এলাকায় বাড়ি ভাড়া করে ঘাঁটি গেঁড়েছিলেন কুখ্যাত ‘জামতাড়া গ্যাং’-এর তিন সদস্য! কিন্তু টেরই পাননি স্থানীয়েরা। এমনকি বর্ধমান পুলিশও ঘুণাক্ষরে জানতে পারেনি এই ডেরার কথা। শুক্রবার সকালে দিল্লি পুলিশের জালে ধরা পড়তেই শোরগোল পড়ে যায় বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জে!
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার আলমগঞ্জের একটি ভাড়াবাড়ি থেকে রবি মণ্ডল, রমেশকুমার মণ্ডল ও মহেন্দ্রকুমার মণ্ডল নামে তিন যুবককে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের সাইবার শাখা। তিন জনেরই বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। রবির বাড়ি জামতাড়ায়। রমেশ এবং মহেশের বাড়ি যথাক্রমে ঝাড়খণ্ডের দেওঘর এবং গিরিডিতে। তিন জনই ‘জামতাড়া গ্যাং’-এর সঙ্গে যুক্ত বলেই জানা গিয়েছে।
শুক্রবার রাতে ধৃতদের বর্ধমান সিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়। দিল্লি পুলিশ আদালতে জানিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরেই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত তিন জনই। বর্ধমানে ঘাঁটি করে প্রতারণা চালাতেন। তবে এখনও পর্যন্ত প্রতারণা করে যে টাকা তাঁরা আত্মসাৎ করেছেন, তার হদিস মেলেনি। সেই টাকা উদ্ধার করতে এবং চক্রের অন্যদের খুঁজে বার করতে ধৃতদের দিল্লি নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে আদালতে জানায় পুলিশ। ট্রানজিট রিমাণ্ডের আবেদন মঞ্জুর করেন মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) বিনোদ কুমার মাহাতো। ধৃতদের দিল্লির পটিয়ালা আদালতের সিজিএমের কাছে ২৭ মে-র মধ্যে পেশ করার জন্য তদন্তকারী অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন বর্ধমান আদালতের সিজেএম। এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও ই-মেল করে ২৮ মে-র মধ্যে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লির সেক্টর আরকে পুরম এলাকার বাসিন্দা লক্ষ্মণ আগরওয়ালের কাছে গত ১২ মে একটি মেসেজ আসে। দিল্লির জল বোর্ড থেকে মেসেজটি পাঠানো হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। জলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া আটকাতে তাঁকে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়। লক্ষ্মণ তা করেন। এর পরেই তাঁর কাছ থেকে ব্যাঙ্কের বিভিন্ন তথ্য জানতে চাওয়া হয়। তিনি তা দিয়ে দেন। এর ফলেই ওই ব্যক্তি ৩৮ হাজার ১৬১ টাকা খোয়ান।
খোঁজখবর নিয়ে লক্ষ্মণ জানতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। জল বোর্ডের কর্মীর পরিচয় দিয়ে তাঁকে ঠকানো হয়েছে। তার পরেই তিনি সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। সেই সূত্র ধরেই তদন্তে নেমে শুক্রবার তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।