E-Paper

যত্রতত্র হাম্পে বাড়ছে বিপদ 

ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের কাঁকসার বাঁশকোপা থেকে ডানকুনি পর্যন্ত অংশে সম্প্রসারণের কাজ চলছে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:১০
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে আর এসটিকেকে রোডে দুর্ঘটনা কেন কমানো যাচ্ছে না, সে নিয়ে জেলা পথ-নিরাপত্তা বৈঠকে প্রশ্ন উঠেছিল। জেলাশাসক আয়েষা রানি এ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার বাড়তে থাকায় বৈঠকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পুলিশকে তো বটেই, পূর্ত দফতর-সহ জেলা প্রশাসনের অন্য আধিকারিকদেরও দুর্ঘটনা রুখতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন তিনি। তার পরেও দুর্ঘটনার কিন্তু কমতি নেই জেলায়।

ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের কাঁকসার বাঁশকোপা থেকে ডানকুনি পর্যন্ত অংশে সম্প্রসারণের কাজ চলছে। ওই জাতীয় সড়কের ৭২ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। সম্প্রসারণের কাজ চলায় অনেক জায়গাতেই রাস্তা সরু হয়ে গিয়েছে। কোথাও মূল রাস্তা ছেড়ে সার্ভিস রোড দিয়ে যান চলাচল করছে। বেশ কিছু জায়গায় আলোর অভাব রয়েছে। তার উপরে বেপরোয়া যান চলাচলে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে।

সপ্তগ্রাম-ত্রিবেণী-কালনা-কাটোয়া রোড বা এসটিকেকে রোডেও বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে মনে করছে পুলিশ। বিশেষ করে ওই রাস্তায় মোটরবাইক দুর্ঘটনার হার অত্যন্ত বেশি। এ ছাড়া, বর্ধমান-আরামবাগ রোডেও দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ট্র্যাফিক-পুলিশের দাবি, ওই রাস্তা তুলনামূলক ভাবে সরু। কিন্তু ট্রাকের চাপ অত্যন্ত বেশি। বর্ধমানের তেলিপুকুর, বাঁকুড়া মোড়ে প্রতিদিন বিভিন্ন সময়ে যানজট হয়। তা এড়াতে গিয়েও দুর্ঘটনায় পড়ে বিভিন্ন গাড়ি ও বাইক। পূর্ত দফতরের দাবি, বর্ধমান-কাটোয়া, বর্ধমান-নতুনহাট (বাদশাহী রোড) বর্ধমান-কালনা, বর্ধমান-আরামবাগ রোড-সহ বিভিন্ন রাস্তায় রয়েছে অজস্র ‘হাম্প’। গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করা ওই সব রাস্তায় যাত্রী কিংবা চালকের কাছে বিভীষিকা-সম। বাদশাহী রোডের নিত্যযাত্রীরা জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে জানিয়েছেন, নর্জা মোড় থেকে নতুনহাট ১৯ কিলোমিটার রাস্তায় ৫৭টি হাম্প রয়েছে। বর্ধমান-কাটোয়া রোডেও গড়ে ৭৫০ মিটারে একটি করে ‘হাম্প’ রয়েছে। বর্ধমান-কালনা রোডে সাতগেছিয়ার কাছে অসংখ্য ‘হাম্প’। আবার মন্তেশ্বর থেকে দাঁইহাট যাওয়ার পথে নতুন করে গজিয়ে উঠেছে ‘হাম্প’।

যাত্রীদের একাংশের দাবি, দুর্ঘটনা আটকানোর জন্যে স্থানীয়দের দাবি মেনে অবৈজ্ঞানিক ভাবে ‘হাম্প’ তৈরি হওয়ায় বিপদ বাড়ডছে। তাঁদের দাবি, ‘হাম্প’-এর জন্য অন্ধকার রাস্তায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন চালকেরা। গাড়ির গতি কমছে। যানজট হচ্ছে।

‘হাম্প’ যে পথ-সুরক্ষার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা, তা মেনে নেওয়া হয়েছে জেলার পথ-সুরক্ষা বৈঠকে। জেলাশাসক বৈঠকে নির্দেশ দেন, জেলা জুড়ে ‘হাম্প’ বা ‘বাম্পার’ নিয়ে সবিস্তারে অডিট করতে হবে। তিনি পূর্ত দফতর, স্থানীয় পুলিশ ও বিডিও-দের দায়িত্ব দিয়েছেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, অপ্রয়োজনীয় হাম্প বা বাম্পার ভেঙে ফেলতে হবে। যে সব জায়গায় প্রয়োজন, সেখানে নিচু হাম্প থাকবে। নতুন করে কোথাও ‘হাম্প’ তৈরির দাবি এলে তা নিয়ে পথ-সুরক্ষা বৈঠকে আলোচনা করতে হবে। (চলবে)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman Road Accident

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy