Advertisement
E-Paper

বাড়িতে ফাটল, তাতেই দিন গুজরান

১৯৯৭ সালে প্রথমবার সাঁকতোড়িয়া, ডিসেরগড়, শিশুবাগান এলাকাকে ধসপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করে ইসিএল ও ডিরেক্টর জেনারেল মাইনস সেফটি।

সুশান্ত বণিক

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৫০
ফাটল: এমন বাড়িতেই বসবাস। নিজস্ব চিত্র

ফাটল: এমন বাড়িতেই বসবাস। নিজস্ব চিত্র

সন্ধ্যা সাতটা। বাড়ির উঠোনেই ছোট ভাইয়ের সঙ্গে খেলছিলেন বছর কুড়ির হিনা পারভিন। আচমকা ঝুপ করে মাটিতে গর্ত, আগুন। তলিয়ে গেলেন হিনা। ঘটনাস্থল, ডিসেরগড়ের শিশুবাগান।— এই ঘটনার পরে প্রায় সাড়ে চার বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু ‘ধসে’র আতঙ্ক এখনও পিছু ছা়ড়েনি, দাবি এলাকাবাসীর। তাঁরা জানান, এ পর্যন্ত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না হওয়ায় ভিটেমাটি ছেড়ে উঠে যাওয়াও সম্ভব হয়নি।

এই এলাকায় ধসের আতঙ্ক অবশ্য নতুন নয় বলে দাবি বাসিন্দাদের। ১৯৯৭ সালে প্রথমবার সাঁকতোড়িয়া, ডিসেরগড়, শিশুবাগান এলাকাকে ধসপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করে ইসিএল ও ডিরেক্টর জেনারেল মাইনস সেফটি। সেই থেকেই ধস প্রতিরোধে উপযুক্ত ব্যবস্থা ও পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে আসছেন বাসিন্দারা। দাবি আদায়ের জন্য তৈরি হয়েছে ‘সাঁকতোড়িয়া ভিলেজ কমিটি’ও। এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরাতে ১৯৯৯ সালে পুনর্বাসন সংক্রান্ত একটি ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরি হয়। কিন্তু কাজ শুরু না হওয়ায় পরবর্তী কালে ২০০৩ ও ২০০৬ সালে পরপর দু’বার সেই মাস্টার প্ল্যান পরিমার্জিত হয়। কিন্তু তার পরেও দাবিদাওয়া, আন্দোলন, সবই হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ।

এই পরিস্থিতিতে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বিপজ্জনক ঘরেই চলছে বসবাস। বাড়ির ফাটা দেওয়াল আর ঘরের মেঝের দিকে তাকিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ মুক্তার বলেন, ‘‘প্রশাসনের কর্তারা বলেছিলেন, সরকারি ঘর মিলবে। কিন্তু তা আর হয়নি।’’ স্থানীয় বাসিন্দা হরপ্রিয়া কর্মকারও জানান, ২০০৪ সালের নভেম্বর মাসের রাতে বাড়ির মেঝে ফেটে যায়। এলাকাতেও ধস নামে। শতাধিক বাড়িতে বড় ফাটল তৈরি হয়। ধসের আতঙ্কে বাড়িঘর ফেলে রেখে অনকেই চম্পট দিয়েছিলেন। পরে কোথাও ঠাঁই না পেয়ে ফাটা দেওয়াল আর মেঝে সংস্কার করে পুরনো বাড়িতেই চলছে বসবাস

সাঁকতোড়িয়া ভিলেজ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিমান মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘মহকুমা প্রশাসন গ্রামের ধসকবলিত বাসিন্দাদের চিহ্নিত করে পরিচয়পত্র দেয়। কিন্তু পুনর্বাসন প্রক্রিয়া এক চুলও এগোয়নি’’। কমিটির আক্ষেপ, গত দশ বছরে আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি।

জেলা প্রশাসন জানায়, রানিগঞ্জ, আসানসোলের ধস কবলিত এলাকার ধস প্রতিরোধ ও পুনর্বাসনের জন্য কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রক ২৬২৯ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে। রাজ্য সরকারের আবাসন দফতরও ধস কবলিতদের জন্য প্রায় ৪৫ হাজার বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জামুড়িয়ায় বাড়ি তৈরির প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে। দ্রুত সে কাজ শেষ হবে। তবে বাসিন্দাদের দাবি, নতুন ঠাঁই না পাওয়া পর্যন্ত এ সব দাবিদাওয়া, আশ্বাসে আর বিশ্বাস নেই।

wall Crack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy