রক্তের উপাদান পৃথকীকরণের ইউনিট চালু হতে চলেছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে। নববর্ষের আগেই এই ইউনিট চালু করার তোড়জো়র চলছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। সে জন্য রাজ্যের তরফে অর্থ অনুমোদনও করা হয়েছে। এই ইউনিট চালু হলে এই শিল্পাঞ্চল-সহ আশপাশের এলাকায় রক্তের চাহিদা অনেকটা মিটবে বলে আশা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
এই হাসপাতালে রক্তের উপাদান পৃথকীকরণ (ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন) ইউনিট চালুর দাবি উঠেছিল অনেক আগেই। মহকুমা হাসপাতাল থেকে জেলা হাসপাতালে উন্নীত হওয়ার পরে তা আরও জোরালো হয়। অবশেষে স্বাস্থ্য দফতর এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়। ইতিমধ্যে ৪১ লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো ব্লাড ব্যাঙ্কের দোতলায় প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই ইউনিটের ভবন তৈরি হচ্ছে। ১৭ লক্ষ টাকায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা হচ্ছে। ভবণ নির্মাণের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। তিনি বলেন, ‘‘বাংলা নববর্ষের আগেই এই ইউনিট চালু করার লক্ষ্য রয়েছে। জেলা হাসপাতালের সাফল্যে এই উদ্যোগ নতুন পালক যোগ করেছে।’’
হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস জানান, এই ইউনিট চালু হলে এক জন দাতার রক্তই একাধিক গ্রহীতার কাজে ব্যবহার করা যাবে। লোহিত কণিকা, শ্বেত কনিকা বা প্লাজমা— যাঁর যা প্রয়োজন সেটাই দেওয়া যাবে। ফলে, রক্তের ঘটতি অনেকটা মেটানো সম্ভব হবে। সুপার বলেন, ‘‘জেলা হাসপাতাল তৈরির পরে আমরা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে এখানে এই ইউনিট চালুর আবেদন করেছিলাম। সরকার তাতে সাড়া দেওয়ায় আমরা খুশি।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, শিল্পাঞ্চলে বছরে কমবেশি ১৫ হাজার ইউনিট রক্তের দরকার হয়। সারা বছর শিবির করে এই চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না। কিন্তু রক্তের উপাদান পৃথকীকরণ ইউনিট চালু হয়ে গেলে এই চাহিদা অনেকটাই মিটবে।
স্বাস্থ্য দফতরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রক্তদানের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠনও। স্বেচ্ছাসেবী রক্তদান সংগঠনের বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য তপন সরকার জানান, রক্তের আকাল বেশি হয় গ্রীষ্মে। এই সময় বেশি শিবির আয়োজন করা সম্ভব হয় না। তা ছাড়া পরীক্ষা বা ভোটের সময়েও শিবির পরিচালনায় ভাটা পরে। তাই হাসপাতালে রক্তের পৃথকীকরণ ইউনিট চালুর সিদ্ধান্ত একটি বড় পদক্ষেপ। কম রক্তেই বেশি গ্রাহকের প্রয়োজন মিটবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy