প্রতীকী চিত্র।
সরকারি নির্দেশ অমান্য ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বর্ধমান ১ ব্লকের ৩২ জন শিক্ষককে শো-কজ় করল শিক্ষা দফতর। বুধবার বিকেলে ওই ব্লকের প্রাথমিক স্কুল সমূহের সদর পশ্চিম চক্রের স্কুল পরিদর্শক বিদ্যাপতি পতি ৩২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার নাম দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। দু’দিনের মধ্যে সরকারি নির্দেশ অমান্য করা এবং শৃঙ্খলাভঙ্গ কেন করা হল, তার জবাব দিতে বলা হয়েছে তাঁদের। আজ, শুক্রবারের মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের লিখিত জবাব দিতে হবে।
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, ১৫ ডিসেম্বর থেকে ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু হতে চলেছে। ভোটার তালিকায় নাম তোলা, সংশোধন বা বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে মূলত প্রাথমিক শিক্ষকদের উপরেই নির্ভর করে জেলা নির্বাচন দফতর। জেলার অন্য কোনও ব্লক বা চক্রে প্রাথমিক শিক্ষকেরা ভোটের কাজ করবেন না, এমন দাবি ওঠেনি। কিন্তু বর্ধমান ১ ব্লকের ১০১ জন শিক্ষক শুরু থেকেই ভোটের কাজ করতে নারাজ ছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শিক্ষা দফতরের নয়। সে জন্য তাঁরা ওই কাজ করবেন না। আদালতের নির্দেশে ছুটির দিনে ভোটার তালিকা তৈরি করতে হয়, সে জন্য অগ্রিম টাকারও দাবি করেন তাঁরা। দু’টি দাবিই মানতে পারেনি ব্লক প্রশাসন। পুরো বিষয়টি জেলা নির্বাচনী দফতরে জানানো হয়। জেলাশাসক বিজয় ভারতী পুরো বিষয়টি দেখার জন্যে ডিআই নারায়ণচন্দ্র পালকে নির্দেশ দেন।
ব্লক শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, ডিআইয়ের নির্দেশ পেয়ে ওই ১০১ জনকে নিয়ে বৈঠকে বসেন এসআই বিদ্যাপতি পতি। দফায় দফায় বৈঠকের পরেও ৬১ জন ভোটের ‘ডিউটি’র চিঠি নিতে অস্বীকার করেন। মঙ্গলবার ফের জরুরি ভিত্তিতে একটি বৈঠক হয়। সেখানে আরও ২৯ জন ভোটের ‘ডিউটি’র চিঠি নেন। কিন্তু গরহাজির ছিলেন ৩২ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা।
শো-কজ়ের বিজ্ঞপ্তিতে এস আই জানিয়েছেন, দফতরের নির্দেশ ‘মারাত্মভাবে অবজ্ঞা’ করেছেন ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সরকারি আইন মোতাবেক, বিডিও তথা সহকারী নির্বাচকের নির্দেশ তাঁরা মানতে বাধ্য। অথচ, ভোটের ডিউটির জন্য গত ২০ নভেম্বর বিডিও-র পাঠানো চিঠি নিতে তাঁরা অস্বীকার করেছেন। শিক্ষা দফতরের জেলা কর্তাদের নির্দেশে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্যে বৈঠক ডাকা হয়। ওই বৈঠকে হাজির না হয়ে সরকারি নির্দেশকে শুধু উপেক্ষা করা নয়, উচ্চপদস্থ কর্তাদের অবজ্ঞা করে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়েও পড়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বিজেপি প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন। ওই সংগঠনের জেলা সভাপতি রাধাকান্ত রায় বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষিকারা ভোটের ডিউটি করবেন না। নির্বাচন কমিশন অন্য ভাবে ভাবুক।’’ তৃণমূল প্রভাবিত প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের বর্ধমান ১ ব্লক সভাপতি কৌশিক মিশ্র বলেন, “সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করবে, আমরা তাঁদের পাশে থাকব, এটা হয় না।’’ ডিআই নারায়ণচন্দ্র পাল বলেন, “ভোটের ডিউটি করতেই হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy