Advertisement
০৩ জুন ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

‘হুমকিতে’ ঘরছাড়া, প্রার্থীদের আশ্রয় দলীয় কার্যালয়ে

পুলিশেরও দাবি, বিরোধীরা কেউ হামলার মুখে ঘরছাড়া হয়েছেন, এমন কোনও অভিযোগ নেই।

আসানসোল বিজেপি কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন দলীয় কর্মী, প্রার্থীরা। নিজস্ব চিত্র

আসানসোল বিজেপি কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন দলীয় কর্মী, প্রার্থীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা, আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৩ ০৭:৩৩
Share: Save:

কেউ ভোটে প্রার্থী হয়েছেন বলে ‘ঘরছাড়া’। কেউ আবার প্রার্থীর প্রস্তাবক বা দলের হয়ে নেতৃত্ব দেওয়ায় ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তাঁদের আশ্রয়স্থল দলীয় কার্যালয়। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসক দলের হুমকিতে এমন অবস্থা হয়েছে বলে দাবি বিজেপি ও সিপিএমের। তবে এই অভিযোগে আমল দেয়নি তৃণমূল। পুলিশেরও দাবি, বিরোধীরা কেউ হামলার মুখে ঘরছাড়া হয়েছেন, এমন কোনও অভিযোগ নেই।

বুধবার সকালে আসানসোলের ধাদকায় বিজেপির জেলা কার্যালয়ে দেখা গেল, সালানপুর, বারাবনি পাণ্ডবেশ্বর ও জামুড়িয়া থেকে শতাধিক দলীয় কর্মী-সমর্থক সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন জেলা নেতৃত্ব। একাধিক ঘরে মেঝেতে শুয়ে-বসে রয়েছেন কর্মী-সমর্থকেরা।

সালানপুরের বাসুদেবপুর জেমারির বাসিন্দা বিজেপি প্রার্থী বিনোদ চৌহ্বানের অভিযোগ, “ভোটে দাঁড়ানোই আমার অপরাধ হয়েছে। প্রথম দিন থেকে হুমকি পাচ্ছি। বাড়ির সকলে চিন্তায় আছেন। জানি না কী হবে।” ভোটে দাঁড়িয়েছেন বলে ‘হুমকি’র মুখে পড়েছেন বলে জানান সুনীতা কিস্কু। ২৮ দিনের শিশুকে কোলে করে ঘরের এক কোনায় চুপ করে বসে রয়েছেন। চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। তিনি বলেন, “দেন্দুয়া থেকে দাঁড়িয়েছি। তাই ‘ঘরছাড়া’ হয়েছি।”

দলের প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়ন জমা করতে গিয়েছিলেন বারাবনির দোমোহানি পঞ্চায়েতের বাসিন্দা অশীতিপর স্বপন রায়। অভিযোগ, প্রার্থীদের ব্লক অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়ায়, রুখে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এটাই ‘অপরাধ’ ছিল তাঁর। স্বপনের দাবি, “ওই রাত থেকেই আমি ঘরছাড়া হয়ে আছি।” এখন জেলা কার্যালয় তাঁদের কাছে এক মাত্র আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।

এ দিকে, মঙ্গলবার রাতে কাঁকসার মাধবমাঠ এলাকায় বিজেপি প্রার্থী ছোটন বাগদিকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠছে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই। তাঁরা দাবি, বাড়িতে এসে দেওয়াল লিখন, প্রচার না করার হুমকি দেওয়া হয়। অন্ধকারে কাউকে চিনতে না পারলেও, তাঁরা সব তৃণমূলের লোকজন। বিজেপির জেলা মুখপাত্র বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জেলার প্রায় সব ব্লক থেকেই শতাধিক প্রার্থী, প্রস্তাবক ও কর্মীকে নিরাপদে কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। পুলিশকে বলে লাভ হবে না, তাই জানাইনি। তবে নির্বাচন কমিশনে জানানো আছে।”

হুমকির মুখে দলের প্রার্থী ও কর্মীদের একাংশকে ঘরছাড়া করানোর অভিযোগ করেছে সিপিএমও। দলের রাজ্য সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “সালানপুর ও বারাবনিতে বেশি আক্রমণ করছে তৃণমূল।”

তবে বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তাঁর পাল্টা দাবি, “আক্রমণ করার হলে তো, প্রথম দিন থেকেই হত। তা হয়নি বলে বিরোধীরা প্রার্থী দিয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাও হচ্ছে।” তাঁর সংযোজন: “বিরোধীরা বহু জায়গায় প্রার্থীই পাননি। প্রায় ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত জিতেছে তৃণমূল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE