Advertisement
E-Paper

বাড়িতে ঢুকে কুপিয়ে খুন ঠিকাদারকে

বাড়িতেই ছুরির কোপে খুন হলেন এক ঠিকাদার। বিভিন্ন বেসরকারি কারখানায় শ্রমিক সরবরাহকারী ওই ঠিকাদার রামদেও বেদার (৪৫) ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে মঙ্গলবার রাতে। তিনি দুর্গাপুরের বিধাননগরে ইস্পাতপল্লির একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৩৯
এই বাড়িতেই খুন।

এই বাড়িতেই খুন।

বাড়িতেই ছুরির কোপে খুন হলেন এক ঠিকাদার। বিভিন্ন বেসরকারি কারখানায় শ্রমিক সরবরাহকারী ওই ঠিকাদার রামদেও বেদার (৪৫) ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে মঙ্গলবার রাতে। তিনি দুর্গাপুরের বিধাননগরে ইস্পাতপল্লির একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। বুধবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। খুনের কারণ নিয়েও ধন্দে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরে দুর্গাপুরে ছিলেন আদতে গুজরাতের বাসিন্দা রামদেও। দুর্গাপুরের নানা স্পঞ্জ আয়রন, রোলিং মিলস, ইস্পাত কারখানায় ঠিকা শ্রমিক সরবরাহ করতেন তিনি। ইস্পাতপল্লির ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি। বাড়িটির মালিক ছত্রধর সাহা পুলিশকে জানান, নীচের তলায় তিনি থাকেন। দোতলায় এক দিকের ঘরে তিন জন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া থাকেন। অন্য দিকের ঘরে ভাড়া থাকতেন রামদেও। সঙ্গে থাকতেন গুজরাতেরই বাসিন্দা মদন লাল।

পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ দুষ্কৃতীরা উপরে উঠলে দরজা খুলেছিলেন মদন। সঙ্গে সঙ্গে মাথায় জোরে আঘাত করে তাঁকে অচেতন করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর পরে রামদেওয়ের উপরে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। তাঁর পেটে পরপর ছুরির কোপ মারা হয়। শরীরে অন্তত ছ’জায়গায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে বলে পুলিশ জানায়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। আশপাশের লোকজন ছুটে আসার আগেই চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।

বাড়ির মালিক ছত্রধরবাবু পুলিশকে জানান, তিনি অস্বাভাবিক রকমের চিৎকার শুনে ঘরের বাইরে বেরিয়ে দেখতে পান, তিন জন আবাসনের গেট দিয়ে ছুটে বেরিয়ে যাচ্ছে। এর পরেই তিনি উপরে গিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত রামদেও পড়ে রয়েছেন। পাশে অচেতন হয়ে পড়ে তাঁর সঙ্গী মদন লাল। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি এবং দু’টি ব্যাগ উদ্ধার করেছে। তবে ব্যাগ দু’টিতে সন্দেহজনক কিছু মেলেনি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ছুরিটি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে পুলিশ জানায়।

ঠিক কী কারণে খুন করা হল ঠিকাদারকে, সে নিয়ে ধন্দে পুলিশ। ঘটনার পিছনে ব্যবসায়িক রেষারেষি থাকতে পারে বলেও মনে করছেন তদন্তকারীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান এডিসিপি (পূর্ব) অমিতাভ মাইতি। তিনি বলেন, ‘‘কী কারণে খুনের ঘটনা ঘটেছে তা পরিষ্কার নয়। সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, দুষ্কৃতীরা আগে থেকে সব বিশদে জেনেশুনে এসেছিল। আবাসন চত্বরের প্রধান গেটে নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। কিন্তু ওই দোতলা বাড়িটি যে কমপ্লেক্সে, সেখানে তখন কেউ ছিলেন না। গেটও খোলাও ছিল। রাত সাড়ে ১০টার পরে আবাসনের ভিতরে গাড়ি নিয়ে ঢুকতে গেলে বিশেষ অনুমতি লাগে। তাই দুষ্কৃতীরা এসেছিল হেঁটে। বাড়িতে ভাড়া থাকা ছাত্রদের সঙ্গে দেখা করতে মাঝে-মধ্যে সহপাঠীরা আসেন। অনেক সময়ে তাঁদের অনেকের কাঁধেই ব্যাগ থাকে। দুষ্কৃতীরা কাঁধে সেই রকম ব্যাগ নিয়ে এসেছিল যাতে কেউ সন্দেহ না করে। তাদের বয়সও বছর পঁচিশের আশপাশে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছে পুলিশ।

বুধবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি। রামদেওয়ের সঙ্গী তথা ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী মদন লালকে পুলিশ মঙ্গলবার রাতেই জেরা করে। পুলিশের দাবি, তিনি জানিয়েছেন, দরজায় টোকা দেওয়ার আওয়াজ শুনে তিনি দরজা খুলতেই মাথায় জোরে আঘাত করা হয়। তিনি জ্ঞান হারান। কিন্তু যে আঘাত করেছিল তাকে তিনি সে ভাবে দেখার সময় পাননি বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। পুলিশ জানায়, কিছু সূত্র মিলেছে। সে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


—নিজস্ব চিত্র।

Durgapur Bidhannagar Gujrat Security guard criminals police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy