ফাইল চিত্র।
করোনা-পরিস্থিতিতে চলতি অর্থবর্ষে (২০২০-২১) রাজস্ব আদায় প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। বহু চেষ্টা করেও রাজস্ব আদায় বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। এমনটাই দাবি করেছে আসানসোল পুরসভা। এই পরিস্থিতিতে পুরসভার দৈনন্দিন খরচ সামলে উন্নয়নের কাজ অব্যাহত রাখাটাই চিন্তার বলে জানাচ্ছেন পুর-কর্তারা।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অর্থবর্ষে এ পর্যন্ত প্রায় ন’কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত অর্থবর্ষে প্রায় ৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি এমনই যে, আগামী চার মাসে গত বারের সমান রাজস্ব আদায় কোনও ভাবেই সম্ভব নয় বলে মনে করছেন পুর-কর্তারা। পুরসভার সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার সুকোমল মণ্ডল বলেন, ‘‘গতবারের চেয়ে এ বার রাজস্ব আদায় অনেকটাই কম। তবে তা বাড়ানোর জন্য সবরকমচেষ্টা চলছে।’’
কিন্তু রাজস্ব আদায়ের এই হাল কেন? সুকোমলবাবুর দাবি, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, করোনা-পরিস্থিতির জন্য জেলায় ব্যবসার হাল খারাপ হয়ে যায়। চাকরিজীবীদের বেতনে কোপ পড়ে। শিল্প ক্ষেত্রেও ব্যাপক প্রভাব পড়ে। তা ছাড়া, মার্চ থেকে অগস্ট পর্যন্ত পুর-কর্মীরা রাজস্ব আদায়ের কাজ করতে পারেননি। আনলক-পর্বেও অর্থনীতি তেমন চাঙ্গা হয়নি। কাজেও গতি আসেনি। তবে ধীরে-ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। গত বারের মতো না হলেও আগামী চার মাসে রাজস্ব আদায় বেশ কিছুটা বাড়বে বলেই মনে করছেন পুর-কর্তাদের একাংশ।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ছ’মাসের জন্য একটি অর্ধবার্ষিকী উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তাতে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে সাফাই, নিকাশি, পথবাতি, নিরবিচ্ছিন্ন পানীয় জল সরবরাহের মতো বিষয়গুলিকে। পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য সম্প্রতি পুর কমিশনার খুরশিদ আলি কাদরির উপস্থিতিতে বৈঠকও হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত বিভাগের প্রধানদের আগামী ছ’মাসের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ঠিক করে দ্রুত জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উৎসবের মরসুমে অতি প্রয়োজনীয় কাজগুলি করা হচ্ছে। এর পরে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে উন্নয়নমূলক কাজেহাত পড়বে।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে সব কিছুই প্রভাবিত হয়েছে, এটা সত্যি। তবে পুরসভা উন্নয়নের কাজ থেকে রাজস্ব আদায়, সব ক্ষেত্রেই যে ব্যর্থ, তা ফের প্রমাণ হল।’’ সিপিএম নেতা তথা বিদায়ী কাউন্সিলর তাপস কবি বলেন, ‘‘রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে আরও উদ্যম দরকার। উন্নয়নের কাজ এমনিতেই ঠিক ভাবে হয় না। এখন রাজস্বের কথা বলে, সেই কাজে গা করতে চাইছে না পুরসভা।’’ যদিও পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারির দাবি, ‘‘অর্থের অভাবে উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ হয়নি। আসানাসোল পুর-এলাকায় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকায় একের পরে এক উন্নয়নের কাজ হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy