Advertisement
০২ মে ২০২৪
Burdwan University

ইসি বৈঠক না হওয়ায় অচলাবস্থা বহু কাজে

চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতকস্তরের চার বছরের কোর্স চালু হবে। এখনও বিশ্ববিদ্যালয় আইন তৈরি করতে পারেনি। তবে কমিটি গঠন করে সেই প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৩০
Share: Save:

অচলাবস্থা কাটাতে রাজ্যের পরামর্শ নিয়ে এগজ়িকিউটিভ কমিটি বা ইসি বৈঠক করার কথা ভেবেছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চিঠির খসড়াও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনকে ঘিরে নতুন করে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তারপরে রাজ্যের কাছে পরামর্শ চেয়ে চিঠি পাঠানো আপাতত হচ্ছে না বলেই ঠিক হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসি-র এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের দাবি, “যাদবপুরের ঘটনার পরে ইসি বৈঠক করা আরও জটিলতর হয়ে গেল। রাজ্যকে এড়িয়ে ইসি করা কঠিন আবার রাজ্যের পরামর্শ নিয়ে ইসি করলে আচার্যের কোপে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।” যদি‌ও বিষয়টি নিয়ে উপাচার্য গৌতম চন্দ্র, রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরীরা কোনও কথা বলতে রাজি হননি।

গত ১৮ নভেম্বর উচ্চ শিক্ষা পর্ষদের চিঠি পাওয়ার পরে ইসি বৈঠক বাতিল করে দেন অন্তবর্তী উপাচার্য। ডিসেম্বরেও ইসি বৈঠক ডাকা হয়নি। ফলে, সমস্যা মেটা তো দূর, আরও বেশি করে তাতে জড়িয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। ইঞ্জিনিয়ার বিভাগ থেকে পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের নানা সিদ্ধান্ত আটকে রয়েছে। ফিনান্স কমিটি, পারচেজ় কমিটির সিদ্ধান্তও ইসিতে অনুমোদন না হওয়ায় আটকে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি হস্টেলের নিরাপত্তা, সুরক্ষা ও সংস্কারের জন্য পাঁচ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। সেই টাকার অনুমোদনও আটকে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসেই সামনের বছরের বাজেট তৈরি হয়ে যেত। তা অনুমোদনের জন্য উচ্চশিক্ষা দফতর ও আচার্যকে পাঠানোও হয়ে যেত। কিন্তু এ বার ইসি বৈঠক হবে না বলে ফিনান্স কমিটি বাজেটও করেনি।”

চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতকস্তরের চার বছরের কোর্স চালু হবে। এখনও বিশ্ববিদ্যালয় আইন তৈরি করতে পারেনি। তবে কমিটি গঠন করে সেই প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। ইসি বৈঠক না হলে আইন নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন না কমিটির সদস্যেরা। ইসির ওই সদস্য বলেন, “আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসি বৈঠকে পাশ করাতে হবে। তারপরে তা বিধানসভা ও আচার্যের অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হবে। অনুমোদন না এলে আইন হবে না। আর আইন না হলে চার বছরের পাঠক্রমও অনুমোদন হবে না।” ফেব্রুয়ারি-মার্চেই চার বছরের পাঠক্রমের প্রথম সিমেস্টার শুরু হবে। ইসি বৈঠক আটকে থাকায় পরীক্ষাবিধিও অনুমোদন হয়নি। ফলে প্রথম সিমেস্টারের পড়ুয়াদের রেজিস্ট্রেশনও আটকে রয়েছে। পরীক্ষা নিয়ামক দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, “পড়ুয়াদের রেজিস্ট্রেশন না হলে পরীক্ষা ব্যবস্থাটাই আটকে যাবে। কী হবে, বোঝা যাচ্ছে না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য-প্রযুক্তির কাজে সহায়তা করা একটি আন্তর্জাতিক মানের সংস্থা গত ১৪ ডিসেম্বর প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার বকেয়া বিল দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষকে। দ্রুত টাকা না দিলে পরীক্ষা নিয়ামক দফতর-সহ অন্য বিভাগের কাজ করা হবে না বলেও জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে টাকা থাকলেও ইসি বৈঠক না হলে সেই টাকা ছাড়তে পারবেন না উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, অসম্পূর্ণ কাজের বিল চাওয়া হয়েছে। সব কাজও ঠিকমতো করেনি ওই সংস্থা, তার পরেও টাকা চায়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এক কর্তার কথায়, “ইসিতে আলোচনা না হলে সংস্থার দাবি ও সমস্যা নিয়ে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে না।” বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ভবন-সহ একাধিক কাজের টাকাও পড়ে রয়েছে। ফলে থমকে উন্নয়নের কাজও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE