এই কুমিরটিকে কেন্দ্র করেই ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। —নিজস্ব চিত্র।
কাটোয়ার পর এ বার কালনায় কুমির আতঙ্ক। জল ছেড়ে ডাঙায় ঘুরে বেড়াতে দেখা গেল আট থেকে ন’ফুট লম্বা একটি কুমিরকে। যার জেরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল কালনা শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ড সংলগ্ন পালপাড়া এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার রাত একটা নাগাদ পালপাড়া এলাকার ভাগীরথীর পার থেকে উঠে এসে স্থানীয় একটি বাড়ির পাশে ঠাঁই নেয় কুমিরটি। বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। গোটা রাত জেগে কুমিরটিকে পাহারা দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার সকাল ৮টার সময় কুমিরটিকে উদ্ধার করেন বন দফতরের কর্মীরা।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, সোমবার রাত ১টা নাগাদ ভাগীরথীর পার সংলগ্ন এলাকায় পূর্ণবয়স্ক ওই কুমিরটি স্থানীয়দের নজরে আসে। এর পরেই কুমিরটি ধীরে ধীরে ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ঢুকে পড়ে। যার ফলে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার রাতেই কালনা থানা, দমকল বিভাগ এবং বনদফতরকে খবর দেওয়া হয়।
এই প্রসঙ্গে, স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘সারা রাত ভয়ে জেগে আছি। আগে কখনও এ ভাবে আস্ত কুমিরকে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখিনি। একদম বাড়ির সামনে দেখলাম।’’ স্থানীয় বাসিন্দা সুভাষ মণ্ডল বলেন, ‘‘সারা রাত জেগে পাহারা দিয়েছি আমরা। চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।’’
প্রসঙ্গত, গত মাসেও কুমিরের মতো দেখতে একটি প্রাণীকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে কাটোয়ায়। নদীতে কুমির ঘুরছে, এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই নদী তীরবর্তী এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। কুমির দেখার জন্য নদীর ঘাটে ভিড় জমান স্থানীয় লোকজন। কাটোয়ার ১০ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় কাশীগঞ্জ ঘাটের কাছে ওই প্রাণীটিকে দেখা গিয়েছিল। কুমিরের খবর পেয়ে কাটোয়া থানার পুলিশ এবং বন দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। কাটোয়ার বন দফতরের কর্মীরা জানান, এটি কুমির নয়। ঘড়িয়াল।
এর পর আবার সোমবার কালনায় কুমির-আতঙ্ক ছড়াল। তবে এ ক্ষেত্রে প্রাণীটি ঘড়িয়াল নয়, আস্ত একটি কুমির। অন্য দিকে, ভাগীরথী থেকে কুমির উঠে আসাকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই জায়গায় মিষ্টি জলের কুমির বিরল। সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় না। তাই এই কুমিরটি কী ভাবে ওই জায়গায় এল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পূর্ব বর্ধমান জেলা বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন, ‘‘একটি পূর্ণবয়স্ক কুমির কালনার জনবসতিপূর্ণ এলাকায় মধ্যে ঢুকে পড়ে। সকালে কাটোয়া রেঞ্জের বনকর্মীরা কুমীরটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তাকে নদীতেই ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে কী কারণে জল ছেড়ে জনবসতির মধ্যে ঢুকে গেল, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। নদীতে জল বাড়ার জন্যও হতে পারে। কিংবা খাবার খুঁজতে আসার কারণেও সেটি নদী থেকে উঠে লোকালয়ে চলে আসতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy