Advertisement
E-Paper

নিভৃতবাস কেন্দ্রে নমুনা সংগ্রহ নিয়ে টানাপড়েন

স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের দাবি, জামালপুরের পাঁচরায় কিসানমান্ডিতে যে নিভৃতবাস কেন্দ্র করা হয়েছে, মঙ্গলবার মেমারি গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে একটি দল সেখানে এসে তিন জনের নমুনা সংগ্রহ করে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২০ ০০:০৪
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

করোনা-পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা সংগ্রহে পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘কোয়রান্টিন’ কেন্দ্র থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানোর বদলে, ওই কেন্দ্রেই ‘কিয়স্ক’ বসিয়ে নমুনা নেওয়ার ব্যবস্থার প্রস্তাব দিয়েছিল জেলা পুলিশ। সেই অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের ‘কোয়রান্টিন’ বা নিভৃতবাস কেন্দ্রে মঙ্গলবার ‘কিয়স্ক’ বসানোর কথা জানিয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু বুধবার সেখানে কেউ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে নমুনা সংগ্রহে না যাওয়ায় চাপান-উতোর হল প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ল্যাবরেটরিতে যে তিন কর্মী রয়েছেন, তাঁদের দু’জনকে এখন নমুনা সংগ্রহের কাজের জন্য বর্ধমানে ও এক জনকে রায়না ২ ব্লকে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের দাবি, জামালপুরের পাঁচরায় কিসানমান্ডিতে যে নিভৃতবাস কেন্দ্র করা হয়েছে, মঙ্গলবার মেমারি গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে একটি দল সেখানে এসে তিন জনের নমুনা সংগ্রহ করে। তবে তা করা হয়েছিল খোলা জায়গায়, যা নিয়মবিরুদ্ধ। বুধবার তিরিশ জনের নমুনা সংগ্রহের কথা ছিল। কিন্তু জামালপুরের বিএমওএইচ আনন্দমোহন গরাই বিডিও শুভঙ্কর মজুমদারকে জানিয়ে দেন, নমুনা সংগ্রহ করা হবে না।

এর পরেই চাপান-উতোর শুরু হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে দাবি করা হয়, ওই কেন্দ্র থেকে নমুনা সংগ্রহের পরিকাঠামোয় খামতি রয়েছে। ‘কিয়স্ক’ বসেনি। নমুনা সংগ্রহের পরে, তথ্য ‘আপলোড’ করার পদ্ধতিরও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই। সর্বোচ্চ পঞ্চাশ জনের নমুনা নেওয়ার পরিকাঠামো থাকার কথা। তা-ও নেই। এই পরিকাঠামোয় নমুনা সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে ল্যাবরেটরির কর্মীরা সুরক্ষিত নন। তাঁদের সেখানে পাঠানো ‘সঙ্গত নয়’ বলে মনে করা হচ্ছে, দাবি করেন স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক।

জেলা প্রশাসনের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়, স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ কর্তাদের উপস্থিতিতে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সে জন্য মঙ্গলবার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতেও যান আধিকারিকেরা। জামালপুরে নমুনা সংগ্রহও শুরু হয়। কিন্তু সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে এ ভাবে নমুনা সংগ্রহ বন্ধ করা ঠিক হয়নি, দাবি করেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। জেলা পুলিশের তরফেও দাবি করা হয়, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ না করে ‘অনভিপ্রেত দৃষ্টান্ত’ তৈরি করা হল।

এ নিয়ে টানাপড়েন বাড়তে থাকায় জেলাশাসক বিজয় ভারতী দুপুরে একটি বৈঠক ডাকেন। সেখানে তিন পক্ষের কর্তারা ছাড়াও, ছিলেন প্রশাসনের ‘কোভিড’ নোডাল অফিসার তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক (স্বাস্থ্য, উন্নয়ন) রজত নন্দ, পুলিশের ‘কোভিড’ নোডাল অফিসার শৌভিক পাত্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহরায়েরা। প্রশাসনের কর্তারা জানান, এক-একটি নিভৃতবাস কেন্দ্র থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দূরত্ব দাঁড়াচ্ছে ২৫-৩০ কিলোমিটার। সব শ্রমিককে নমুনা সংগ্রহের জন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠাতে নানা বন্দোবস্ত করতে হচ্ছে এবং খরচ-সাপেক্ষও হচ্ছে। তার বদলে নিভৃতবাস কেন্দ্রে গিয়ে নমুনা নেওয়া সহজ। পরিকাঠামোর সমস্যা থাকলে, তা জানানো উচিত ছিল বলে জানান আধিকারিকেরা।

বৈঠক শেষে জেলাশাসক বলেন, ‘‘সমস্যা মিটে গিয়েছে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক রজত নন্দের আশ্বাস, পরিকাঠামোগত সমস্যা মেটানো হবে। সিএমওএইচ প্রণব রায় বুধবার বলেন, ‘‘আজ থেকেই নমুনা সংগ্রহের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কোনও কারণে সম্ভব না হলে বৃহস্পতিবার থেকে হবে।’’

Coronavirus COVID-19
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy