বর্ধমান: কাঁচা বাড়ি ভেঙে ইটের গাঁথনি তোলা শুরু হয়েছিল। তার মধ্যেই নোটিস ধরিয়ে জানানো হয়েছে, এই নির্মাণের জমি আদতে রাজ্য সরকারের সেচ ও জলপথ বিভাগের। ১৫ দিনের মধ্যে ‘অবৈধ’ নির্মাণ না সরালে, বিধি অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। এর পরেই টনক নড়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের। কারণ, ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে চলছিল ওই সব নির্মাণ! মেমারির দলুইবাজার ২ পঞ্চায়েতের নীলকুঠি কলোনি এলাকায় সরকারি জমিতে প্রকল্পের বাড়ি তৈরির অনুমতি কী ভাবে পেলেন কয়েক জন উপভোক্তা, ব্লকের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলাশাসক আয়েষা রানি সোমবার বলেন, “মেমারি ১ বিডিও-র কাছে বিশদ রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তা পাওয়ার পরেই বলতে পারব, কী ঘটেছে।” তবে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে নিয়মের ‘ফাঁক’ গলে এবং নথি পরীক্ষকদের একাংশের ‘গাফিলতিতে’ এমন ঘটার সম্ভাবনার কথা শুনিয়েছে প্রশাসনের একাংশ। সোমবার বিএলএলআর দফতর ওই এলাকায় মাপজোক করে।
নিজের জায়গা বা পাট্টার জমি না থাকলে, আবাসের অনুদান পাওয়ার কথা নয়। ওই উপভোক্তারা তা পেলেন কী ভাবে? প্রশাসন সূত্রের দাবি, ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে আবেদনপত্রের সঙ্গে বা নির্দিষ্ট পোর্টালে জমি সংক্রান্ত নথি জমা দেওয়ার নিয়ম ছিল না। শুধু নথি পরীক্ষকদের জমির নথি দেখে নেওয়ার কথা ছিল। সেই ‘ফাঁক’ গলেই এমন ঘটেছে বলে অনুমান। প্রশাসনের একাংশের দাবি, বাঁধ এলাকা দেখে সেটা সরকারি জমি বলে বোঝা উচিত ছিল সমীক্ষায় যাওয়া কর্মীদের। তা তাঁরা কেন বুঝতে পারলেন না, সেই প্রশ্ন উঠছে।
ওই জমিতে বাড়ি তুলছিলেন ঝর্না মোহন্ত। তাঁর দাবি, “সরকার থেকেই আমাকে টাকা দিয়েছে। এখন নোটিস পেয়ে কাজ বন্ধ করেছি। যদি কোনও ত্রুটি থাকে, সরকার দেখল না কেন?” স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের ধীমান বিশ্বাস বলেন, “ওঁদের অনেকে এখানে প্রায় ৪০ বছর বাস করছেন। কিন্তু বাড়ির অনুদান কী করে পেলেন, জানা নেই।”
বিডিও (মেমারি ১) শতরূপা দাস বলেন, “আবেদনের সঙ্গে জায়গার নথি নেওয়ার সুযোগ নেই। বিএলএলআরও-র রিপোর্ট পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” মেমারির তৃণমূল বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য শুধু বলেন, “একটু বুঝে কাজ করা প্রয়োজন ছিল।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)