ঘ দিনের। মেমারির এক সিপিএম নেতার দাবি, কৃষ্ণবাজার এলাকায় উড়ালপুল তৈরির জন্য লালুপ্রসাদ যাদব রেলমন্ত্রী থাকাকালীন চিঠি পাঠানো হয়েছিল। রেল ওই জায়গায় উড়ালপুল তৈরিতে আগ্রহী হয়। কিন্তু বাজার সরানোর ক্ষেত্রে আপত্তি উঠতেই রেল পিছু হঠে। এর পরেই পুরভবনের কাছে জিটি রোডের উপরে উড়ালপুল তৈরিতে উদ্যোগী হয় রেল। রাজ্য সরকারও উড়ালপুলের ব্যয়বহনে রাজি হয়।

কিন্তু কেন এখনও কাজ শুরু হল না, প্রশ্ন এলাকাবাসীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Memari Flyover
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE