Advertisement
E-Paper

রাস্তায় আলো নেই, মেলে না জলও

বেশ কিছুটা একফসলি জমি। আর অনেকটা ডাঙা এলাকা। জমির একাংশে মোরাম পাওয়া যেত। তা তুলে নিয়ে যেতেন এলাকার মানুষ। বিস্তীর্ণ সেই এলাকায় এক দশক আগে গড়া হয়েছিল শিল্পতালুক। একে একে ১২টি স্পঞ্জ আয়রন কারখানাও চালু হয়েছিল। শিল্পাঞ্চলের অন্য নানা শিল্পতালুকের মতো জামুড়িয়ার ইকড়াতেও ভাঙা রাস্তা, জলের সমস্যা নিয়েই চলছে কারখানাগুলি।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৫ ০০:৫৪
চাকদোলা যাওয়ার রাস্তা। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

চাকদোলা যাওয়ার রাস্তা। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

বেশ কিছুটা একফসলি জমি। আর অনেকটা ডাঙা এলাকা। জমির একাংশে মোরাম পাওয়া যেত। তা তুলে নিয়ে যেতেন এলাকার মানুষ। বিস্তীর্ণ সেই এলাকায় এক দশক আগে গড়া হয়েছিল শিল্পতালুক। একে একে ১২টি স্পঞ্জ আয়রন কারখানাও চালু হয়েছিল। শিল্পাঞ্চলের অন্য নানা শিল্পতালুকের মতো জামুড়িয়ার ইকড়াতেও ভাঙা রাস্তা, জলের সমস্যা নিয়েই চলছে কারখানাগুলি।

ইকড়ায় শিল্পতালুক চালুর পর থেকে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়নি বলে অভিযোগ কর্তাদের। রাস্তা খানাখন্দে ভরা। ভূগর্ভস্থ জলের উপরেই ভরসা করে থাকতে হয়। কয়েকটি সংস্থার নিজের বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়া ডিভিসি এবং ডিপিএসসি বিদ্যুতের জোগান দেয়। বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য সিঙ্গরন নদীর উপরেই কারখানা কর্তৃপক্ষগুলিকে নির্ভর করতে হয় বলে এলাকাবাসীর দাবি।

এই শিল্পতালুকে প্রথম গড়ে ওঠা স্পঞ্জ আয়রন কারখানাটির কর্ণধার অশোক সান্থালিয়া অভিযোগ করেন, সরকার কোনও প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। রাস্তা একবার তৈরি শুরু হয়েছিল। কিন্তু অর্ধেক নির্মাণের পরেই কাজ শেষ করে দেওয়া হয়। নানা কারখানায় যাতায়াত করতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় বলে অভিযোগ। শেখপুর থেকে হুরমাডাঙার রাস্তা কাঁচা। ইকরা স্টেশন মোড় থেকে কালীমন্দির এক বার জেলা পরিষদ পাকা রাস্তা তৈরি করেছিল। সেটি এখন ভেঙেচুরে গিয়েছে। ইকড়া মোড় থেকে চাকদোলা রাস্তা মাঝে-মাঝে ভাঙা। কোথাও রাস্তার দু’পাশে বাতি লাগানো হয়নি।

একটি বড় স্পঞ্জ আয়রন কারখানার কর্তা জানান, বছর চারেক আগে পুরসভার উদ্যোগে অজয়ের দরবারডাঙা ঘাট থেকে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রকল্প থেকে জল সরবরাহ শুরু হয়। প্রতি ঘনমিটারের জন্য ১৫ টাকা দিতে হয়। তাঁদের সংস্থার প্রতি দিন প্রয়োজন দু’হাজার ঘনমিটার। তা আনতে পাইপলাইন পাতা-সহ আনুষঙ্গিক খরচ হয়েছে এক কোটি টাকা। তাঁর অভিযোগ, “মাঝে-মাঝেই শোনা যায়, ডিভিসি জল ছাড়ছে না। পর্যাপ্ত জল মিলবে না। জলাধারের পাঁচটি পাম্পের দু’টি বেশির ভাগ সময়েই বিকল হয়ে পড়ে থাকে। তিন বছর আগে নদীর চর সরাতে আমাদের ব্যয়ভার বহন করতে হয়েছে। খনি এলাকা হওয়ায় সারা বছর ভূগর্ভস্থ জল মেলে না।” তাঁর দাবি, গত বার প্রতি বর্গফুটে ৫০ টাকা হিসেবে তাঁরা ২৫ লক্ষ টাকা উন্নয়ন কর দিয়েছেন। কিন্তু কোনও উন্নয়ন এখনও পর্যন্ত চোখে পড়েনি।

এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, কারখানাগুলি জলের সমস্যা মেটাচ্ছে বোরহোলের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল ও প্রয়োজনে নদীর জল ব্যবহার করেই। ২০০২ সালে শিল্পতালুক গড়ে ওঠার সময়ে জামুড়িয়ার পুরপ্রধান হিসেবে ধাপে-ধাপে পরিকাঠামো উন্নয়নের আশ্বাস দিয়েছিলেন তাপস কবি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা দু’লেনের বাইপাস তৈরির কাজ শুরু করেছিলাম। কিন্তু কয়েকটি জায়গায় জমি নিয়ে সমস্যায় সেই কাজ শেষ করা যায়নি। আমরা চাই, বর্তমান সরকার সেই কাজ করুক। তবে স্পঞ্জ আয়রন ছাড়াও অন্য শিল্প গড়ে উঠুক, সেটাই চাই।’’

জামুড়িয়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যশোসিয়েশেনের সভাপতি পবন মাউন্ডিয়া অবশ্য বলেন, ‘‘প্রথম দিকে রাস্তা নির্মাণ শুরু হয়ে মাঝ পথে থেমে গিয়েছিল। আবার নতুন করে রাস্তা, রাস্তার দু’পাশে আলো-সহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হবে শীঘ্রই। এডিডিএ কর্তৃপক্ষ এ কথা আমাদের জানিয়েছেন।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রেও জানা গিয়েছে, জামুড়িয়ার শিল্পতালুকের উন্নয়নের জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Jamuria Drinking water DPSC industrial area
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy