বারবার পরীক্ষা নিয়ামকের বদল, রেজাল্ট বিভ্রাট-সহ নানা কারণে টানা তিন বছর সমাবর্তন উৎসব হয়নি। শেষমেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা বললেন, ‘‘আপাতত ১ ডিসেম্বর আচার্যের অনুমতি নিয়ে ৩৬তম সমাবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
গত তিন বছর ধরে সমাবর্তন হয়নি জেনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের (নাক) প্রতিনিধিরা। চলতি বছর মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎকর্ষতা নিয়ে দেশের নানা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিল। সেখানেও সমাবর্তন হয়নি বলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্ট জমা দিতে পারেনি।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, নিমাই সাহা উপাচার্যের দায়িত্ব নেওয়ার পরে সমাবর্তনের জন্য উদ্যোগী হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, এ বিষয়ে তিনি বাড়তি দিয়েছিলেন সহ উপাচার্য ষোড়শীমোহন দাঁ-কে। চলতি বছরে স্নাতকের তৃতীয় বর্ষের তিনটি বিভাগেই আবার নির্ভুল ফল প্রকাশ হয়। তাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উৎসাহিত হয়ে ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারির পরে ফের সমাবর্তন উৎসব করতে উদ্যোগী হয়। ষোড়শীমোহনবাবু বলেন, “সমাবর্তন উৎসবের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।” যদিও সমাবর্থনের দিনক্ষণ চলতি মাসেই করা হবে বলে প্রথমে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য কেশরীনাথ ত্রিপাঠী সময় দিতে পারেননি।
কিন্তু প্রশ্ন, তিন বছর ধরেও রাজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন উৎসব করা গেল না কেন। এর কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সমাবর্তন উৎসবে পিএইডি, এমফিল, স্নাতকোত্তর পাশ করা পড়ুয়াদের শংসাপত্র দেওয়া হয়। এ ছাড়াও স্নাতকদের শংসাপত্র তৈরি করে বিভিন্ন কলেজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ফলে, সমাবর্তন উৎসবের নেপথ্যে মূল দায়িত্বটা নির্ভর করে পরীক্ষা-নিয়ামক দফতরের উপরে। আর সেখানেই নানা গলদের অভিযোগ উঠেছে বারবার। গত তিন বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত স্তরের পরীক্ষার ফলেই গোলমাল ধরা পড়েছে। স্নাতকস্তরে কেউ পাঁচ নম্বর পেয়ে পাশ করেছেন, আবার কেউ ৬৫ পেয়েও ফেল করেছেন— এমন মার্কশিটও জমা পড়েছে পরীক্ষা নিয়ামক দফতরে।
এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষকর্তার দাবি, “গত তিন বছরে আট বার পরীক্ষা নিয়ামক পদে বদল ঘটেছে। কাজ বোঝার আগেই পদ হারাতে হয়েছে। অস্থায়ী পরীক্ষা নিয়ামকরা সমাবর্তন নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় পাননি।” সমাবর্তনের এই তোড়জোড়ে খুশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy