Advertisement
০৬ মে ২০২৪

শিল্পাঞ্চলে নজরে নার্সিংহোমের অনিয়ম

বর্ধমানের পরে এ বার লক্ষ্য জেলার শিল্পাঞ্চল। অভিযোগ, বহু নার্সিংহোম, রোগ নির্ণয়কেন্দ্র চলছে কোনও নিয়ম না মেনেই। আর এই অনিয়ম রুখতেই এ বার আচমকা পরিদর্শন ও নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। অনিয়ম নজরে এলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে প্রশাসনের সূত্রে খবর।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৩৬
Share: Save:

বর্ধমানের পরে এ বার লক্ষ্য জেলার শিল্পাঞ্চল। অভিযোগ, বহু নার্সিংহোম, রোগ নির্ণয়কেন্দ্র চলছে কোনও নিয়ম না মেনেই। আর এই অনিয়ম রুখতেই এ বার আচমকা পরিদর্শন ও নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন। অনিয়ম নজরে এলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হবে বলে প্রশাসনের সূত্রে খবর।

গত মঙ্গলবারই বর্ধমান শহরের নার্সিংহোমগুলিতে অভি‌যান চালায় জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের যৌথ দল। সিল করে দেওয়া হয় দু’টি নার্সিংহোম। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আসানসোল-দুর্গাপুরের নার্সিংহোম মালিকেরা পুরসভার কাছ থেকে বাণিজ্যিক ছাড়পত্র নিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দমকল ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশিত নিয়মগুলি মানা হয় না। তা ছাড়া পর্যাপ্ত সংখ্যায় শৌচাগারও নেই ওই প্রতিষ্ঠানগুলিতে। ১০টি শয্যা পিছু এক জন সর্বক্ষণের চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মী থাকার নিয়মও মানা হচ্ছে না বলে খবর। নার্সিংহোমগুলিতে অনুমোদিত শয্যা সংখ্যার থেকে বেশি রোগী ভর্তি করানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ।

যদিও এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পরে পরিকাঠামো নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা সন্তুষ্ট হওয়ার পরেই নার্সিংহোম ও রোগ নির্ণয়কেন্দ্র খোলার অনুমতি মেলে। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের পাল্টা দাবি, এই মুহূর্তে আসানসোল-দুর্গাপুরে প্রায় দু’শোটি নার্সিংহোম রয়েছে। কিন্তু সেগুলির একটা বড় অংশ অনুমোদন পাওয়ার পরে ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিসমেন্ট আইনে উল্লিখিত নির্দেশিকা মানছে না। বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, ‘‘আসানসোল-দুর্গাপুরে নার্সিংহোম ও রোগ নির্ণয় কেন্দ্রগুলির বিরুদ্ধে অনিয়মের পাহাড় জমেছে। সেগুলি তদন্ত করে দেখা হবে।’’ জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘অনিয়ম রুখতে আসানসোল-দুর্গাপুরের নার্সিংহোমগুলিতে আচমকা হানা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

প্রশাসনের কর্তাদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্পাঞ্চলের চিকিৎসক মহল। চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘রোগীদের স্বার্থেই এমন পদক্ষেপ করা দরকার।’’ তাঁর দাবি, ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা রোগনির্ণয় কেন্দ্রগুলিতে ঠিক মতো পরীক্ষাও হয় না। চিকিৎসকদের একটা বড় অংশের দাবি, নার্সিংহোমগুলির অনিয়ম প্রসঙ্গে মালিকদের সতর্ক করা হলেও তা শোনা হয় না। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের আসানসোল শাখার সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, ‘‘প্রশাসনের এই উদ্যোগ ভাল। তবে নিয়মিত নজড়দারি চালাতে হবে।’’ তৃণমূল অনুমোদিত প্রোগ্রেসিভ ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের আসানসোল শাখার সভাপতি নেতা প্রসূন রায় বলেন, ‘‘প্রশাসনের কর্তারা ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’ বাম সমর্থিত হেলথ সার্ভিশেস ডক্টরস অ্যাসোশিয়েসনের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সদস্য ইন্দ্রজিৎ মহন্তরেও দাবি, ‘‘এটা প্রশাসনের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। তবে মাঝে মাঝে বন্ধ হয়ে যায় বলে নার্সিংহোমের কর্তারা বেনিয়মের পাহাড় জমিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

District administration industrial area
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE