Advertisement
০২ মে ২০২৪

রক্ষী কম থাকাতেই বারবার হামলা, দাবি

শ্রমিক সংগঠনগুলি অবশ্য সংস্থার রক্ষী-সংখ্যা কম হওয়ার জন্যই এমন ঘটনা বলে দায়ী করেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৩০
Share: Save:

কখনও খনিকর্মীদের হাতেই, কখনও বা বহিরাগতদের বিরুদ্ধে মারধর বা হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারী, প্রতি ক্ষেত্রেই ইসিএলের কর্তারা। এই ঘটনা কেন বারবার ঘটছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জেলার কয়লা-শিল্পাঞ্চলে। শ্রমিক সংগঠনগুলি অবশ্য সংস্থার রক্ষী-সংখ্যা কম হওয়ার জন্যই এমন ঘটনা বলে দায়ী করেছে।

ইসিএল সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছরে আধিকারিকদের ‘আক্রান্ত’ হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে বারবার। যেমন, ২০১৭-র ২৫ জুলাই নুনিয়া নদীর জল ঢুকে যাওয়ায় মৃত্যু হয় কোয়ারডি কোলিয়ারির এক খনিকর্মীর। গাফিলতির অভিযোগে ম্যানেজার ও সুরক্ষা আধিকারিককে মারধরের অভিযোগ ওঠে মৃতের সহকর্মীদের বিরুদ্ধে। ২০১৮-র ২৫ এপ্রিল কর্মী আবাসন অনুমোদন করা নিয়ে বিবাদের জেরে প্রহৃত হন কুলটির ধেমোমেন কোলিয়ারির পার্সোনেল ম্যানেজার। ‘মারধর’, ‘হেনস্থা’-র এই ‘ধারাবাহিকতা’ দেখা গিয়েছে নতুন বছরেও। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১ জানুয়ারি জামুড়িয়ার নর্থ সিহারসোল খোলামুখ খনিতে বিস্ফোরণের জেরে লাগোয়া তপসি গ্রামের বাড়িতে ফাটল ধরছে, এই অভিযোগে দু’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার-সহ দশ জন কর্মীকে মারধরের অভিযোগ ওঠে গ্রামবাসীর একাংশের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ৩ জানুয়ারি অণ্ডালের পরাশকোল ইস্ট কোলিয়ারিতে খনির পার্সোনেল ম্যানেজারকে মার ও এজেন্ট, ম্যানেজারকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে।

কিন্তু কেন এমন ঘটনা বারবার? এর জন্যও সংস্থার পরিকাঠামোকেই দায়ী করছে বিভিন্ন সংগঠনগুলি!

ন্যাশনাল মাইনস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সম্পাদক তরুণ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘সংস্থার নিজস্ব নিরাপত্তরক্ষী, সিআইএসএফ রয়েছে। কিন্তু প্রতিটি খনিতে নিরাপত্তারক্ষী অর্পযাপ্ত। সিআইএসএফ প্রায় নিষ্ক্রিয়। ফলে খনিকর্তা ও কর্মীদের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটছে।’’ সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরীর দাবি, ইসিএলের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাফিলতি রয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের আবার বক্তব্য, ‘‘অনেক ক্ষেত্রেই ইসিএলের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিশেষ রাজনৈতিক দলের উপরে নির্ভর করছেন। দলের কথামতো খনি চলছে। ফলে কোনও ঘটনায় ‘স্বার্থে’ আঘাত লাগলেই সংশ্লিষ্ট দল হামলা চালাচ্ছে।’’ যদিও ইসিএলের তরফে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগের কথা সম্পূর্ণ ভাবে অস্বীকার করা হয়েছে।

তবে পরিকাঠামোর অভাবের কথা স্বীকার করেননি ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়। তাঁর কথায়, ‘‘কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা যত বার ঘটেছে, তত বারই সংস্থা তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে। হামলা চালানোর অভিযোগ এক দশকে অন্তত ২০ জন কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’ তবে সেই সঙ্গে নীলাদ্রিবাবুর অভিযোগ, ‘‘বহিরাগতদের হামলা রোখার ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসন পদক্ষেপ করছে না। সংস্থার নিজস্ব রক্ষী সব খনিতেই থাকেন। কিন্তু এক সঙ্গে কয়েকশো লোক হামলা চালালে তা রোখা সম্ভব নয়।’’ তবে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘আমরা লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Eastern Coalfields limited ECL ইসিএল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE