Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
দুর্গাপুরে দ্বন্দ্ব তৃণমূলে

কাউন্সিলরকে মারধর, অভিযুক্ত দলেরই নেতা

নির্দল হিসেবে নির্বাচিত তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এক কাউন্সিলরের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল অন্য এক তৃণমূল কাউন্সিলরের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। রবিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে দুর্গাপুরের ডিপিএল লাগোয়া বীরভানপুর এলাকায়। আহত নেতা অরবিন্দ নন্দী শহরের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তিনি দুর্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

প্রহৃত কাউন্সিলর অরবিন্দ নন্দী। —নিজস্ব চিত্র।

প্রহৃত কাউন্সিলর অরবিন্দ নন্দী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৫ ০২:৪০
Share: Save:

নির্দল হিসেবে নির্বাচিত তৃণমূল ঘনিষ্ঠ এক কাউন্সিলরের উপরে হামলার অভিযোগ উঠল অন্য এক তৃণমূল কাউন্সিলরের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। রবিবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটে দুর্গাপুরের ডিপিএল লাগোয়া বীরভানপুর এলাকায়। আহত নেতা অরবিন্দ নন্দী শহরের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তিনি দুর্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গোলমালের ঘটনাটি ঘটে এ দিন রাত ৮টা নাগাদ। তৃণমূল সূত্রের খবর, ডিপিএলে আইএনটিটিইউসি-র দখল রয়েছে ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের হাতে। সে নিয়েই তাঁদের সঙ্গে অরবিন্দবাবুর বিবাদ। দলের একটি সূত্রের দাবি, ইদানীং অরবিন্দবাবু ডিপিএলে কর্তৃত্ব কায়েমের চেষ্টা করছেন। এ দিন সে নিয়েই গোলমাল বাধে। বিশ্বনাথবাবু অবশ্য কোনও হামলা বা মারধরের কথা মানতে চাননি। তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি তথা শহরের মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, গোটা ঘটনা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যায় অরবিন্দবাবু ও তাঁর অনুগামীরা বীরভানপুর দাসপাড়ায় বসে বৈঠক করছিলেন। অরবিন্দবাবু অভিযোগ করেন, সেই সময়ে ডিপিএলের আইএনটিটিইউসি নেতা আলোময় ঘরুইয়ের নেতৃত্বে বেশ কয়েক জন সেখানে এসে তাঁর উপরে চড়াও হয়। তাদের মারধরে তিনি মাথা, ঘাড় ও চোখে চোট পান। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আরও দু’জন প্রহৃত হন বলে অভিযোগ।

অরবিন্দবাবু অভিযোগ করেন, “কাউন্সিলর বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের উপস্থিতিতেই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিশ্বনাথবাবুর নির্দেশেই হামলা হয়েছে। হামলা শুরু হওয়ার পরে তিনি গাড়িতে চড়ে এলাকা ছেড়ে চলে যান।” রাতে কোকওভেন থানায় গিয়ে অরবিন্দবাবু অভিযোগ দায়ের করেন। পরে তাঁকে ভর্তি করানো হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। বিশ্বনাথবাবু এবং আলোময়বাবু যদিও এই হামলায় মদত দেওয়া বা তাঁদের ঘনিষ্ঠ কারও জড়িত থাকার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিপিএলে আইএনটিটিইউসি-র যে গোষ্ঠী বেশি সক্রিয় তা নিয়ন্ত্রণ করেন তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বনাথবাবু। সেই সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ আলোময়বাবু। ইদানীং অরবিন্দবাবু ডিপিএলে কর্তৃত্ব কায়েম করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। কিন্তু আলোময়বাবুদের চাপে তিনি তা বিশেষ করতে পারছেন না। আর এ নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোলের সূত্রপাত। অরবিন্দবাবু নিজে অবশ্য সে কথা মানতে চাননি। তিনি দাবি করেন, “দলীয় নেতৃত্বের তরফে আমাকে ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের পর্যবেক্ষক করা হয়েছে। আমি কাজ শুরু করেছি। তা আটকাতে আমার উপরে হামলা চালানো হল।”

বিশ্বনাথবাবু আবার দাবি করেন, “দলের লোকেরা কোনও দিন দলের লোকের গায়ে হাত তোলে না। একেবারেই মিথ্যে একটা অভিযোগ আনা হচ্ছে। গোটাটাই সিপিএম এবং বিজেপির চক্রান্ত। আমাদের হেয় করতে এ সব করা হচ্ছে।”

দলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “সকাল থেকেই বীরভানপুরের ওই জায়গায় দলীয় একটি কর্মসূচি চলছিল। সেখানেই সন্ধ্যায় হামলা হয়েছে বলে শুনেছি। দলীয় স্তরে গোটা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।”

দুর্গাপুরের বিজেপি এবং সিপিএম নেতৃত্ব গোটা ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগের কথা পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE