Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Crime

ফোন করে ডেকে খুন, তদন্তে দাবি পুলিশের

বার্নপুরের রামবাঁধের বাসিন্দা ওই নবম শ্রেণির ছাত্রের বারা পুলিশকে জানিয়েছেন, রবিবার দুপুর ১টা নাগাদ ছেলেকে কেউ ফোন করে।

তদন্তে পুলিশ আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র

তদন্তে পুলিশ আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৩ ০৮:৪২
Share: Save:

এক জনকে অপহরণের নাম করে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্য ছিল অভিযুক্তদের। আর এক জনকে দুই বন্ধুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার নামে ডেকেছিল এক ‘বান্ধবী’। হিরাপুরে এক কিশোর ও এক তরুণীকে খুনের ঘটনার পিছনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে বলে দাবি পুলিশ সূত্রের।

বার্নপুরের রামবাঁধের বাসিন্দা ওই নবম শ্রেণির ছাত্রের বারা পুলিশকে জানিয়েছেন, রবিবার দুপুর ১টা নাগাদ ছেলেকে কেউ ফোন করে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ফিরে এসে খাবে বলে ঘর থেকে বেরোয় ছেলে। কিন্তু বিকেল গড়িয়ে গেলেও ছেলে ফিরে আসেনি। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, “ওর মোবাইল বন্ধ পাই। তখন হিরাপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি।” বছর বাইশের ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর বাবা আবার পুলিশকে জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তাঁর মেয়ে ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে বাড়ি ফিরবে বলে গেলেও, রাতে আর ফেরেননি। ছাত্রীর বাবা বলেন, “রাতভর মেয়ের খোঁজ পাইনি। মঙ্গলবার সকালে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি।” তাঁর অভিযোগ, “প্রতিহিংসার বশে এই খুন।” মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি তাঁর বিয়ের কথাবার্তা পাকা হয়েছিল।

বুধবার ডিসি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী বলেন, “দু’টি খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, ছাত্র খুনে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তেরা এক নিকটাত্মীয়ের প্ররোচনায় ছেলেটিকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। উদ্দেশ্য ছিল, অপহরণের গল্প ফেঁদে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ বাবদ মোটা টাকা আদায় করা। কিন্তু পরে তারা জানতে পারে, ছেলেটির পরিবার খুব বিত্তশালী নয়। আর কোনও উপায় না দেখে ছেলেটিকে খুন করে অভিযুক্তেরা, দাবি পুলিশের।

পুলিশ সূত্রের দাবি, ছাত্রীকে খুনের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মেয়েটির এক বান্ধবী ফোন করে তাঁকে বাড়ি থেকে ডাকেন। উদ্দেশ্য ছিল, এলাকার দুই যুবকের সঙ্গে তাঁর দেখা করিয়ে দেওয়া। তার পরে কী ভাবে খুনের ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তদন্তকারীরা।

জোড়া খুনের ঘটনায় এলাকায় রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে এ দিন সিপিএম এবং বিজেপির তরফে বিক্ষোভ দেখানো হয় হিরাপুর থানায়। পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। সিপিএম নেতা কৃষ্ণেন্দু ঘোষের দাবি, “পুলিশ সজাগ থাকলে দুষ্কৃতীরা এই সাহস দেখাতে পারত না।”আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের অভিযোগ, “তৃণমূলের রাজত্বে খুন, ধর্ষণই এখন নিত্য ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূলের কয়লা, লোহা, বালি চোরেদের নিরাপত্তা দিতেই ব্যস্ত পুলিশ। তাই এখন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারছে না।”

যদিও হিরাপুর ব্লকের তৃণমূল নেতা প্রবোধ রায় বলেন, “ঘটনার পরেই পুলিশ অভিযুক্তদের ধরেছে। বিরোধীদের কাজ শুধু তৃণমূলের খুঁত ধরা।” ডিসি (পশ্চিম) অভিষেক বলেন, “নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ঠিক নয়। দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Case Asansol Hirapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE