E-Paper

টাকা মিলছে না, জল প্রকল্পের শ্রমিকেরা ধর্নায়

বুধবার সকাল থেকে পিএইচই-র ইসমাইল অঞ্চলের ১ নম্বর আরসিএফএ দফতরে কয়েকশো ঠিকা শ্রমিক ধর্নায় বসে পড়েন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:০৮
পিএইচই দফতরের সামনে ঠিকা শ্রমিকদের জমায়েত। নিজস্ব চিত্র

পিএইচই দফতরের সামনে ঠিকা শ্রমিকদের জমায়েত। নিজস্ব চিত্র Papan Chowdhury

বকেয়া বেতন মেটানোর দাবি জানিয়ে আসানসোলে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই) সামনে ধর্নায় বসেছেন ঠিকা শ্রমিকেরা। বুধবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে এই কর্মসূচি। বকেয়া না মেটানো পর্যন্ত তাঁরা টানা এই কর্মসূচি চালানো, প্রয়োজনে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। পিএইচই কর্তৃপক্ষ বকেয়া বিল না মেটালে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন মেটানো সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন ঠিকাদারেরা। পিএইচই কর্তৃপক্ষ জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

বুধবার সকাল থেকে পিএইচই-র ইসমাইল অঞ্চলের ১ নম্বর আরসিএফএ দফতরে কয়েকশো ঠিকা শ্রমিক ধর্নায় বসে পড়েন। তাঁদের অভিযোগ, গত দু’মাস ধরে তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। ঠিকাদারকে বেতনের জন্য বলা হলেও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। বিক্ষোভকারিদের তরফে বন্দনা রায়ের কথায়, ‘‘কমবেশি মাসিক প্রায় সাড়ে দশ হাজার টাকা বেতন পাই। গত দু’মাস ধরে তা পাচ্ছি না। বেতন না মেটানো পর্যন্ত বিক্ষোভ চলবে।’’ আর এক শ্রমিক ভানু রুইদাস বলেন, ‘‘বেতন না পেয়ে মুদির দোকানে ঋণ বেড়ে গিয়েছে। কেউ আর ধারে জিনিস দিতে চাইছেন না। ঠিকাদার জানাচ্ছেন, তাঁদের বহু টাকার বিল পাওনা। তাই বেতন দেওয়া সম্ভব নয়।’’

ঠিকা শ্রমিকদের অভিযোগ, জানুয়ারিতে বেতন না পাওয়ার পরেই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে তাঁরা পিএইচই কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনও উৎসাহ দেখাননি। ‘পিএইচই ওয়েলফেয়ার কন্ট্রাক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর অন্যতম সদস্য অসিত মল্লিক বলেন, ‘‘বছরখানেক ধরে বহু কোটি টাকার বিল পিএইচই কর্তৃপক্ষ মেটাচ্ছেন না। নিজেদের টাকা দিয়ে কাজ চালানো সম্ভব নয়। বকেয়া বিল না পেলে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া অসম্ভব।’’ তাঁরা এই সমস্যা আধিকারিকদের জানিয়েছেন বলে দাবি করেন।

পিএইচই সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ পানীয় জল প্রকল্প ‘জলজীবন মিশন’-এর আওতায় এই কাজ চলছে। মূলত গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জল সরবরাহের জন্যই এই প্রকল্প। শ্রমিকেরা কর্মবিরতি করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা। ঠিকাদারদের অনেকের দাবি, প্রায় ছ’মাস টাকা আসছে না।‌ রক্ষণাবেক্ষণের কাজের টাকাও ৮ মাস অমিল। জেলায় এই প্রকল্পের কাজে যুক্ত প্রায় দু’শো ঠিকাদার। ওভারহেড ট্যাঙ্ক থেকে জল সরবরাহ, পাম্প চালানো থেকে জলশোধন-সহ নানা কাজে যুক্ত সাতশোর বেশি ঠিকাকর্মী। ঠিকাদার সংগঠনের তরফে দিলীপ দাস, কানাই গঙ্গোপাধ্যায়দের দাবি, তাঁদের কারও ১ কোটি টাকা, কারও প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে।

বকেয়া না মেটানোয় যে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা স্বীকার করেছেন পিএইচই-র অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সন্দীপ কুণ্ডু। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি তহবিলের টাকা আসছে না। কেন আসছে না, বলা সম্ভব নয়। টাকা না থাকায় ঠিকাদারেরা বকেয়া বিল পাচ্ছেন না। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থার আবেদন করেছি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Asansol

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy