Advertisement
E-Paper

বসুর সঙ্গে বিধানও মুখ বামের মিছিলে

দলের অন্দরে বিতর্ক চলেছে দিন দশেক ধরে। বাম আন্দোলনে কী ভাবে এক কংগ্রেস নেতাকে অন্যতম মুখ হিসেবে রাখা যায়, সেই প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন দলের জেলা নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০৩
দুর্গাপুরে শুরু হল পদযাত্রা। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

দুর্গাপুরে শুরু হল পদযাত্রা। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

দলের অন্দরে বিতর্ক চলেছে দিন দশেক ধরে। বাম আন্দোলনে কী ভাবে এক কংগ্রেস নেতাকে অন্যতম মুখ হিসেবে রাখা যায়, সেই প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছিলেন দলের জেলা নেতৃত্ব। তবে শেষমেশ ‘আধুনিক দুর্গাপুরের রূপকার’ হিসেবে বিধানচন্দ্র রায়ের ছবি দেওয়া পতাকা হাতেই মিছিল করল সিপিএম।

রবিবার দুর্গাপুরে সিপিএমের নেতৃত্বাধীন মিছিলে জ্যোতি বসুর সঙ্গে প্রয়াত কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের মুখও রইল পতাকায়। তৃণমূল পরিচালিত দুর্গাপুর পুরসভার বিরুদ্ধে এক সপ্তাহ ধরে শহরের নানা এলাকায় একশো কিলোমিটার পদযাত্রার আয়োজন করেছে সিপিএম। এ দিন তা শুরু হয়। শহরে বেহাল পরিষেবা নিয়ে আন্দোলনের জন্য মূলত সিপিএমের উদ্যোগেই ১৩টি বাম সংগঠনকে নিয়ে যৌথমঞ্চ গড়া হয় ২০১৫-র জুনে। বিধানসভা ভোটের আগে সই সংগ্রহ, বিক্ষোভ-অভিযান হয়। দুর্গাপুরে দু’টি বিধানসভা আসনেই হেরে গিয়েছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন পুরভোটের দিকে লক্ষ রেখে ফের পুরসভা অভিযানের ডাক দিয়েছে বামেরা। তার আগে প্রায় ১৫টি ওয়ার্ডে এই পদযাত্রা হবে। রবিবার সকালে জেমুয়ার পরানগঞ্জ থেকে মিছিল শুরু হয়। এমএএমসি টাউনশিপ, বিধাননগর, মুচিপাড়া, সগড়ভাঙা, শ্যামপুর, ডিপিএল কলোনি, ডিভিসি মোড় হয়ে ২১ নভেম্বর মিছিল পৌঁছবে পুরসভায়।

রবিবার মিছিলে কয়েকজনের হাতে থাকা বড় সাদা পতাকার কয়েকটিতে ছিল লাল রংয়ে আঁকা জ্যোতি বসুর ছবি, কয়েকটি বিধানচন্দ্রের। ২০১৪ সালের ২৬ জানুয়ারি জেলা সিপিএমের একাংশের আপত্তিতে দুর্গাপুরে এক কর্মসূচির পোস্টারে মহাত্মা গাঁধীর ছবি ব্যবহার করেও পিছু হঠেছিল দলের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ। এ বার এই সিদ্ধান্ত কেন? শহরের এক সিপিএম নেতা যুক্তি দেন, শিল্পাঞ্চল হিসেবে দুর্গাপুরের স্বীকৃতি বিধান রায়ের জন্যই। তাঁর গড়ে তোলা ডিপিএল শহরের অধিকাংশ কল-কারখানা তো বটেই, বড় অংশের গৃহস্থালীতেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। কিন্তু ডিপিএল এখন রীতিমতো আর্থিক সমস্যায় ভুগছে। রাজ্য সরকারের আর এক সংস্থা দুর্গাপুর কেমিক্যালস গড়ার পরিকল্পনাও হয়েছিল বিধানচন্দ্র রায়ের আমলে। সেই সংস্থা এখন বিলগ্নিকরণের পথে। আবার ডিএসপি গড়ার জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রশ্নে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। সমর্থন ছিল তৎকালীন বিরোধী দলনেতা জ্যোতিবাবুর।

সিপিএমের দুর্গাপুর ২ পূর্ব জোনাল সম্পাদক পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘আধুনিক দুর্গাপুর গড়তে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন বিধানচন্দ্র রায় ও জ্যোতি বসু। বর্তমান শাসকদলের অপদার্থতায় পুর পরিষেবা থেকে শিল্পের ভবিষ্যৎ, সবই প্রশ্নের মুখে।’’ দলের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক বলেন, ‘‘বিধানচন্দ্র রায়ের সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক মতের ফারাক আছে। কিন্তু দুর্গাপুর শহর গড়ায় তাঁর ভূমিকা অস্বীকার করার জায়গা নেই।’’

সিপিএম সূত্রের খবর, বিধান রায়ের মুখ থাকবে কি না, তা নিয়ে প্রায় দশ দিন ধরে বিতর্ক হয়েছে। জেলা নেতারাও দু’ভাগ হয়ে গিয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ঐকমত্য হয়েছে। দলের একাংশের মতে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিই সিদ্ধান্তটা সহজ করে দিয়েছে। তা ছাড়া গত দু’বছর ধরে ১ জুলাই বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিনে ‘বিধান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’-এর তরফে বাম নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।

তৃণমূলের দুর্গাপুর জেলা সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘যত দিন যাচ্ছে, সিপিএম আরও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়েই এমন খড়কুটো আঁকড়ে ধরছে। মানুষ সব বোঝেন।’’

TMC's Durgapur Municipal Corporation CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy