কাজের সূত্রে ভিন্রাজ্যে থাকেন স্ত্রী। যখন তাঁর মনে হত, ফোন করতেন। অন্য সময় দরকারেও স্বামী ফোন করে পেতেন না তাঁকে। এ নিয়ে মনোমালিন্য হয় দম্পতির। তার পর মাসখানেক হল ফোনে স্বামীকে ‘ব্লক’-ই করে দেন স্ত্রী। অভিযোগ, সেই দুঃখে বিষপান করেন যুবক। তাঁর মৃত্যুতে ভিন্রাজ্যবাসী বৌমার বিরুদ্ধে মানসিক হয়রানির অভিযোগ করল শ্বশুরবাড়ি। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান থানার বিজয়রামের সুকান্তপল্লি এলাকা।
মৃতের নাম কালো শেখ। গত মঙ্গলবার দুপুরে বাড়িতে কীটনাশক খান তিনি। বাড়ির লোকজন জানতে পেরে তাঁকে উদ্ধার করেন। নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরের দিন মৃত্যু হয় ৩৬ বছরের কালোর। পরিবারের দাবি, স্ত্রীর জন্যেই আত্মঘাতী হয়েছেন যুবক।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কালোর স্ত্রী হায়দরাবাদে কাজ করেন। সেখানে যাওয়ার পরে প্রথম প্রথম তিনি স্বামীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখতেন। কিন্তু মাস তিনেক হল স্ত্রীর ব্যবহার বদলে গিয়েছে বলে বাড়িতে দুঃখপ্রকাশ করেন কালো। তিনি নাকি এ-ও জানান, স্ত্রীর যখন মনে হয়, তখন একবার ফোন করে। মাসখানেক হল সেটাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, স্বামীর মোবাইল নম্বর ‘ব্লক’ করে দিয়েছেন তিনি। তা-ও দিনের পর দিন স্ত্রীকে ফোমন করে গিয়েছেন। কিন্তু বৃথাই চেষ্টা। তার পরেই বিষপান করেন যুবক।
মৃতের ভাইঝি বানু খাতুনের কথায়, ‘‘কাকা কাকিমাকে প্রচণ্ড ভালবাসত। কাকিমা মাস আটেক আগে হায়দরাবাদে কাজ করতে যায়। সেখানে যাওয়ার পর থেকে কাকা ফোন করত। কিন্তু কাকিমা সে ভাবে গুরুত্ব দিত না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মাসখানেক আগে কাকার মোবাইল নম্বর কাকিমা ব্লক করে দেয়। তার পর থেকেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল কাকা। সেই অবসাদে কীটনাশক খেয়ে নিজেকে শেষ করে দিয়েছে।’’ বলেই হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন তরুণী।
আরও পড়ুন:
পুলিশ জানিয়েছে, যুবকের মৃত্যু নিয়ে পরিবারের তরফে কোনও লিখিত অভিযোগ পায়নি তারা। তবে হাসপাতালে মৃত কালো কীটনাশক খেয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে। পরিবার লিখিত আকারে অভিযোগ জানালে, সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।