Advertisement
১৯ মে ২০২৪

তৃণমূল কর্মী খুনে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ধৃত সিপিএম নেতা

এফআইআরে নাম না থাকা সত্ত্বেও তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন সিপিএমের রায়না জোনাল কমিটির সম্পাদক। সিপিএমের দাবি, শনিবার সন্ধ্যায় খণ্ডঘোষের পলেমপুর থেকে ধরার পরে সারারাত ওই নেতা, আখতার আলি মির্জাকে আটক করে রাখা হয় থানায়।

ধৃত আখতার আলি মির্জা।— নিজস্ব চিত্র।

ধৃত আখতার আলি মির্জা।— নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৫ ০২:৪৪
Share: Save:

এফআইআরে নাম না থাকা সত্ত্বেও তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন সিপিএমের রায়না জোনাল কমিটির সম্পাদক। সিপিএমের দাবি, শনিবার সন্ধ্যায় খণ্ডঘোষের পলেমপুর থেকে ধরার পরে সারারাত ওই নেতা, আখতার আলি মির্জাকে আটক করে রাখা হয় থানায়। রবিবার বর্ধমান জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে দু’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

গত সপ্তাহে মাধবডিহি থানার বিনোদপুরে তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। তৃণমূলের অভিযোগ, বিনোদপুর প্রাথমিক স্কুলে দলের কর্মিসভার জন্য কর্মীরা যখন জড়ো হচ্ছেন, তখনই বোমা, গুলি নিয়ে হামলা চালায় সিপিএম। কর্মীরা ছিটকে গেলে সিপিএমের দুষ্কৃতীরা তাঁদের ঘিরে ধরে লাঠি, রড, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আক্রমণও করে বলেও অভিযোগ। তাতেই জখম হন স্থানীয় মোমেজপুর গ্রামের প্রভাত বাগ (৫৬)। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার সময় মৃত্যু হয় তাঁর। সংঘর্ষের দিনই স্থানীয় তৃণমূল কর্মী, বিনোদপুর গ্রামের শেখ লিয়াকৎ মাধবডিহি থানায় ১৭ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। রাতেই পুলিশ রায়না জোনাল কমিটির সদস্য জামালউদ্দিন খাঁ-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে আরও তিন জনকে ধরা হয়।

মাসখানেক আগে মাধবডিহি থানা ভবনের কাছেই খুন হন রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সভাপতি আব্দুল আলিম। তারপরে গত ৬ জুন মাধবডিহি থেকে কিছুটা দূরে বিনোদপুরে সিপিএমের হামলায় আর এক কর্মী প্রভাত বাগ মারা যাওয়ায় তৃণমূল পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে। দলের জেলা সভাপতির কাছে তাঁরা জানায়, মাধবডিহি থানার ওসি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় তাঁর কর্তব্য পালন করলে মাস খানেকের মধ্যে তৃণমূলের দু’জনকে খুন হতে হতো না। একই ক্ষোভ জানিয়েছিলেন, প্রভাতবাবুর স্ত্রী গঙ্গাদেবীও। জেলা সভাপতি মোমরেজপুর গ্রামে গিয়ে তখন কর্মীদের ক্ষোভ সামাল দিয়ে জানিয়েছিলেন, তিনি এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলবেন। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে স্বপনবাবু পুলিশ সুপারের কাছে মাধবডিহি থানার ওসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

সিপিএমের নেতারা যদিও ওই প্রসঙ্গ তুলেই অভিযোগ করেছেন, পুলিশের উপর তৃণমূলের নিচুস্তরের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে দেখেই পুলিশ অতিসক্রিয় হয়ে এফআইআরে নাম না থাকা সত্ত্বেও জোনাল কমিটির সম্পাদককে গ্রেফতার করেছে। এ দিন আদালতে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য উদয় সরকার-সহ রায়নার সিপিএম নেতারা উপস্থিত ছিলেন। দলের প্রাক্তন সম্পাদক অমল হালদার অভিযোগ করেন, “এফআইআরে ১৭ জনের মধ্যে আখতার আলি মির্জার নাম নেই। তার নামে তৃণমূলও মনে করেছিল, আখতার আলি ওই ঘটনায় জড়িত নয়। তারপরেও পুলিশ অতিসক্রিয় হয়ে আখতার আলিকে গ্রেফতার করেছে। আমরা এখনও মনে করি, তৃণমূলের ছোড়া বোমার টুকরো লেগেই প্রভাতবাবু মারা গিয়েছেন।”

যদিও এই কথা মানতে নারাজ বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল। তিনি বলেন, “প্রভাতবাবুর উপর হামলার ঘটনায় ধৃতের যোগ মিলেছে বলেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘মনে রাখা দরকার, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি খুনের ঘটনায় সিপিএমের চার জনের নামে এফআইআর করা হয়েছিল। পুলিশ কিন্তু কারও বাড়ি পর্যন্ত যায়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman CPM FIR Trinamool police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE