Advertisement
১৯ মে ২০২৪

চাষির মৃত্যু, ক্ষতিপূরণ নিয়ে নালিশ

সপ্তাহখানেক আগে ভাতারের কালিপাহাড়ি গ্রামে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে কার্তিক মণ্ডল নামে এক চাষি আত্মঘাতী হন। সেখানেও প্রশাসন ও তৃণমূল নেতারা দাবি করেন, এই সব ঘটনার সঙ্গে চাষের কোনও সম্পর্ক নেই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৭ ০০:৪৫
Share: Save:

ফের এক ভাগচাষির অস্বাভাবিক মৃত্যু হল ভাতারে। পরিজনদের দাবি, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে প্রথমে বোরো চাষে ক্ষতি, পরে খরিফ মরসুমেও ধানে ক্ষতি হয়। সবমিলিয়ে দেড় লক্ষ টাকার বেশি ঋণও হয়েছিল। সেই হতাশা থেকেই বৃহস্পতিবার রাতে কীটনাশক পান করেন ভাতারের বড়বেলুন ২ পঞ্চায়েতের মুরারিপুর গ্রামের নির্মল রায় (৫৩)। যদিও পুলিশের দাবি, বাবা-ছেলের মধ্যে অশান্তির জেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই প্রৌঢ়।

সপ্তাহখানেক আগে ভাতারের কালিপাহাড়ি গ্রামে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে কার্তিক মণ্ডল নামে এক চাষি আত্মঘাতী হন। সেখানেও প্রশাসন ও তৃণমূল নেতারা দাবি করেন, এই সব ঘটনার সঙ্গে চাষের কোনও সম্পর্ক নেই।

বোরোয় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে এ জেলার জন্য ১৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। ক্ষতিগ্রস্থ ৬৫ হাজার হেক্টর জমির জন্য জেলায় আড়াই লক্ষের উপর ক্ষতিপূরণের ফর্ম জমা পড়েছে বলেও জেলা কৃষি দফতরের দাবি। তার সঙ্গে রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগ। মঙ্গলকোট, আউশগ্রাম ১ ও ভাতার থেকে চাষি ও পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা বুধবারই জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও কৃষি কর্মাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে পঞ্চায়েত প্রকৃত চাষিদেরকে ফর্ম দিচ্ছে না ও চাষিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফর্ম দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।

মৃতের স্ত্রী বুলাদেবীর দাবি, “ক্ষতিপূরণ পেলে ঋণ খানিকটা শোধ করা যেত বলে কয়েকদিন ধরে আক্ষেপ করছিলেন উনি। তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।” মৃতের দাদা গঙ্গাধরবাবু, ভাগ্নে ইন্দ্রজিৎ গুপ্তদের দাবি, বোরো মরসুমে ১৫ বিঘা ও খরিফে ৮ বিঘা আমন চাষ করেছিলেন নির্মলবাবু। চাষ করতে গিয়ে দেড় লক্ষ টাকা ঋণ করতে হয়। সেই টাকা শোধের চাপেই অবসাদে ভুগছিলেন। গ্রামের বেশ কয়েকজন চাষিরও অভিযোগ, ক্ষতিপূরণের ফর্ম নিয়ে যা দুর্নীতি চলছে, তাতে প্রকৃত চাষিরা ক্ষতিপূরণ পাবে কি না সন্দেহ রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে গোয়ালবাড়িতে কীটনাশক পান করেন নির্মলবাবু। প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পরে বর্ধমান মেডিক্যালে নিয়ে আসা হলে রাতে তিনি মারা যান। পুলিশের দাবি, বাবা-ছেলের অশান্তির জেরে অপমানে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই প্রৌঢ়। তৃণমূল নেতা শান্তনু কোনারেরও দাবি, পারিবারিক কারণেই ওই চাষি মারা গিয়েছেন।

জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ পরেশ পাল বলেন, “আমাদের কাছে অনেক অভিযোগ এসেছে। প্রধানদের বললেও কথা শুনছেন না। প্রকৃত চাষিদের হাতে ফর্ম তুলে দেওয়ার জন্য জেলাশাসককে বলা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE