Advertisement
E-Paper

তিন এলাকার আরও পাঁচ জন করোনা-আক্রান্ত

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলকোটের পদিমপুরে এক জন, ভাতারে বড় পোষলা গ্রামে দু’জনের ও মন্তেশ্বরের লহনা গ্রামের এক দম্পতির শরীরে করোনাভাইরাসের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০৬:৩৬
ভাতারে বড় পোষলায় এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

ভাতারে বড় পোষলায় এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

ভিন্‌ রাজ্য থেকে লোক আসা বাড়তেই বেড়েছে করোনা-আক্রান্ত। মঙ্গলবারই পূর্ব বর্ধমানে এক দম্পতি-সহ পাঁচ জন করোনা আক্রাম্তের খোঁজ মিলেছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই ভিন্‌ রাজ্য থেকে বৃহস্পতি-শুক্রবার জেলায় ঢুকেছেন। এঁরা কেউ গয়নাশিল্পে, কেউ নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে আবার কেউ ট্রাক চালকের কাজ করতেন ওই সব রাজ্যে। জেলাশাসক বিজয় ভারতী জানিয়েছেন, প্রত্যেকটি এলাকা ‘গণ্ডিবদ্ধ’ করা হবে। পরিযায়ী শ্রমিকদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা বাড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায়ও বলেন, “মঙ্গলবার জেলায় পাঁচ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। তাঁরা ভিন্‌ রাজ্য থেকে এসেছেন। এখানে পরীক্ষা করার পরে, ‘পজ়িটিভ’ বলে জানা গিয়েছে। প্রত্যেককেই কাঁকসার কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের গাংপুরের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলকোটের পদিমপুরে এক জন, ভাতারে বড় পোষলা গ্রামে দু’জনের ও মন্তেশ্বরের লহনা গ্রামের এক দম্পতির শরীরে করোনাভাইরাসের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। মন্তেশ্বরের ওই মহিলা অন্তঃসত্ত্বা বলে স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন। প্রতিটি এলাকা ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভাতারের ওই দুই যুবকের পাশাপাশি বাড়ি। তাঁরা একই সঙ্গে হরিয়ানার ফরিদাবাদের লক্ষ্মণপুরের একটি স্টিল-পালিশ কারখানায় কাজ করেন। একই দিনে আলাদা ভাবে জেলায় এসে পৌঁছন তাঁরা। বর্ধমানের নবাবহাটে তাঁদের লালারসের নমুনা নেওয়া হয়। আলাদা ভাবেই গ্রামে ফেরেন তাঁরা। এক জনের রিপোর্ট মেলে সোমবার রাতে, অন্য জনের মঙ্গলবার। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান থেকে একটি গাড়িতে আরও তিন জনের সঙ্গে গ্রামে ফেরেন ভাতারের ওই যুবকদের এক জন। ফিরেই জ্বর, মাথাব্যথা শুরু হয় তাঁর। পুলিশ ওই গাড়িতে থাকা তিন জন-সহ ন’জনকে গাংপুরের হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এ দিন দুপুরে অন্য যুবকেরও করোনা-পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে।

মঙ্গলকোটের পদিমপুরের যুবক চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি সংস্থায় ট্রাক চালক ছিলেন। সেখানেই তাঁর জ্বর, সর্দি, কাশি হয়। স্থানীয় প্রশাসন লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে। কিন্তু রিপোর্ট আসার আগেই এলাকা ছাড়েন তিনি। শনিবার নবাবহাটে তাঁর নমুনা নেওয়া হয়। সোমবার রাতে রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসে। তাঁর সংস্পর্শে আসা ১৩ জনকে গাংপুরের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, ওই যুবক ফিরে এসে এলাকায় ঘুরেছেন, পারিবারিক দোকানেও বসেন। তিনি কার-কার সংস্পর্শে এসেছিলেন, পুলিশ তা খোঁজ নিচ্ছে।

এ দিন বিকেলে মন্তেশ্বরের লহনা গ্রামে এক দম্পতি করোনা আক্রান্ত বলে জানা যায়। তাঁরা দিল্লিতে চাঁদনিচক এলাকায় গয়নার কাজ করতেন। বৃহস্পতিবার দিল্লির স্পেশাল ট্রেনে উঠে শুক্রবার হাওড়ায় নামেন তাঁরা। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্তঃসত্ত্বার শারীরিক পরীক্ষার সঙ্গে নিয়মমাফিক লালারসের নমুনাও সংগ্রহ করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের। এ দিন ‘পজ়িটিভ’ রিপোর্ট আসতেই বিএমওএইচকে ঘটনাস্থলে গিয়ে খতিয়ে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়, জানান এসিএমওএইচ (কালনা) চিত্তরঞ্জন দাস।

আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা নিয়ে এ দিন ওই সব এলাকায় প্রচার চালায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ‘গণ্ডিবদ্ধ’ এলাকায় বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। মন্তেশ্বরের বামুনপাড়ার পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সভাপতি কাশেম আলি শেখ, মঙ্গলকোটের উপপ্রধান শান্ত সরকারেরাও বলেন, “করোনা-আক্রান্তের খবর আসার পরে স্বাভাবিক ভাবেই আশেপাশের গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে ভয়ের কিছু নেই। পুলিশ-প্রশাসন পাশে আছে।’’

Coronavirus in West Bengal Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy