Advertisement
E-Paper

সহায়ক মূল্যে কিনতে হবে সরু ধানও, দাবি প্রধানদের

শুধু লাল স্বর্ণ প্রজাতির মোটা ধান নয়, সহায়ক মূল্যে সদ্য বোরো মরসুমে ওঠা সরু ধান কেনারও দাবি তুললেন কালনার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতের প্রধানেরা। মঙ্গলবার দুপুরে কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতিতে ধান কেনা নিয়ে বৈঠকে মহকুমা খাদ্য নিয়ামকের কাছে ওই দাবি জানান তাঁরা। বৈঠকে ধান বিক্রির নিয়মেও কিছু বদল আনা হয়। ঠিক হয়, চাষিরা নন পঞ্চায়েতের কোনও এক প্রতিনিধিই সমস্ত দফতরে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৫ ০০:৫৫

শুধু লাল স্বর্ণ প্রজাতির মোটা ধান নয়, সহায়ক মূল্যে সদ্য বোরো মরসুমে ওঠা সরু ধান কেনারও দাবি তুললেন কালনার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতের প্রধানেরা। মঙ্গলবার দুপুরে কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতিতে ধান কেনা নিয়ে বৈঠকে মহকুমা খাদ্য নিয়ামকের কাছে ওই দাবি জানান তাঁরা। বৈঠকে ধান বিক্রির নিয়মেও কিছু বদল আনা হয়। ঠিক হয়, চাষিরা নন পঞ্চায়েতের কোনও এক প্রতিনিধিই সমস্ত দফতরে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করবেন।

পঞ্চায়েত প্রধানদের দাবি, একে তো প্রয়োজনের তুলনায় সরকার অত্যন্ত কম ধান কিনছে। তার উপর লাল স্বর্ণ প্রজাতির মোটা ধান ছাড়া অন্য কোনও ধান কেনা হচ্ছে না। ফলে দাম না পেয়ে মুশকিলে পড়েছেন চাষিরা। তাঁরা জানান, বোরো মরসুমে চাষিরা বেশির ভাগই ৩৬, ৬৪, রত্না ইত্যাদি সরু ধান চাষ করেন। সদ্য ওঠা এই ধানের দামও কম, বস্তা পিছু ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা। তার মধ্যে ধানের গুণগত মান একটু নামলেই ফড়েরা বস্তা পিছু আরও একশো টাকা দর কমিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু উপায় না থাকায় জলের দরেই চাষিদের ধান বেচতে হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি।

বৈঠকে এক চালকলের প্রতিনিধি আবার জানান, সাধারণত এক কুইন্ট্যাল লাল স্বর্ণ প্রজাতির ধান থেকে ৬৮ কেজি চাল মেলে। আর্দ্রতার কারণে বস্তা পিছু আরও আড়াই কেজি অতিরিক্ত ধান নেওয়া হয়। সেখানে নতুন সরু ধানে কুইন্ট্যাল প্রতি চাল মিলবে ৬২ থেকে ৬৩ কেজি। ওই চালকল প্রতিনিধির প্রশ্ন, সহায়ক মূল্যে সরু ধান কেনা হলে চালকল কর্তৃপক্ষ এই বাড়তি চাল কিভাবে পাবেন? প্রধানেরা জানান, ধান বিক্রির সময় চাষিরা যে অতিরিক্ত ধান চালকলগুলিকে দেয় তার পরিমাণ বাড়ানো হবে। সুলতানপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সুকুর শেখ বলেন, ‘‘আমরা বলেছি সরু ধান নেওয়া হলে চাষিরা আরও অতিরিক্ত আড়াই কেজি ধান দেবে।’’ কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্যামল দাঁ জানান, লাল স্বর্ণ ধান কয়েক মাস আগে মাঠ থেকে ওঠায় বেশির ভাগ গরীব চাষির হাতে এই ধান নেই। যেটুকু পরে রয়েছে তা সম্ভ্রান্ত চাষিদের হাতে। ফলে গরীব চাষিরা ইচ্ছা থাকলেও সহায়ক মূল্যে সদ্য ওঠা সরু ধান বিক্রি করতে পারছেন না। সরকারি ভাবে সরু ধান কেনা হলে বেশী উপকৃত হবে ছোট চাষিরাই। কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ বলেন, ‘‘ধান কেনা নিয়ে বুধবার জেলা পরিষদে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। হাজির থাকবেন মহকুমা খাদ্য নিয়ামক। পঞ্চায়েত প্রধানদের সরু ধান কেনার বিষয়টি উনিই বৈঠকে তুলবেন।’’ পরে জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডুও বলেন, ‘‘বৈঠকে আমি থাকব। প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।’’

সম্প্রতি কালনার বেগপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শিউলি মল্লিক কিসান মান্ডিতে ধান কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ করেন। প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে নড়ে বসে। বৈঠক করে সিদ্ধান্ত হয়, পঞ্চায়েত কিসান মান্ডিতে চাষিদের নামের তালিকা পাঠাবে। সেখানে পঞ্চায়েতের প্রতিনিধির হাতে ধান কেনার টোকেন তুলে দেবেন মান্ডিতে থাকা পারচেজিং অফিসার। কোন দিন কত বস্তা ধান বিক্রি করা যাবে তাও ঠিক হয়। পরে বিষয়টিতে কিছু পরিবর্তন আনেন বিডিও। নতুন নির্দেশে জানানো হয়, পঞ্চায়েত ৯ জন করে চাষিদের একটি তালিকা পাঠাবে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির কাছে। তালিকা দেখে সভাপতি তা পাঠাবেন খাদ্য দফতরের আধিকারিকের কাছে। তিনি চাষিদের টোকেন দেবেন। পরে চাষিরা টোকেন চালকলে দেখিয়ে বস্তা নিয়ে কিসান মান্ডিতে ধান নিয়ে যাবেন। গ্রাম প্রধানদের দাবি, এই নিয়মে চাষিদের চার পাঁচ বার বিভিন্ন দফতরে ঘুরতে হচ্ছে। নিয়ম বদলেরও দাবি তোলেন তাঁরা।

অভিযোগ পেয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রাবণী পাল এ দিন একটি বৈঠক ডাকেন। সেখানে এলাকার ৯টি পঞ্চায়েতের প্রধান-উপপ্রধানদের পাশাপাশি আমন্ত্রন জানানো হয় কালনার মহকুমাশাসক, মহকুমা খাদ্য নিয়ামক-সহ পঞ্চায়েত সমিতির কিছু কর্মাধ্যক্ষকে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, পঞ্চায়েত প্রধানেরা যে তালিকা পাঠাবেন তা দেখে দ্রুত পঞ্চায়েত সমিতি খাদ্য দফতরের আধিকারিকের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। সেখান থেকে টোকেন দেওয়া হবে চাষিদের নামে। পঞ্চায়েতের একজন প্রতিনিধি বিভিন্ন দফতরে গিয়ে যাবতীয় কাজ করবেন। কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্রাবণী পাল বলেন, ‘‘এক মাত্র কিসান মান্ডিতে ধান বিক্রির সময় যাবতীয় প্রমাণপত্র নিয়ে চাষিদের হাজির থাকতে হবে। বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে চাষিরা চেক নিয়ে বাড়ি ফিরবেন।’’

paddy Kalna rice Gram panchayat rice mill Trinamool
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy