Advertisement
E-Paper

বৃষ্টির অভাবে আটকে বীজতলা

সকাল থেকেই তীব্র গরম। বেলা বাড়লে দাবদাহের তেজ বাড়ছে আরও। তার সঙ্গে জুটেছে বৃষ্টির অভাব। এই পরিস্থিতিতে আমন ধানের চাষ তো পিছিয়ে যাচ্ছেই, শুষ্ক আহাওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে সব্জিতেও। বিভিন্ন ফসলে রোগপোকার সংক্রমণ মিলছে বলেও দাবি কৃষি বিশেষজ্ঞদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৫ ০২:০৬
পোকার আক্রমণে ফুটিফাটা পাট গাছের পাতা।—নিজস্ব চিত্র।

পোকার আক্রমণে ফুটিফাটা পাট গাছের পাতা।—নিজস্ব চিত্র।

সকাল থেকেই তীব্র গরম। বেলা বাড়লে দাবদাহের তেজ বাড়ছে আরও। তার সঙ্গে জুটেছে বৃষ্টির অভাব। এই পরিস্থিতিতে আমন ধানের চাষ তো পিছিয়ে যাচ্ছেই, শুষ্ক আহাওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে সব্জিতেও। বিভিন্ন ফসলে রোগপোকার সংক্রমণ মিলছে বলেও দাবি কৃষি বিশেষজ্ঞদের।

কালনা মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণত আমন ধানের বীজতলা তৈরির কাজ শেষ হয়ে যায় জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে। বীজতলা তৈরিতে চাষিদের প্রয়োজন হয় ভেজা নরম মাটি। কিন্তু এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় কালনা ১, ২, পূর্বস্থলী ১,২ এবং মন্তেশ্বর ব্লকের কোথাও বীজতলা তৈরির কাজ শুরুই হয়নি। চাষিরা জানিয়েছেন, টানা শুখা আবহাওয়া চলতে থাকায় নদী, বিলের মতো বড় জলাশয়গুলিতে জল কমে এসেছে। ছোট জলাশয়গুলি বেশির ভাগ শুকিয়ে গিয়েছে। দ্রুত গতিতে নামছে মাটির তলার জলও। চাষিদের দাবি, প্রতিবার আমনের বীজতলা তৈরির সময়ে জলের যোগান দেয় প্রাক মৌসুমি বৃষ্টি। এ বারও সেই আশাতেই রয়েছেন তাঁরা। কিন্তু বীজতলা তৈরিতে দেরি হওয়ায় রবি মরসুমের চাষের কাজ পিছিয়ে যাবে বলেও তাঁদের আশঙ্কা। মন্তেশ্বরের এক ধান চাষি জগন্নাথ ঘোষ বলেন, ‘‘এখন জমির মাটি বেশ শক্ত। তাকে চাষ করার উপযোগী করতে হলে ভাল বৃষ্টি চাই। কিন্তু শেষ পনেরো দিনে ভারী তো দূরে থাক ছিটেফোঁটা বৃষ্টিও হয় নি।’’ চাষিদের আশঙ্কা যে অমূলক নয়, তা স্পষ্ট কৃষি দফতরের কর্তাদের কথাতেও। কালনা মহকুমা কৃষি দফতরের এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘আমন চাষ পিছিয়ে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই শীতকালীন চাষ পিছিয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে শীতকালীন চাষের ফলনও কমবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দরকার ভাল বৃষ্টি।’’

আমনে দেরির আশঙ্কা ছাড়াও এখন জমিতে পাট, তিল তো বটেই, পটল, ঝিঙে, লাফা, বরবটি, ঢ্যাঁড়শ, করলার মতো বেশ কিছু সব্জি রয়েছে। কালনা ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চাষ হয় শসাও। এমনকী রাজ্যের বহু বাজারে শসা রফতানিও হয়। চাষিদের দাবি, বৃষ্টির অভাবে পাট গাছের বাড় থমকে গিয়েছে। বহু জমিতেই গরমে ঝিমিয়ে পড়ে পাট গাছ সরু হয়ে গিয়েছে। পাতাতেও ফুটিফাটা দেখা যাচ্ছে। ক্ষতিকারক পোকা সেমিলুপারের আক্রমণও দেখা দিয়েছে, যারা পাতা ও কাণ্ডের রস শুষে পাট গাছকে আরও নিস্তেজ করে দিচ্ছে।

মহকুমা কৃষি আধিকারিক আশিসকুমার বারুই বলেন, ‘‘বৃষ্টির অভাবেই এমনটা হচ্ছে। শুষ্ক গরম চলতে থাকলে এ বার পাট চাষের বড় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।’’ তাঁর দাবি, মাসখানেক পরেই জমি থেকে পাট কাটা শুরু হবে। পাট পচাতেও প্রচুর জলের প্রয়োজন হবে। তখন সমস্যা আরও বাড়বে।

দুপুরের তীব্র রোদে ঝলসে যাচ্ছে সব্জীর খেতও। চাষিদের অভিযোগ, পূর্বস্থলী ১ এবং ২ ব্লকের বহু এলাকাতেই শুষ্ক আবহাওয়ায় হলুদ হয়ে যাচ্ছে সব্জি। তাই ফসল বাঁচাতে এক পশলা বৃষ্টির প্রার্থনা করছেন চাষিরা।

burdwan farmer rain drought jute
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy