Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Durga Puja 2020

করোনা-কালে ডাক নেই মহিলা ঢাকিদের

কোশিগ্রামের মহিলা ঢাকি অনিতা দাস, কবিতা মাঝিরা বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে ঢাক বাজিয়ে আমাদের ভাল আয় হত। ছেলেমেয়েদের নতুন জামাকাপড় কিনে দিতাম। এ বার তো ঢাক বাজানো হবে বলে মনে হচ্ছে না। বাইরে গেলে আমরাও সংক্রমিত হতে পারি, সে আশঙ্কাও রয়েছে।’’

ডাক না পেলেও চলেছে প্রস্তুতি। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

ডাক না পেলেও চলেছে প্রস্তুতি। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রণব দেবনাথ
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২০ ০২:৪১
Share: Save:

পুজো উদ্যোক্তাদের হাত এ বার তুলনায় ফাঁকা। বড় বাজেটের পুজোগুলির জৌলুস কমানোর রাস্তায় হেঁটেছে। এই পরিস্থিতিতে বরাত না পেয়ে সমস্যায় কাটোয়ার মহিলা ঢাকির দলগুলি। সারা বছর সংসার সামলানোর পাশাপাশি, পুজোর সময়ে ঢাক বাজিয়ে তাঁদের বাড়তি রোজগার হয়। কিন্তু এ বার পুজোর সপ্তাহখানেক আগেও কোনও পাকা বরাত নেই ঝুলিতে, জানাচ্ছেন তাঁরা।

কাটোয়ার সুদপুর, কোশিগ্রাম ও বিজয়নগর গ্রামে বছর চারেক আগে মহিলা ঢাকির দল গড়ে ওঠে। একই রকম পোশাক পরে তাঁদের ঢাক বাজানো নজর কাড়ে অনেক পুজো উদ্যোক্তাদেরই। ওই মহিলারা জানান, দ্বিতীয় বছর থেকেই নানা জায়গা থেকে তাঁদের বরাত আসতে থাকে। চাহিদা বাড়তে থাকায় গত দু’বছরে গ্রামগুলিতে মহিলা ঢাকির সংখ্যাও বেড়েছে। এখন ১১ থেকে ১৬ জন করে সদস্য নিয়ে পাঁচটি দল রয়েছে। দলের সদস্যেরা জানান, যাওয়া-আসার খরচ বাদ দিয়ে মাথা পিছু ঘণ্টা চারেকে হাজার টাকা পারিশ্রমিকে মণ্ডপ ও শোভাযাত্রায় ঢাক বাজান তাঁরা।

কোশিগ্রামের একটি মহিলা ঢাকি দলের মালিক গোবিন্দ দাস বলেন, ‘‘ঢাক বাজানো আমাদের পূর্বপুরুষের পেশা। চার বছর আগে আমি মহিলাদের নিয়ে ১৩ জনের একটি দল করি। প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে সব জোগাড়যন্ত্র করতে। আগের বছরগুলিতে প্রচুর বরাত পেয়েছিলাম। ভালই লাভ হয়েছিল। কিন্তু এ বার কোনও বরাত আসেনি। আমাদের খুবই লোকসানে পড়তে হল।’’ সুদপুর গ্রামের মহিলা ঢাকি দলের প্রশিক্ষক ক্ষুদিরাম দাস বলেন, ‘‘কলকাতায় ঢাক বাজাতে গিয়ে মহিলাদের একটি দলকে দেখে গ্রামে মহিলা ঢাকির দল গড়ে তোলার ইচ্ছে হয়েছিল। সেইমতো তিনটি দল গড়েছি। গত দু’বছর এত বরাতের চাপ ছিল যে অনেক পুজো কমিটিকে ফিরিয়ে দিতে হয়েছিল। কিন্তু করোনার জন্য এ বার উল্টো ছবি।’’ তাঁরা জানান, এখনও পর্যন্ত আসানসোল থেকে দু’টি পুজো কমিটি যোগাযোগ করেছে দশমীর দিনে ঢাক বাজানোর জন্য। তবে পাকা বরাত দেওয়া হয়নি।

কোশিগ্রামের মহিলা ঢাকি অনিতা দাস, কবিতা মাঝিরা বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে ঢাক বাজিয়ে আমাদের ভাল আয় হত। ছেলেমেয়েদের নতুন জামাকাপড় কিনে দিতাম। এ বার তো ঢাক বাজানো হবে বলে মনে হচ্ছে না। বাইরে গেলে আমরাও সংক্রমিত হতে পারি, সে আশঙ্কাও রয়েছে।’’ সুদপুর গ্রামের লক্ষ্মী সর্দার, সোহাগি দাসদের কথায়, ‘‘প্রথম বছর রাজ্যের নানা প্রান্তে ঢাক বাজিয়ে সুনাম হয়েছিল। এ বার আরও ভাল করে তালিম নিয়েছিলাম। করোনা সব ওলটপালট করে দিল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2020 Katw
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE