Advertisement
২০ মে ২০২৪

শিশু চুরিতে ধৃত দম্পতি

এক বছরের শিশুকে চুরির অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয় শিশুটিকেও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ০১:০৯
Share: Save:

এক বছরের শিশুকে চুরির অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয় শিশুটিকেও।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমান শহর লাগোয়া চাঁদাইপুরের কাছ থেকে রামু মুর্মু ও মনীষা মুর্মু নামে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার বর্ধমান আদালত থেকে জামিনও পেয়ে যান তাঁরা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “নাম ভাঁড়িয়ে ওই মহিলা ভাড়া নিয়েছিলেন। গ্রেফতাররের পর জানা গিয়েছে ওই মহিলার আসল নাম মনীষা মুর্মু।”

ওই শিশুটির বাবা-মা বিদ্যুৎ মাঝি ও রিম্পা মাঝি শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তেলিপুকুর-সদরঘাটের কাছে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। স্থানীয় একটি চালকলে কাজ করতেন বিদ্যুৎবাবু। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়ির পাশেই মাস তিনেক আগে সুস্মিতা মণ্ডল নামে এক মহিলা ভাড়া আসেন। দুই পরিবারের মধ্যে ঘনিষ্ঠতাও হয়। গত ২৩ মে বাজার করতে এক বছরের ছেকে ঋজুকে নিয়ে টোটো চড়ে কার্জন গেট চত্বরে আসেন রিম্পাদেবী। সঙ্গে ছিলেন সুস্মিতাও। অভিযোগ, বাজারের ফাঁকে ছেলেকে সুস্মিতার কোলে দিয়ে শৌচাগারে যান রিম্পাদেবী। ফিরে দেখেন সুস্মিতাও নেই। নেই একমাত্র সন্তানও। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে ছেলেকে না পেয়ে কাছেই মহিলা থানায় ছুটে যান রিম্পাদেবী। ততক্ষণে খবর পেয়ে ছুটে চলে আসেন বিদ্যুৎবাবু। মহিলা থানার পরামর্শে ওই দম্পতি বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার মোবাইল নম্বর ট্র্যাক করে লাগাতার খোঁজ চালিয়ে চাঁদাইপুরের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। শিশু চুরিতে মদত দেওয়ার অভিযোগে ওই মহিলার স্বামীকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।

বর্ধমান থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত দম্পতির আসল বাড়ি বাঁকুড়ার ইন্দাস থানার বাজিতপুর গ্রামে। পুলিশের দাবি, ওই দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানান, বেশ কয়েক বছর আগে বিয়ে হলেও কোনও সন্তান হয়নি তাঁদের। তার উপর ৬ মাস আগে গর্ভপাত হয়ে যাওয়ায় সন্তানের আশা শেষ হয়ে গিয়েছে। সে কারণেই মনীষাদেবী ভুল করে ছেলে নিয়ে চলে এসেছিলেন। যদিও বক্তব্যে পুরোপুরি সত্যি বলে মানেনি পুলিশ।

এ দিকে বারো দিন পরে ছেলেকে পেয়ে খুশিতে ডগমগ মাঝি দম্পতি। তাঁরা বলেন, “ওই মহিলাকে কত বিশ্বাস করেছিলাম। সেই কি না আমার ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে গেল। ভাবতেই পারছিলাম না। এখন তো মনে হচ্ছে, পরিকল্পনা করেই আমাকে বাজারে নিয়ে এসেছিল। ঈশ্বরের কৃপায় ছেলেকে ফিরে পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত।” ছেলেকে নিয়ে থানা ছাড়ার সময় কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি বর্ধমান থানার আইসি প্রিয়ব্রত বক্সিকে। আইসি তাঁদেরকে বলেন, “আপনাদের কোলে ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে পেরে আমরাও আনন্দিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

baby couple stealing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE