E-Paper

নামের বানান, বয়সের ত্রুটি চার লক্ষ, দাবি

কমিশন সূত্রে জানা যায়, জেলায় ভোটার ও ভোটারের বাবার নামের বানানে ভুল কিংবা অন্য ধরনের ত্রুটি ধরা পড়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ৯০ হাজার।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:১৪
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। কাল, মঙ্গলবার খসড়া তালিকা প্রকাশের কথা। প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় নামের বানান ভুল, বাবার নাম না মেলা ও বয়স সংক্রান্ত ত্রুটি পাওয়া গিয়েছে অন্তত ৪ লক্ষ ২৫ হাজার। এখনই সে সব সংশোধনের উপায় না থাকায়, সংশ্লিষ্ট ভোটারদের শুনানিতে ডাকা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট বিধানসভার এইআরও-রা নেবেন। শুনানিতে ভুল সংশোধন না হলে, পরে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে ভোটারদের তথ্য সংশোধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করতে হবে।

কমিশন সূত্রে জানা যায়, জেলায় ভোটার ও ভোটারের বাবার নামের বানানে ভুল কিংবা অন্য ধরনের ত্রুটি ধরা পড়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ৯০ হাজার। বয়স-সংক্রান্ত ভুল পাওয়া গিয়েছে ৩৫ হাজার। জেলায় দু’লক্ষ ১০ হাজার ভোটারের নাম বাদ যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। লক্ষাধিক আবেদনকারীকে শুনানিতে ডাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিএলও-দের কাছে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ভোটার তালিকায় নামের ভুল যাচাই। একাধিক বিএলও-র দাবি, “২০০২ সালে অনেক ভোটারের মূল নামের সঙ্গে আরও একটি নাম ছিল। পরে আদালতে হলফনামা দিয়ে সেই নাম তুলে দিয়েছেন ভোটার। ২০২৫ সালে সংশোধিত নাম ভোটার তালিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এই সব ভোটারদের শুনানিতে ডাকা হবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।”

কমিশনের নির্দেশ ছিল, ‘প্রোজেনি’ বা বংশ তালিকা দিয়ে গণনাপত্র পূরণ করেছেন এমন ভোটারদের বাড়ি গিয়ে আরও এক বার যাচাই করতে হবে। আবার ৪৮ বছরের বেশি বয়স হলেও ২০০২-র তালিকায় নাম ছিল না, এমন ভোটারদের বাড়ি গিয়ে বিএলও-দের তথ্য যাচাইয়ের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া, পুরনো তালিকার নামের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে ভোটার কার্ডের নম্বর (এপিক) মেলেনি। ফলে, তাঁদের বা সে সব ভোটারের বাবার নামের বানান খসড়া তালিকায় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদের জন্য বিএলও-দের দেওয়া হয়েছিল কমিশনের বিশেষ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। সেই অ্যাপ্লিকেশন গণনাপত্র ‘স্ক্যান’ করতে সময় নিয়েছে। অন্য নানা কারণে অ্যাপ্লিকেশন নামের বাংলা অনুবাদ ঠিক মতো করতে পারেনি। ফলে নামের বানানে গোলমাল থেকে গিয়েছে।

এক বিএলও বলেন, “ইংরেজি স্ক্যান ঠিক মতো হচ্ছে। সেখান থেকে এক্সেল-ফর্ম্যাটে নিয়ে বাংলা অনুবাদ করতে গিয়ে বানানে বদল ঘটছে। নামেরও পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। কোথাও অরিতা হয়ে যাচ্ছে আরিত্রা আবার কোথাও কেদার হচ্ছে কাদের।” আর এক বিএলও দাবি করছেন, “বাংলায় লেখা অস্পষ্ট গণনাপত্র অ্যাপ্লিকেশন পড়তে পারছে না। সে কারণেও রাম থেকে বাম, বা বাম থেকে রাম হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।”

ভোটারের নামের সঙ্গে গোলমাল রয়েছে তাঁর বয়সেও। বিএলওদের দাবি, “ওই অ্যাপ্লিকেশনে বয়সও পাল্টে যাচ্ছে। বিশেষ করে ইংরেজিতে লেখা তিন, চার ও সাত-এর ক্ষেত্রে গোলমাল বেশি ধরা পড়েছে। ইংরেজিতে লেখা ৩ বাংলায় ৬ হয়ে যাচ্ছে। ইংরেজিতে ৪ হয়ে যাচ্ছে বাংলায় ৮, আর ৭ হয়ে যাচ্ছে ৯। এর ফলে, ৪৪ বছরের ব্যক্তি ৮৮ বছরের বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছেন। আবার ইংরেজিতে লেখা ৮০ বছরের বৃদ্ধর বয়স কমে বাংলায় ৪০ হয়েছে। ছেলে-বাবা-নাতি প্রায় সমবয়সি হয়ে গিয়েছে।” এ রকম বেশ কিছু ভুল বিএলও-রা ধরতে পেরেছেন। সংশোধনও করেছেন। বিএলওদের পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরা। তাঁদের কথায়, “এখানে বিএলওদের খুঁত বার করাটা অন্যায় হবে। অ্যাপ্লিকেশন গোলমাল করলে বিএলও-রা কী করবেন? হাজার খানেক ‘ক্লারিকাল মিসটেক’ পাওয়া গিয়েছে। সেগুলিও ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy